ড. আর্থিক খাতের সংস্কার, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব মোকাবেলা, মানবসম্পদ উন্নয়ন ও বেসরকারি খাতের সম্প্রসারণ বা বিনিয়োগ বাড়ানো। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পর্যায়ক্রমে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদে কার্যকর কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন জরুরি।
আর্থিক খাতে সংস্কারের ক্ষেত্রে ব্যাংকিং খাতেরও সংস্কার জরুরি। এ খাতে সর্বত্র সুশাসনের সমস্যা, অপারেশনাল ও অভ্যন্তরীণ ঝুঁঁকিব্যবস্থাপনায় দুর্বলতা ও দক্ষতার অভাব এবং উচ্চ খেলাপি ঋণ রয়েছে। উচ্চ তো দূরের কথা, মধ্যম আয়ের অর্থনীতির দেশে উন্নীত হতে গেলে আর্থিক খাতে শক্তিশালী ও টেকসই সংস্কার প্রয়োজন। আর্থিক খাতের সঙ্কট কাটাতে বেসরকারি খাতের ব্যাপক ভূমিকা বিবেচনায় নিতে হবে। কেননা, এরই মধ্যে বেসরকারি খাত জিডিপি প্রবৃদ্ধির চালিকাশক্তি হিসেবে যে নেতৃত্ব দিয়েছে, তার ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে একটি ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত ভোক্তা গোষ্ঠী এবং সহায়ক সরকারি নীতি বেসরকারি খাতের বিকাশের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে পারে। বেসরকারি খাতই উদ্ভাবন এবং উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে নেতৃত্ব দিতে পারে। সুগঠিত উদ্যোগের সাথে ক্রমবর্ধমান ডিজিটাল ল্যান্ডস্কেপ ব্যবহার করতে পারে বেসরকারি খাত। পাশাপাশি বাংলাদেশের বেসরকারি খাতের জন্য নতুন নতুন খাতে সম্প্রসারণ এবং বিদ্যমান খাতে উন্নতি করার উল্লেখযোগ্য সুযোগ রয়েছে। সেই সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। বেসরকারি খাতকে অবকাঠামোর জন্য বিশাল চাহিদা মেটাতে অবকাঠামো অর্থায়নে সরকারের পাশাপাশি তাদেরও ভূমিকা রাখতে হবে। সেই সাথে জলবায়ু অর্থায়নের ক্ষেত্রেও বৈশি^ক সহায়তা তহবিল এবং বেসরকারি খাতকে সমন্বিত ভূমিকায় তৎপরতা বাড়াতে হবে। সব ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সমাধান প্রবর্তন করতে হবে।
বাংলাদেশে উচ্চ পরিবহন ও লজিস্টিক খরচ এবং কম দক্ষতা রফতানির ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। চার লেন সড়কের কাজ শুরু হলেও সেগুলোয় ধীরগতি থাকছে। সমুদ্রবন্দর, স্থলবন্দরসহ অন্যান্য অবকাঠামোগত বাধা দূর করতে উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে একটি জাতীয় লজিস্টিক নীতিমালা ও মাস্টার প্লানের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধিতে আর সময় ক্ষেপণ নয়, বাস্তবায়ন করে দেখাতে হবে।
বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ এবং দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতো জীববৈচিত্র্যসমৃদ্ধ বাংলাদেশ পরিবেশগত অবক্ষয়ের বিরুদ্ধে লড়াই করছে, যা দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং পরিবেশগত টেকসই অবস্থা নিশ্চিত করতে মূল ধারার উন্নয়ন নীতির সাথে পরিবেশ সম্পর্কিত বিষয়গুলোকে একীভূত করতে হবে।
সামষ্টিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনায় রাজস্ব আহরণে বাঞ্ছিত উন্নতির বিকল্প নেই। বিগত কয়েক দশক ধরেই বাংলাদেশের অর্থনীতি যে অবস্থায় তা থেকে বোঝা যায় রাজস্ব আয় অর্জনে দেশ একটি পুশ ফ্যাক্টরের ভেতরে ছিল এবং আছে। অর্থাৎ রাজস্ব আহরণকে একটি কাক্সিক্ষত পরিমাণে উন্নীত করার জোর চেষ্টা চালানোর কথা কাগজ-কলমে ও বয়ানে থাকলেও তার প্রকৃত অবস্থা হতাশাজনক। বিপুলসংখ্যক করদাতা এখনো করজালের আওতায় আসেননি, আনা যায়নি। অন্যদিকে কর ও শুল্কায়নযোগ্য যে খাতগুলো বাদ পড়ে গেছে বা বাইরে আছে সেগুলোকে শুল্ক ও করের আওতায় আনার চেষ্টাও চলছে। তবে উভয় ক্ষেত্রেই পরিশীলিত কর্মপরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হয়ে একটি করদাতাবান্ধব ও উৎসাহ প্রণোদনামূলক পদ্ধতি গড়ে তোলা বা প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তা অনেক আগে থেকেই অনুভূত হলেও বাস্তবায়ন হচ্ছে বড্ড ধীরগতিতে। অর্থাৎ কর যারা দেয় না তাদের উৎসাহিত করার পাশাপাশি কর প্রদানে যারা ফাঁকি দিচ্ছে বা এড়িয়ে যাচ্ছে তাদের প্রতি কঠোর ও কঠিন মনোভাব পোষণ এবং সর্বোপরি কর প্রদান ও আহরণের সংস্কৃতিকে জাতীয় দায়িত্ব বোধের চেতনায় উত্তরণ ঘটানোর ব্যাপার দায়িত্বশীলতায় ঘাটতি রয়েই যাচ্ছে। কর প্রদান ও আহরণের ক্ষেত্রে যেসব প্রতিবন্ধকতা বা জটিলতাসহ স্পর্শকাতরতা রয়েছে তা দূর করে কার্যকর অবস্থায় নিয়ে আসতে সেই নব্বইয়ের দশক থেকেই চেষ্টা চলছে। নব্বই দশক পর্যন্ত আমদানি বাণিজ্যনির্ভর অর্থনীতির সময়ে নিজস্ব উৎপাদনব্যবস্থা তেমন ছিল না বলে তখন আমদানি শুল্ক ব্যতিরেকে কর ও ভ্যাট রাজস্ব আহরণের আবশ্যকতা দেখা দেয়নি। নব্বইয়ের দশকে বাংলাদেশের অর্থনীতি যখন ট্রেডিং নির্ভরতা থেকে ম্যানুফ্যাকচারিংয়ের দিকে অগ্রসরমান হয় তখন থেকেই শুল্কের চেয়ে করের কলেবর বৃদ্ধি পেতে থাকে। রেমিট্যান্সের পাশাপাশি পোশাক শিল্পের হাত ধরে আমাদের রফতানি আয় ও উন্নয়ন বেড়ে গেলে এবং আমদানি ব্যয় হ্রাস পেতে থাকলে অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহ সংক্রান্ত বিষয়াদি নতুন করে জাতীয় ভাব-ভাবনার চৌহদ্দিতে চলে আসে। অন্য দিকে নব্বই দশকের শুরুতেই সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনে বিশ্ব অর্থনীতিতে নতুন মেরুকরণ শুরু হয়। তখন উন্নয়নশীল দেশগুলোর আগের মতো বিদেশী ঋণ অনুদানপ্রাপ্তির সুযোগ এবং সম্ভাবনা হ্রাস পায়। ফলে অনেকটা বাধ্য হয়েই বাংলাদেশের মতো অনুন্নত অথচ উন্নয়ন আগ্রহী দেশে নিজস্ব রাজস্ব আহরণের গুরুত্ব বেড়ে যায়।
এদতসত্ত্বেও, রাজস্ব আহরণের প্রয়াস প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেও কর জিডিপির রেশিও কাক্সিক্ষত পর্যায়ে পৌঁছতে মনে হচ্ছে, এখনো অনেক পথ বাকি। বাংলাদেশের ট্যাক্স জিডিপি রেশিও বরাবরই নিম্ন পর্যায়ের আশেপাশেই ঘুরছে, যদিও সবসময় কর রাজস্ব আহরণের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ছিল বা আছে অনেক বেশি। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রা বেশি ধরা হলেও তা পূরণে সফলতার গতি গজেন্দ্রগামী। এ ক্ষেত্রে পদ্ধতিগত, অবকাঠামোগত এবং বিবিধ সব ধরনের ত্রুটি দূর করে উপযুক্ত করদাতাদের মধ্যে থেকে যত বেশি জনকে করের আওতায় আনা যায় সে চেষ্টাই যেন শুধু চলছে। পাশাপাশি যেসব নিত্যনতুন আর্থিক খাত তৈরি হচ্ছে সেগুলোকেও চটজলদি করের আওতায় আনার প্রয়াস চলছে। কিন্তু কর্মক্ষমতায় ও কর্মদক্ষতায় সে প্রয়াস কাক্সিক্ষত ফলাফল আনতে যথেষ্ট সময় নিচ্ছে।
প্রযোজ্য সবার করদানে সচেতন অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য যখন এবং যেখানে উদ্বুুদ্ধ ও প্রণোদনামূলক পন্থা পদ্ধতি প্রয়োগের কথা, সেখানে কর আহরণ পরিবেশ পরিস্থিতিকে স্বয়ম্ভর ও অভিজ্ঞ মনে করে কঠিন কঠিন পদ্ধতি প্রয়োগের পরাকাষ্ঠা যদি দেখানো হয় বা অহেতুক চাপ সৃষ্টি করা হয় তাহলে করদাতারা স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করবেন না। দেখতে হবে, আইন-কানুন সংস্কারের পাশাপাশি রীতি পদ্ধতিকে করদাতাবান্ধবকরণের নামে পরিবেশ পরিস্থিতিকে আরো কঠিন ও কর্কশ করা হচ্ছে কি না। কর আহরণ পদ্ধতি প্রক্রিয়া এমনতর জটিল, কম্পার্টমেন্টালাইজড ও কঠিন হলে যারা এখনো করের আওতায় আসেননি তারা করদাতা হতে ভয় পেতে পারেন। পাশাপাশি যারা কর দিচ্ছেন তারাও সঠিকভাবে কর দিতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলতে পারেন। যদিও আমাদের অর্থনীতি কর সংস্কৃতিতে ও অবকাঠামোয় ততটা উন্নত নয়, তথাপি যদি উন্নত বিশ্বের দৃষ্টিভঙ্গি, রীতিপদ্ধতি ও নিয়ম-কানুন সরাসরি কাট-পেস্ট করে অনুসরণে অনুগামী হই তাহলে সাফল্য আসতে ও টেকসই হতে বিলম্ব হবে। যে স্টেজে যে অ্যাটিচুড বা মনোভঙ্গি (মাইন্ডসেট) বা উপলব্ধি থাকার কথা সেটিতে না থেকে আমরা যদি ভাবি বা ধরে নিই যে, উন্নত অর্থনীতির মতো আমাদের-সব করদাতা শিক্ষিত, কর দানে দায়িত্বসচেতন এবং তারা আইন-কানুন সব বোঝেন জানেন, তাহলে কর-দৃষ্টিভঙ্গি (মাইন্ডসেট) ভিন্ন আঙ্গিকে নির্মিত হতে বাধ্য। এমনতরো অবস্থায় রাজস্ব আহরণের পরিবেশ প্রোগ্রেসিভ না হয়ে রিগ্রেসিভ হতে পারে। নতুন করদাতা আসতে যেহেতু চাচ্ছে না, বা তাদেরকে আনা যাচ্ছে না, সেহেতু তাদের স্থলে বিদ্যমান করদাতাদের উপর চাপ বেড়ে গেলে তারাও পথ খুঁজতে পারেন কিভাবে কর দেয়া থেকে ফাঁকি দিয়ে পরিত্রাণ মিলতে পারে।
অর্থনীতির শক্ত ভিত গড়ে তুলতে পুঁজিবাজারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বাংলাদেশে পুঁজিবাজার প্রায়ই অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে। ফলে বিনিয়োগকারীরা আস্থা হারান এবং পুঁজিবাজার কাক্সিক্ষত ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়। কয়েক বছর ধরে বৈশ্বিক অর্থনৈতিক মন্দার প্রভাব বাংলাদেশের পুঁজিবাজারেও পড়েছে। বাজারে বিনিয়োগকারীদের অংশগ্রহণ ও লেনদেনের পরিমাণ উল্লেখযোগ্য হারে কমেছে। ফ্লোর প্রাইসের কারণে বহুজাতিকসহ ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানির শেয়ার দর দীর্ঘ দিন এক ধরনের স্থির অবস্থায় ছিল। পুঁজিবাজার থেকে এ সময়ে যৎসামান্য রিটার্ন এসেছে। ডলার পরিস্থিতির উন্নতির পাশাপাশি ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার এবং পুঁজিবাজারে সংস্কার ও সুশাসনের দিকে নজর দিলে পুঁজিবাজার ঘুরে দাঁড়াতে সহায়ক হবে।
পুঁজিবাজারে গতি ফেরাতে হলে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এ জন্য দেশী-বিদেশী ভালো কোম্পানি তালিকাভুক্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এ ছাড়া পুঁজিবাজার কারসাজিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। একই সাথে ব্যাংক খাতের সমস্যার সমাধানও করতে হবে। এ মুহূর্তে পুঁজিবাজারের সব থেকে বড় সমস্যা বিনিয়োগকারীদের আস্থার সঙ্কট। বাজারের ওপর বিনিয়োগকারীদের আস্থা প্রায় তলানীতে। ফলে বিনিয়োগকারীরা পুঁজিবাজারবিমুখ হয়ে গেছেন। যে কারণে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া হলেও বাজারে তার সুফল পাওয়া যাচ্ছে না।
পুঁজিবাজারের বড় একটি সমস্যা তারল্য সঙ্কট। এ ছাড়া বর্তমানে শেয়ারবাজারে একটি বড় বাধা ফ্লোর প্রাইস। যে কারণে নতুন বিনিয়োগ আসছে না। কারণ তালিকাভুক্ত কোম্পানির বেশির ভাগেরই শেয়ারদর ফ্লোর প্রাইসে আটকে ছিল বা আছে। এখন আশা এই যে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বাজারে সুশাসন নিশ্চিত করার দিকে মনোনিবেশ করলে, যেন মন্দ কোম্পানির শেয়ার আধিপত্য বিস্তার করতে না পারে। প্রয়োজনীয় সংস্কারের পাশাপাশি পুঁজিবাজারের সুশাসন পরিস্থিতির উন্নতি হলে সেটি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে সহায়ক হবে এবং বাজারও ঘুরে দাঁড়াবে।
বেশির ভাগ বিনিয়োগকারীর ধারণা, নিয়ন্ত্রক সংস্থার তদারকির ঘাটতির ফলেই বাজারে নানাভাবে কারসাজির ঘটনা ঘটে। বিশেষ করে একটি গোষ্ঠী তাদের স্বার্থ হাসিলের জন্য বাজারকে নানাভাবে ব্যবহার করছে, এমন অভিযোগ ২০১০ সালের বিপর্যয়ের পর থেকে বারবার উত্থাপন করা হয়েছে। এ জন্য সাধারণ বিনিয়োগকারীদের আস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য সুচিন্তিত পদক্ষেপের পাশাপাশি ভালো কোম্পানিগুলোকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত করার আহ্বান ও উদ্যোগ মাঠে মারা যাওয়ার কারণ খুঁজে থেমে যাওয়া নয়, সর্বজনীন স্বার্থে তা প্রয়োগ করতে হবে। দেশে নিবন্ধিত কোম্পানির সংখ্যা অনেক। কিন্তু পুঁজিবাজারে কোম্পানিগুলোর উপস্থিতি একেবারে কম। পোশাক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর বাজারে আসা উচিত। এ ক্ষেত্রে কমিশন আইনগত সংস্কারসহ ২০১০ সালের ধসের পর পুঁজিবাজারের প্রতি মানুষের নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়, যা এখনো অনেকাংশে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হয়নি। এ জন্য বিনিয়োগকারীরা ফিরলে পুঁজিবাজারে গতি ফিরবে বলে আশা করা হচ্ছে।
লেখক : সাবেক সচিব, এনবিআরের প্রাক্তন চেয়ারম্যান