বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ও ইসলামী ছাত্র শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ড. মুহা. রেজাউল করিম বলেছেন, পবিত্র ঈদ-উল-আযহা’র প্রকৃত শিক্ষা রাষ্ট্রীয়, সমাজ ও ব্যক্তিজীবনে ঘটাতে পারলেই শোষণ ও বঞ্চনামুক্ত কল্যাণমুখী সমাজ প্রতিষ্ঠা সম্ভব। তিনি ত্যাগের মহিমায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশ ও জাতি গঠনে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
তিনি আজ লক্ষ্মীপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ৫ নং পার্বতীনগর ইউনিয়ন শাখা আয়োজিত এক ঈদ পূনর্মিলনী ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ইউনিয়ন শাখা আমীর ও সাবেক ছাত্রনেতা মনির হোসেন মিলনের সভাপতিত্বে এবং টিম সদস্য মো. রাজীবুর রহমান চৌধুরীর পরিচালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি বক্তব্য রাখেন সদর উপজেলা আমীর মুমিন উল্লাহ পাটোয়ারি। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সেক্রেটারি মাষ্টার মনিমুল হক, উপজেলা কর্মপরিষদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা হাবিবুর রহমান, জামায়াত নেতা হোসেন আহম্মদ মিলিটারি, মাওলানা আলমগীর হোসাইন, মাওলানা নাসির আহমদ, মাওলানা আনোয়ার হোসেন, মাওলানা আব্দুল ওয়াহাব ও শিবিরের ইউনিয়ন সভাপতি আব্দুল্লাহ হানজালা প্রমূখ।
ড. এম আর করিম বলেন, পবিত্র ‘জিলহজ্ব’ এক মহামাহিমান্বিত মাস এ মাসেই হযরত ইব্রাহীম (আ.) আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নির্দেশে স্বীয় পুত্র হযরত ঈসমাইল (আ.) কে কুরবানি করতে সংকল্পবদ্ধ হন। মুসলিম জাতির পিতার আদর্শ অনুসরণেই মুসলিম উম্মাহ দিবসটিকে পবিত্র ঈদুল আযহা হিসাবে পালন করে আসছে। তিনি মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নির্দেশ পালনার্থে প্রিয় পুত্র ঈসমাঈল (আ.) কে কুরবানি করতে গিয়ে যে ত্যাগের নজরানা পেশ করেছিলেন তা শত-সহস্র বছর পরেও মুসলিম উম্মাহর জন্য অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় আদর্শ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত আছে । তাই সেই ত্যাগ ও আত্মত্যাগের মহিমায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে অগ্রসৈনিকের ভূমিকা পালন করতে হবে।
তিনি বলেন, বস্তুবাদী লোভ-লালসা ও কামনা-বাসনার উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে প্রবৃত্তির উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করাই ঈদুল আযহার প্রকৃত শিক্ষা। অন্যায়-অসত্য, অনাচার-পাপাচার, হিংসা-বিদ্বেষ, জুলুম-নির্যাতন, বিভেদ-বিসংবাদ বন্ধ করে সমাজে সার্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠা করে মানবজাতির প্রকৃত কল্যাণ সাধন করা পবিত্র ঈদ-উল-আযহার মহাত্ব ও বৈশিষ্ট। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও আমরা যথারীতি ঈদ উদযাপন করলেও দেশের মানুষ ঈদের প্রকৃত আনন্দ থেকে বঞ্চিত। বস্তুত রাষ্ট্রশক্তি অশুভ শক্তিকে দমনের পরিবর্তে অপশক্তিকেই রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও জুলুম-নির্যাতনের মাধ্যমে জনজীবনকে দুর্বিসহ করে তোলা হচ্ছে। তাই পবিত্র ঈদুল আজহার শিক্ষাকে ধারণ করে অন্যায় ও অসত্যের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলত হবে।
তিনি আরও বলেন, সরকার দেশ পরিচালনায় সার্বিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তারা জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। ক্ষমতাসীনরা উপলব্ধি করতে পেরেছে যে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে তাদের পক্ষে ক্ষমতায় টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই তারা বিনাভোটে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্যই দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে দিয়েছে। অবাধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের রক্ষাকবজ কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি বাতিল করা হয়েছে। দেশে এখন নির্বাচনের নামে রীতিমত তামাশা চলছে। সদ্যসমাপ্ত কয়েকটি সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন তার যথার্থ প্রমাণ। তারা ভিন্নমত দমনের জন্য রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের পথ বেছে নিয়েছে। সরকার একইভাবে নির্বাচনের নামে প্রসহন করে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন বৈতরণী পার হতে চায়। কিন্তু সচেতন জনতা সরকারের সে ষড়যন্ত্র কখনোই সফল হতে দেবে না। তিনি সরকারের জুলুম-নির্যাতন ও ভোট ডাকাতির ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করে আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে লক্ষ্মীপুর-২ আসনে জেলা আমীর মাষ্টার রুহুল আমীন ভূঁইয়ার বিজয় নিশ্চিত করতে সকল স্তরের জনশক্তিকে নির্বাচনী ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহবান জানান।