বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহা. রেজাউল করিম বলেছেন, ইসলামী আন্দোলনের পথচলা কখনোই কন্টকমুক্ত ছিল না বরং সীমাহীন বাধা-প্রতিবন্ধকতা অতিক্রম করেই ইসলামী আন্দোলন লক্ষ্য পানে এগিয়ে গেছে। তাই ইসলামী আন্দোলনের ওপর জুলুম-নির্যাতনে ভীত হওয়ার কোন সুযোগ নেই। তিনি দ্বীন বিজয়ের লক্ষ্যে কুরআন, হাদিস ও ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়নের মাধ্যমে জ্ঞানের পরিধি বৃদ্ধি করে আত্মগঠনের মাধ্যমে বাতিলের মোকাবেলায় প্রস্ততি গ্রহণের জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের রমনা পশ্চিম থানা আয়োজিত কর্মী শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমীর মু. আতাউর রহমান সরকারের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি ইউসুফ আলী মোল্লার পরিচালনায় বিষয়ভিত্তিক বই আলোচনা ও দারস পেশ করেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য মো. হেমায়েত হোসাইন। উপস্থিত ছিলেন মহানগরী মজলিশে শুরা সদস্য ড. মাওলানা হাবিবুর রহমান ও বায়তুল মাল সম্পাদক আখতার হোসেন প্রমূখ। শিক্ষাশিবিরে সাধারণ জ্ঞান ও বক্তৃতা প্রতিযোগিতা এবং গ্রুপ অধ্যয়ন কার্যক্রম অন্তর্ভূক্ত ছিল।
ড. এম আর করিম বলেন, মূলত ইসলামী আন্দোলনের ওপর জুলুম-নির্যাতন ইতিহাসের ধারাবাহিকতা। বাতিল শক্তি সকল নবী-রাসুলগণের ওপরই নির্মম ও নিষ্ঠুর জুলুম-নির্যাতন চালিয়েছে। রাসুল (সা.) কে কাফিররা ছেড়ে কথা বলে নি। তিনি যখন আত্মভোলা মানুষের কাছে দ্বীনে হকের দাওয়াত দিতে শুরু করলেন তখনই তার ওপর নেমে এলো অবর্ণনীয় জুলুম-নির্যাতন। আর সে কারণেই তায়েফে তাকে রক্তাক্ত হতে হয়েছে। এখানেই শেষ নয় বরং তাকে তার পরিবার-পরিজন ও আত্মীয়-স্বজন সহ শিয়াবে আবি তালিবে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। পরিস্থিতি এমন ভয়াবহ পর্যায়ে পৌঁছেছিল যে, তারা ক্ষুন্নিবৃত্তি নিবারণের জন্য বাবলা গাছের পাতা ও ছাল খেয়ে জীবন ধারণ করেছিলেন। এমনকি কাফিরদের অত্যাচারে অতিষ্ট হয়েই তাকে মাতৃভূমি ত্যাগ করে মদীনায় হিজরত করতে হয়েছিল। তাই যেকোন প্রতিকুল পরিস্থিতি ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের পিছপা হওয়ার সুযোগ নেই বরং জান ও মালের কোরবানীর মাধ্যমে ইসলামী আন্দোলনকে ইপ্সিত লক্ষ্যে এগিয়ে নিতে হবে।
তিনি বলেন, সরকার দেশে সুশাসন দেয়ার পরিবর্তে সংঘাত ও প্রতিহিংসার পথ বেছে নিয়েছে। তারা পরিকল্পিতভাবেই দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিকমূল্যবোধ ধ্বংস করেছে। সরকার বিরাজনীতিকরণের অংশ হিসেবে একের পর এক জাতীয় নেতাদের ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে হত্যা করে দেশকে বাধ্যভূমিতে পরিণত করেছে। তারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই বর্ষীয়ান আমীর জামায়াত মকবুল আহমাদ সহ শীর্ষনেতাদের সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। সরকার জাতীয় নেতাদের কারাগারে অন্তরীণ রেখে নির্বাচনী বৈতরণী পর হতে চায়। কিন্তু তাদের সে স্বপ্নবিলাস কখনোই সফল হবে না। তিনি আমীরে জামায়াত মকবুল আহমাদ সহ সকল রাজবন্দীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন। অন্যথায় সরকারকে জনগণের কাছে জবাবদিহি করতে হবে।