বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, জামায়াতে ইসলামী প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ক্ষুধা, দারিদ্র ও বৈষম্যমুক্ত শান্তির সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সে ধারাবাহিকতায় আজ আমরা দূর্গত মানুষের পূনর্বাসনের জন্য সীমিত সামর্থ নিয়ে এগিয়ে এসেছি। এতে কেউ ন্যুনতম উপকৃত হলে আমাদের শ্রম স্বার্থক হয়েছে বলে মনে করবো। তিনি আর্ত-মানবতার কল্যাণ ও মুক্তির জন্য দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানান।
তিনি আজ ল²ীপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চন্দ্রগঞ্জ উপজেলা শাখা আয়োজিত বন্যাদূর্গত ৩৫০ পরিবারের পূনর্বাসনের জন্য ঢেউটিন বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমীর মোস্তফা মোল্লার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নয়েবে আমীর নূর মোহাম্মদ রাসেল, সেক্রেটারি রেজাউল ইসলাম খান সুমন, মান্দারী ইউনিয়ন আমীর আব্দুল খালেক, সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, ইউপি সদস্য কাউসার হামিদ সহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
ড. রেজাউল করিম বলেন, আর্ত-মানবতার কল্যাণ ও মুক্তিই জামায়াতের রাজনৈতিক দর্শন। মূলত, প্রত্যেক নাগরিকের দূর্দশা লাঘব সহ সকল সমস্যা সমাধানের দায়িত্ব রাষ্ট্রের। কিন্তু দেশে কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত না থাকায় জনগণ রাষ্ট্রের কল্যাণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কিন্তু রাষ্ট্রের শূণ্যতা ব্যক্তি ও সাংগঠনিক পর্যায়ে সমাধান করা সম্ভব নয়। আমাদের সাধ অনেক হলেও সাধ্য খুবই সীমিত। তবুও আমরা আমাদের সীমিত সামর্থ নিয়ে বিপন্ন মানুষের কল্যাণে সাথে থাকার সাধ্যমত চেষ্টা করছি। দেশে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠিত থাকলে রাষ্ট্রীয়ভাবেই মানুষের সকল সমস্যার সমাধান করা হতো। লাইনে দাঁড়িয়ে মানুষের কাছে হাত পাততে হতো না। তাই গণমানুষের সকল সমস্যার সমাধান ও অধিকার নিশ্চিত করার জন্য দেশকে ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার কোন বিকল্প নেই। তিনি সেই স্বপ্নের সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে জামায়াতের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
তিনি বলেন, জামায়াত একটি গণমুখী ও আদর্শবাধী রাজনৈতিক সংগঠন। আমরা দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা করে মানুষের অধিকারের নিশ্চয়তা দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা এমন এক সমাজ কায়েম করতে চাই যেখানে মানুষে মানুষে কোন ভেদাভেদ থাকবে না। সে সমাজে উঁচু-নিচু, ধনী-গরীব, জাত-পাত, ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে কাউকে লাঞ্ছিত বা অপমানিত করা হবে না। সর্বোপরি ইসলাম মানুষের যেসব মৌলিক অধিকার দিয়েছে সেগুলোও যথাযথভাবে নিশ্চিত করা হবে। ধর্ম-বর্ণ, শ্রেণি-পেশা, নারী-পুরুষ, শিশু-বৃদ্ধ নির্বিশেষ সকলেই তাদের অধিকারের নিশ্চয়তা পাবেন। তিনি একটি আদর্শিক সমাজ প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে ময়দানে কাজ করার আহবান জানান।
রামপুরায় শহীদ পরিবারের সাথে মতবিনিময়
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরার সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারী নাজিম উদ্দীন মোল্লা বলেছেন, শহীদেরা আমাদের সম্পদ। তাদের আত্মত্যাগের উদ্দেশ্যকে ধারণ করেই আমাদের পথ চলতে হবে। তাদের আত্মত্যাগের মাধ্যমে আল্লাহ আমাদেরকে চেপে বসা দীর্ঘ ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদ থেকে মুক্ত করেছেন। আমরা বিশ্বাস করি মহান রব শহীদদেরকে সর্বোচ্চ মর্যাদার আসনেই অধিষ্ঠিত করবেন।
তিনি আজ বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর রামপুরা দক্ষিণ থানার উদ্যোগে আয়োজিত বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নির্মমভাবে শাহাদাত বরণ করা শহীদদের পরিবারের সাথে মতবিনিময় ও আর্থিক সহযোগিতা প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। রামপুরা দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত আমির মাওলানা আব্দুল লতিফের সভাপতিত্বে এবং থানা সেক্রেটারি এডভোকেট খালেদ সাইফুল্লাহ তারেকের সঞ্চালনায়
এতে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক থানা আমীর জনাব ইঞ্জি. এম. এ. রশীদ।
জনাব নাজিম উদ্দিন মোল্লা আরো বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী শহীদ ও আহত পরিবারের সাথে থাকাকে নিজেদের দায়িত্ব মনে করে। যারা দেশের জন্য নিজেদের জীবন বিলীন করেছেন, তাদের জন্য আমাদের দায়িত্বের জায়গা থেকেই আজকের এ আয়োজন। যে কুরবানীর নজরানা তারা পেশ করে গেছেন আল্লাহ রব্বুল আলামীন তাদেরকে জান্নাতের সর্বোচ্চ মর্যাদায় আসীন করবেন ইনশআল্লাহ। তারা আমাদের প্রেরণার উৎস। জাতীয় বীর। ফ্যাসিবাদমুক্ত, শোষণ জুলুম মুক্ত যে সমাজ ও দেশের স্বপ্নে শহীদেরা জীবন দান করেছেন তাদের সেই স্বপ্নকে আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে বাস্তবায়ন করতে হবে। শহীদদের পরিবারগুলো ধন্য। আল্লাহ তার পছন্দের বান্দাহকেই শহীদ হিসেবে বাছাই করেন। আমরা এ আন্দোলনে সকল শহীদদের আত্মত্যাগের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়ে সাধ্যমত তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করে যাচ্ছি।করে যাবো ইনশা আল্লাহ।
প্রধান অতিথি শহীদ পরিবারের সদস্যদের হাতে বরাদ্দকৃত আর্থিক সহযোগিতা তুলে দেন। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ, রামপুরা দক্ষিণ থানার কর্মপরিষদ সদস্যবৃন্দ ও বিভিন্ন শ্রেণী পেশার বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।
প্রোগ্রামে শহীদ পরিবারের সদস্যবৃন্দ কান্না বিজড়িত কন্ঠে শহীদদের স্মৃতিচারণ করেন। এসময় পুরো হলরুম জুড়ে এক আবেগঘন পরিবেশ তৈরী হয়।