পরিকল্পিতভাবে বিভিন্ন স্থানে সহিংস ঘটনা ঘটিয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনিত ঘটানোর চেষ্টা চলছে। সম্প্রতি ‘মব জাস্টিস’ করে কয়েকজনকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ব্যক্তিগত শত্রুতার জেরে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে এবং রাজনৈতিক প্রতিহিংসাপরায়ন হয়ে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হচ্ছে। উত্তপ্ত পরিস্থিতি করে কোনো কোনো পক্ষ শান্তিশৃঙ্খলা বিনষ্ট করতে চাচ্ছে বলে মনে করছেন অভিজ্ঞ মহল। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে বড় ইস্যু তৈরির চেষ্টা করা হচ্ছে বলে গোয়েন্দা সংস্থার কাছে তথ্য রয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন সংস্থার পাশাপাশি সেনাবাহিনীকে দুই মাসের জন্য মেজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দিয়ে মাঠে নামিয়েছে।
এদিকে আইন নিজের হাতে তুলে না নিতে পুলিশ সদরদপ্তর থেকে কঠোর নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। মব জাস্টিস, গণপিটুনি, আইন নিজের হাতে তুলে নিলে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। এছাড়া ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মো. নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ধীরে ধীরে উন্নতি হচ্ছে। সেনাবাহিনীকেও ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়া হয়েছে, যেন কার্যক্রমগুলো দ্রুত হয়। জানা গেছে, সেনাববাহিনীর অভিযানের পর আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে এসেছে এবং বিভিন্ন স্থান থেকে অস্ত্র এবং মাদক দব্য উদ্ধারের পাশাপাশি চিহ্নিত অপরাধীদের আটক করা হচ্ছে। বুধবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দুইজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের সামনে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার নেতৃত্ব দেয়া শিক্ষার্থী জালাল মিয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপসম্পাদক বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে। অন্যদিকে জাবিতে শামীম হত্যায় ধামরাই কলেজের সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিবকে আটক করা হয়েছে। এদিকে গত ১৬ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জে স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এস এম জিলানীর গাড়িবহরে হামলায় একই কমিটির ক্রীড়া সম্পাদক শওকত আলী (দিদার) নিহত হন। বিএনপির নেত-কর্মীদের অভিযোগ, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এই হামলা চালিয়েছেন। এতে সাংবাদিকসহ আরও অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। ৭ সেপ্টেম্বর রাতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা আব্দুল্লাহ আল মাসুদ গণপিটুনিতে নিহত হন। এর বাইরে দেশের বিভিন্ন স্থানে একাধিক গণপিটুনির ঘটনায় হতাহত হওয়ার খবর প্রকাশ হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে খাগড়াছড়িতে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা ও সদর উপজেলায় পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে সংঘর্ষে তিনজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও অন্তত ১৭ জন। তাদের মধ্যে চারজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এ ঘটনার জেরে গতকাল শুক্রবার রাঙামাটি শহরে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষে একজন পাহাড়ি যুবক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন অন্তত ৫৩ জন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে দুই পার্বত্য জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা বিভাগের সাবেক একজন কর্মকর্তা জানান, সরকারের উচিত হবে এই সব মব জাস্টিসের সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া। ‘গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে একটি সরকারের পতন হয়েছে। এখন কিছু লোক মনে করছেন, তারা যা খুশি তা-ই করতে পারবেন। আবার কোনো একটি গ্রুপ হয়তো পরিস্থিতি খারাপ করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করতে চাইবে। কেউ কেউ আবার সুযোগ নিচ্ছেন। ফলে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশের ওপর ব্যাপক হামলার পর পুলিশও এখন আর তেমন সক্রিয় না। সরকারের উচিত হবে সেনাবাহিনীকে আরও অ্যাকটিভ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা।’
ঢাবিতে তোফাজ্জল হত্যার দায় স্বীকার ঢাবির ৬ শিক্ষার্থীর: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে তোফাজ্জল হোসেন নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার ছয় শিক্ষার্থী স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল শুক্রবার বিকেলে আদালতে নেয়া হলে বিচারকের খাস কামরায় ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তারা। পরে আদালতের নির্দেশে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। গ্রেফতার শিক্ষার্থীরা হলেন- পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জালাল মিয়া, মৃত্তিকা, পানি ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী সুমন মিয়া, পুষ্টি ও খাদ্য বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মো. মোত্তাকিন সাকিন এবং আল হুসাইন সাজ্জাদ, আহসানউল্লাহ ও ওয়াজিবুল আলম নামের তিন শিক্ষার্থী। তারা সবাই এফএইচ হলের আবাসিক ছাত্র। তাদের মধ্যে জালাল মিয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক উপসম্পাদক। অপর পাঁচজনের রাজনৈতিক পরিচয় জানা যায়নি। ঘটনার কারণ অনুসন্ধান, জড়িতদের চিহ্নিতকরণ ও গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার জন্য পুলিশের পাশাপাশি ডিবির একাধিক টিম কাজ করছে বলেও জানিয়েছে ডিএমপি। পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের ১৮-১৯ সেশনের শিক্ষার্থী জালাল আহমেদ, মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের ২০২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ সুমন, পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী মুত্তাকীন সাকিন, গণিত বিভাগের আহসান উল্লাহ (২৪), জিওগ্রাফির আল হোসেন সাজ্জাদ ও ওয়াজিবুল আলম। এর আগে বৃহস্পতিবার তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ বাদী শাহবাগ থানায় মামলা করেন। পরে বিকেলে ঢাবির প্রক্টরিয়াল টিম ও শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় অভিযুক্ত ছয়জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৮ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৮টার দিকে একজন যুবক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করতে থাকলে কিছু ছাত্র তাকে আটক করেন। প্রথমে ফজলুল হক মুসলিম হলের মূল ভবনের গেস্টরুমে নিয়ে তিনি মোবাইল চুরি করেছেন অভিযোগ তুলে এলোপাতাড়ি চর-থাপ্পড় ও কিলঘুষি মারেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাকে জিজ্ঞাসা করলে তার নাম তোফাজ্জল বলে জানান। মানসিক রোগী বুঝতে পেরে তাকে ফজলুল হক মুসলিম হলের ক্যান্টিনে নিয়ে খাওয়ানো হয়। পরে ফজলুল হক মুসলিম হলের দক্ষিণ ভবনে গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে পেছনে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে উচ্ছৃঙ্খল কিছু ছাত্র বেধড়ক মারধর করলে তোফাজ্জল অচেতন হয়ে পড়েন। বিষয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন আবাসিক শিক্ষককে জানালে তাদের সহায়তায় তোফাজ্জলকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে ওই যুবককে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে গেলে চিকিৎসক প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে ১২টা ৪৫ মিনিটের সময় তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
জাবিতে শামীম হত্যার ঘটনায় সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি আটক : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম মোল্লা হত্যার ঘটনায় ধামরাই কলেজের সাবেক ছাত্রলীগ সভাপতি হাবিবুর রহমান হাবিবকে আটক করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈদ আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে সকালে ঢাকার ধামরাইয়ের মোকামটোলা এলাকার নিজ বাড়ি থেকে তাকে আটক করে আশুলিয়া থানা পুলিশ।
নিহত শামীম সাভারের আশুলিয়া থানার কাঠগড়া এলাকার মোল্লা বাড়ির ইয়াজ উদ্দিন মোল্লার ছেলে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষের (৩৯ ব্যাচ) ইতিহাস বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। আটক হাবিবুর রহমান হাবিব ধামরাই পৌর এলাকার মোকামটোলা লাবু খানের ছেলে এবং ধামরাই কলেজের ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আহম্মদ বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ বা বিভিন্ন তথ্যের জন্য একজনকে (হাবিবুর রহমান হাবিব) আশুলিয়া থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। তবে এজাহারনামীয় আসামিদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশে কর্তৃপক্ষের অনুমতির প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যারা অপরাধী তাদের জন্য তো কোনো অনুমতির প্রয়োজন নেই।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা ফটকসংলগ্ন একটি দোকানে অবস্থান করছিলেন সাবেক শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ নেতা শামীম মোল্লা। খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী সেখানে গিয়ে তাকে গণধোলাই দেন। পরে ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম উপস্থিত হয়। একপর্যায়ে নিরাপত্তাকর্মীদের সহায়তায় তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা শাখায় নিয়ে আসা হয়। সেখানে উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা তাকে আবারও গণপিটুনি দেন। পরে তাকে আহত অবস্থায় আশুলিয়া থানা পুলিশের কাছে সোপর্দ করা হয়। এরপর পুলিশ চিকিৎসার জন্য সাভারের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালে ভর্তি করলে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় শামীমের মৃত্যু হয়। শামীম হত্যার ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্টার (নিরাপত্তা) সুদীপ্ত শাহিন বাদী হয়ে আশুলিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আটজন শিক্ষার্থীর নাম উল্লেখ করে ২০-২৫ জনকে আসামি করা হয়েছে। শামীম মোল্লা হত্যার ঘটনায় আট শিক্ষার্থীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। ঘটনার অধিকতর তদন্তে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
খিলগাঁওয়ে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা: রাজধানীর খিলগাঁও থানার তালতলার ঝিলপাড় এলাকায় নুরু ইসলাম (৫০) নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকাল পৌনে ৪টার দিকে আহত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে জরুরি বিভাগে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে মৃত ঘোষণা করেন। এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন খিলগাঁও থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল্লাহ আল হাসান। তিনি বলেন, আমরা দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে খবর পেয়ে তালতলার ঝিলপাড় এলাকায় যাই। সেখানে গিয়ে আহত অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে দেখতে পাই। পরে আমরা তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান তিনি মারা গেছেন। তিনি বলেন, কে বা কারা তাকে পিটিয়ে আহত করে ঝিলপাড় এলাকায় ফেলে যায়। প্রাথমিকভাবে আমরা ওই ব্যক্তির নামপরিচয় পেয়েছি। তবে এখনও তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। নিহত ব্যক্তি বর্তমানে কোথায় থাকতেন এবং কি করতেন সে বিষয়েও জানা যায়নি। এসআই আব্দুল্লাহ আল হাসান বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি অজ্ঞাত ব্যক্তিরা তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। তিনি ঢাকার কেরাণীগঞ্জ থানার রায়ের চর এলাকার আব্দুল করিমের ছেলে। ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালের জরুরি বিভাগের মর্গে রাখা হয়েছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানান তিনি।
আইন নিজের হাতে তুলে নিলে কঠোর ব্যবস্থা : আইন নিজের হাতে তুলে নিলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদরদপ্তর। গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো সদরদপ্তরের এক বার্তায় এমনটি জানানো হয়েছে। সদরদপ্তর বলছে, সম্প্রতি কোথাও কোথাও গণপিটুনি দিয়ে মানুষ হত্যার নৃশংস ঘটনা পরিলক্ষিত হচ্ছে। এ ধরনের মব জাস্টিস কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নিলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে বাংলাদেশ পুলিশ বদ্ধপরিকর। কেউ অন্যায় করলে বা অপরাধী হলে দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী ওই ব্যক্তির বিচারের বিধান রয়েছে। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারো নেই। কোনো ব্যক্তি অন্যায় এবং অপরাধ করলে তাকে আইনের হাতে সোপর্দ করতে হবে; কোনোভাবেই আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়া যাবে না। সদরদপ্তর জানায়, কোনো ব্যক্তি অন্যায় বা অপরাধ করলে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ অথবা নিকটস্থ থানায় যোগাযোগ করুন। আইন নিজের হাতে তুলে না নেওয়ার জন্য পুলিশ সদরদপ্তর সকলের প্রতি বিশেষভাবে অনুরোধ জানাচ্ছে। মব জাস্টিস বা গণপিটুনির মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে পুলিশ সদরদপ্তর দেশের সকল সচেতন নাগরিকের সহযোগিতা কামনা করছে। বাংলাদেশ পুলিশ দেশের আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।