অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের দুই মাস অতিক্রম করেছে। মানুষের প্রত্যাশা ছিল আওয়ামী লীগ তাবেদার ব্যবসায়ী ‘সিন্ডিকেট’ ভেঙ্গে দেবেন এবং পণ্যমূল্য কিছুটা হলেও সহনীয় পর্যায়ে আসবে। কিন্তু ‘আওয়ামী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট’ ভেঙ্গে দিয়ে পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। পণ্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের যে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ অপরিহার্য ছিল, সে পথে হাটেনি সরকারের দায়িত্বশীল উপদেষ্টারা। বরং ‘আনজুমানে মফিজুল ইসলাম’ এর মতো বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ধীরালয়ে চলছে। ফলে নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির পাশাপাশি রাজধানীর বাজারে ১০০ টাকা কেজির নিচে কোনো সবজিই পাওয়া যাচ্ছে না। পরিস্থিতি এমন হয়ে গেছে যে শেখ হাসিনা দিল্লিতে বসে একের পর এক ষড়যন্ত্র করে ব্যর্থ হলেও অনুগত ব্যবসায়ীদের মাধ্যমে অনুগত সিন্ডিকেট অটুট রাখতে সফলতা দেখাচ্ছেন। ভুক্তোভোগীদের অভিযোগ কর্পোরেট হাউজগুলো আওয়ামী সিন্ডিকেট হলেও তারা দেশের ব্যবসায়ী। তাদেরকে সচিবালয়ে ডেকে বৈঠক করা উচিত ছিল। বাস্তবতা বুঝে ব্যবসার স্বার্থেই তারা হাসিনা ইজম থেকে নিজেদের মুক্ত করে সিন্ডিকেট ভেঙ্গে দিতে পারতো। কিন্তু অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টাদের মধ্যে তেমন কোনো আগ্রহ দেখা যায়নি।
প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ২৫ আগস্ট জাতির উদ্দেশে দেয়া প্রথম ভাষণে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনার বার্তা দিয়ে বলেছিলেন, ‘জনগণের জীবনযাপন সহজ করতে দ্রব্যমূল্য ও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আনার উদ্যোগ সরকার নিয়েছে।’ কিন্তু দুই মাসে দ্রব্যমূল্য কমেনি বরং আরো বেড়েছে। অনুসন্ধান করে এবং খোঁজখবর নিয়ে জানা গেছে, শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখতে আওয়ামী লীগের তাবেদার ব্যবসায়ী ও বহুমুখী ব্যবসার কর্পোরেট হাউজগুলো পণ্যের বাজারে যে সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছে; সেটা এখনো কার্যকর রয়ে গেছে। জাতীয় সংসদে তৎকালীন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ‘সিন্ডিকেট ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করলে সরকারকে বিপদে পড়তে হবে’ নিজের অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছিলেন; সেই ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট এখনো বহাল। সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার নিজেই চালের বাজারে সিন্ডিকেট করে মূল্য বাড়িয়েছিলেন। বর্তমানে তিনি গ্রেফতার হয়ে পুলিশী হেফাজতে রয়েছেন।
২০২৩ সালের ১৫ জুন বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এফবিসিসিআই আয়োজিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে ব্যবসায়ীদের করণীয়’ শীর্ষক সম্মেলনে দেশের শীর্ষ স্থানীয় ব্যবসায়ী সংগঠনের নেতা ও শিল্পোদ্যোক্তারা শেখ হাসিনাকে ফের ক্ষমতায় আনার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। শেখ হাসিনা সেই সম্মেলনে ঘোষণা দেন, ‘আওয়ামী লীগ ব্যবসা বান্ধব সরকার। ব্যবসায়ীদের জন্য যা যা করা দরকার সবকিছু করা হবে’। ব্যবসায়ীদের কেউ কেউ শেখ হাসিনার সঙ্গে আজীবন থাকার ঘোষণা দেন এবং মৃত্যুর পরও তার সঙ্গে থাকার অঙ্গীকার করেন’। ওই সময় থেকে নিত্যপণ্যের দাম লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে। সরকারও বিদেশি ঋণের কিস্তির বোঝা জনগণের উপর চাপাতে বিদ্যুৎ, গ্যাস, জ্বালানি তেল, পানি ও সারের দাম দফায় দফায় বাড়িয়েছে। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে অংশ নেয়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করেন, সরকার পতনের আন্দোলনে নিম্ন আয়ের মানুষের ব্যাপক অংশগ্রহণ ও শ্রমজীবী মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনায় বোঝা যায়, জীবনযাত্রার ব্যয়বৃদ্ধি (পণ্যমূল্য) তাঁদের অতিষ্ঠ করে তুলেছিল। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়েছে। গণহত্যাকারী আওয়ামী রেজিমের ‘রাজনৈতিক মৃত্যু’ ঘটে গেছে। তারপরও আওয়ামী ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট অব্যাহত রয়েছে।
গতকাল কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে বিশ্ব ডিম দিবসের অনুষ্ঠানে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, ‘সিন্ডিকেটের কারণে দেশের বাজারে কমছে না ডিমের দাম। বিভিন্ন সময় সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যে অস্থির হয়ে ওঠে বাজার। পাশাপাশি দেশে ব্যবসায়ী ও ভোক্তা দু’দিকেই আতঙ্ক সৃষ্টি করছে, দাম বাড়ার জন্য মিডিয়াও কিছুটা ভূমিকা রাখছে। মিডিয়ার নিউজ প্রচারণার বিষয়ে সতর্ক হওয়া উচিত।’ তবে এ সময় মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টাও ডিম বাড়ার পেছনে সিন্ডিকেটই মূল কারণ বলে উল্লেখ করেন। প্রশ্ন হচ্ছে দুই মাসেও অন্তর্বর্তী সরকার সিন্ডিকেট ভাংতে পারছে না কেন? সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, নিত্যপণ্যের দাম কমাতে যতটা জোর দেয়া দরকার ছিল, সরকার ততটা গুরুত্ব শুরু থেকে দেয়নি। ইতোমধ্যে দাম অনেকটা বেড়ে গেছে। ফলে বাজার নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে সরকার।
সরকার দায়িত্ব নেয়ার দুই মাস পর এখন উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে। কিছু পণ্যের শুল্ক-কর কমানো হয়েছে। কিছু পণ্যের শুল্ক-কর কমানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। বাজারে অভিযান বাড়ানো হয়েছে। জেলায় জেলায় গঠন করা হয়েছে টাস্কফোর্স। এ যেন পুরনো খেলা। বিগত সরকার লোক দেখানো বাজার অভিযান চালিয়ে কিছু ব্যবসায়ীর অর্থদ- করে মিডিয়ায় প্রচার করতো। বর্তমান সরকারও যেন সেই পথে হাটছে।
শেখ হাসিনা পালানোর পর দিল্লিতে বসে ভারতের সহায়তায় একের পর এক কার্ড ছোঁড়েন অন্তর্বর্তী সরকারকে ঘায়েল করতে। সংখ্যালঘু নির্যাতন, জুডিশিয়াল ক্যূ, আনসার দিয়ে সচিবালয় ঘেড়াও, সরকারি কর্মচারীদের দিয়ে আন্দোলন, গার্মেন্টস সেক্টরে অস্থিরতা, পাহাড়ে অশান্তি সৃষ্টির চেষ্টা করেন। প্রতিটিতে তিনি এ দেশের ভারতীয় তাবেদার দালালচক্রকে ব্যবহার করেন। সবকিছুতেই ব্যর্থ হয়ে এখন ‘কর্পোরেট হাউজগুলোর আওয়ামী সিন্ডিকেট ব্যবসায়ী’দের দিয়ে পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে অশান্তির চেষ্টা করছেন। এর আগে তিনি ঘোষণা দেন ‘ড. ইউনূসের সরকার এক মাসও থাকতে পারবে না’। অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্বশীলরা সবকিছু জানেন এবং বোঝেন। তারপরও নিত্যপণ্যের সিন্ডিকেট ভেঙ্গে ফেলার কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না। বরং দায়িত্বশীল উপদেষ্টারা যেন আওয়ামী অনুগত আমলাদের কাঠে কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন। শেখ হাসিনা গড়া সিন্ডিকেট এখনো সক্রিয়। যারা দেশকে অস্থিতিশীল করতে এখনো বাজারকে নিয়ন্ত্রণ করছে। এই সিন্ডিকেটের হোতা হলো এস আলম, বসুন্ধরা, আব্দুল মোনেম, টিকে, সিটি, মেঘনা, এসিআইসহ বিভিন্ন সময়ে সরকারের দালাল হিসেবে পরিচিত বিভিন্ন ব্যবসায়ী গ্রুপ। এই সিন্ডিকেটটি নিজেরা অবৈধভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা আয় করে যেমন পাচার করেছেন; তেমনি শত অন্যায়-অবিচার বা দেশব্যাপী হত্যাকা- চালালেও আওয়ামী লীগ সরকারকে অন্ধের মতো সমর্থন দিয়ে গেছেন। এদের হাতে এখনো তেল, চাল, ডিম, ডাল, সোলাসহ সব ধরনের পণ্যের নিয়ন্ত্রণ। আর তাই হাসিনা ভারতে পলায়ন করলেও তার স্বার্থ হাসিলে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে বাজার ব্যবস্থাকে এখনো অস্থিতিশীল করে রেখেছে এই কর্পোরেট চক্র।
কাজী ফার্ম, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, ডায়মন্ড পোল্ট্রি, প্যারাগন পোল্ট্রিসহ কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো ব্রয়লার মুরগি ও ডিমের সিন্ডিকেট বাণিজ্য করছে। অথচ ভারত থেকে ডিম আমদানি করেও ডিমের দাম সহনীয় পর্যায়ে আনা যাচ্ছে না। বরং উল্টো উপদেষ্টা পণ্য মূল্য বৃদ্ধির জন্য গণমাধ্যমকে দায়ী করছেন।
জানতে চাইলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের লিয়াজোঁ কমিটির সদস্য আকরাম হোসেন ইনকিলাবকে বলেন, ছাত্ররা দেশ সংস্কারের কাজে নেমেছে। রাষ্ট্র ক্ষমতার সিন্ডিকেট যেহেতু আমরা ভাঙতে পেরেছি, তেমনি বাজার সিন্ডিকেটও ভেঙ্গে ফেলবো।
সারাদেশে জনবল সঙ্কট নিয়েও দেশব্যাপি বাজার তদারকি অভিযান পরিচালনা করছে। জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলার সহকারী পরিচালক মো. হাসান-আল-মারুফ ইনকিলাবকে বলেন, মুরগী, আলু, ডাল, পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও ভোজ্যতেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য স্থিতিশীল ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখার লক্ষ্যে সরকারি ছুটির দিনসহ প্রতিদিনই বাজার তদারকিমূলক অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। অনিয়ম পেলে জরিমানার পাশাপাশি ভোক্তা ও ব্যবসায়ীদের সচেতনও করা হচ্ছে।
জানা গেছে, অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে বাজারে টাকার সরবরাহ কমিয়ে আনার উদ্যোগ নেয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অনুরোধে ৫ সেপ্টেম্বর পেঁয়াজ, আলু, ভাজ্যতেল ও ডিমের ওপর আমদানিতে শুল্ক-কর কমানো হয়। এতে বেড়ে যায় আরো অন্য পণ্যের দাম। এরপর চিনির শুল্ক-কর কমানো হয়। এর আগে ভারত থেকে সাড়ে চার কোটি ডিম আমদানির অনুমতি দেওয়া হয় এবং সে ডিম চলে আসে।
অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ সচিবালয়ে সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বলেন, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সরকার কাজ করছে। একটু সময় লাগবে। সে সময় কতদিন বা জানাননি।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হিসাবে, চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) সয়াবিন ও পাম তেল আমদানি ৯ শতাংশ কমেছে। আগের অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে আমদানি হয়েছিল ৫ লাখ ৫৩ হাজার টন সয়াবিন ও পাম তেল। এ বছর তা ৫৩ হাজার টন কম। সরকারি সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) হিসাবে, খুচরা বাজারে খোলা পাম তেলের দাম এক মাসে প্রতি লিটারে ১০ টাকা বেড়ে ১৪০-১৪৪ টাকা হয়েছে। খোলা সয়াবিনের দাম লিটারে ৩ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৫১-১৫৫ টাকা।
বিগত তিন মাসে অপরিশোধিত চিনি আমদানি হয়েছে ২ লাখ ৩৯ হাজার টন, যা গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৫১ শতাংশ কম। টিসিবির হিসাবে, বাজারে চিনি বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১২৫ থেকে ১৩৫ টাকা, যা এক মাসে আগে ছিল ১২৫-১৩০ টাকা।
দাম কমাতে সরকার অপরিশোধিত ও পরিশোধিত চিনির ওপর নিয়ন্ত্রণমূলক শুল্ক ৩০ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৫ শতাংশ নির্ধারণ করে। এনবিআর বলেছে, এতে আমদানি পর্যায়ে প্রতি কেজি অপরিশোধিত চিনির শুল্ক-কর ১১ দশমিক ১৮ টাকা এবং পরিশোধিত চিনির শুল্ক-কর ১৪ দশমিক ২৬ টাকা কমবে। উল্লেখ্য, এত দিন এক কেজি চিনিতে ৪৩ টাকা শুল্ক-কর দিতে হতো। পেঁয়াজ আমদানিও কমেছে। গত তিন মাসে পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে ১ লাখ ৫৫ হাজার টন। গত বছর একই সময়ে আমদানি হয়েছিল সাড়ে তিন লাখ টন। পণ্যটির শুল্ক-কর কমানোর পরও দাম বেড়েছে কেজিতে ৫১০ টাকা। টিসিবির হিসাবে দাম এখন প্রতি কেজি ১০০-১২০ টাকা।
বিশেষজ্ঞরা আমদানি কমে যাওয়ার পেছনে আওয়ামী সুবিধাভোগী শিল্পগোষ্ঠীকে বিশেষ সুবিধা দেয়াকে দায়ী করছেন। তাদের বক্তব্য, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের আগে এস আলম ও তার স্বার্থসংশ্লিষ্ট গ্রুপগুলো নিজেদের নিয়ন্ত্রিত ব্যাংক থেকে সরকারি দরে ডলার কিনত। সাধারণ আমদানিকারকদের কিনতে হতো বাজারদরে, যা প্রতি ডলারে ৮-১০ টাকা বেশি। এতে বাজারে অসুস্থ প্রতিযোগিতা তৈরি হয়। অন্য বড় গ্রুপগুলো আমদানি কমাতে বাধ্য হয়। বিএসএমের মতো ভোগ্যপণ্য আমদানিতে একসময় শীর্ষ পাঁচে থাকা গ্রুপ এখন বাজার থেকে ছিটকে পড়ে।
রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর দু-একটি শিল্পগোষ্ঠীর আমদানি কমেছে। এনবিআরের তথ্য বলছে, গত অর্থবছরের জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ে এস আলম গ্রুপ পণ্য আমদানি করে দুই লাখ টন। চলতি বছর একই সময়ে গ্রুপটি আমদানি করেছে ৮৩ হাজার টনে। বসুন্ধরা গ্রুপের আমদানি ১ লাখ ১০ হাজার টন থেকে কমে হয়েছে ৫০ হাজার টন। অবশ্য টাকা পাচারের অভিযোগে এস আলম গ্রুপ, নাবিল গ্রুপ ও বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালকদের ব্যাংক হিসাব জব্দ করা হয়েছে।
তবে বিশ্বব্যাংকের হিসাব মতে, বিশ্ববাজারে ভোজ্যতেল, চিনি, গম, মসুর ডালসহ কিছু পণ্যের দাম বেড়েছে। আগস্টের তুলনায় সেপ্টেম্বরে গমের দাম বেড়েছে প্রতি টনে ১৩ থেকে ১৯ ডলার। ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, মসুর ডাল আমদানিতে প্রতি টনে খরচ পড়ত ৬৩০ থেকে ৬৪০ ডলার। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৬৮০ থেকে ৬৯০ ডলার। অবশ্য গম ও মসুর ডালের আমদানি অনেকটাই বেড়েছে।