এ বছর ভারতে ইলিশ রপ্তানি করবে না বাংলাদেশ। দেশের মানুষের কাছে ইলিশ আরও সহজলভ্য করতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা। তার দাবি, দেশের বাজারে পর্যাপ্ত ইলিশের সরবরাহ নিশ্চিত করতেই রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ইলিশের উৎপাদন হয়। প্রতি বছর দুর্গাপূজার সময় ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জন্য ইলিশের ওপর থেকে রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা শিথিল করে বাংলাদেশ। মূলত সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসবে ঢাকা থেকে যাওয়া ইলিশকে ভারতীয়দের জন্য উপহার হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী সাধারণত বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মতামতের ভিত্তিতে যে কোনো পণ্য রপ্তানির অনুমতি দিয়ে থাকে। ভারতে ইলিশ রপ্তানির জন্য আমাদের কাছে প্রায় ৫০টি আবেদন ঝুলে আছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে আমরা কোনো রপ্তানির অনুমতি পাইনি। সে কারণেই ইলিশ এবার ভারতে যাবে না। কর্তৃপক্ষ বলছে, দেশের বাজারে পর্যাপ্ত ইলিশের সরবরাহ নিশ্চিত করতেই রপ্তানি নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যেন দেশের মানুষের কাছে ইলিশ আরও সহজলভ্য হয়। কারণ ইলিশ বাংলাদেশের জাতীয় মাছ হওয়া সত্ত্বেও এখনো প্রান্তিক শ্রেণির অনেকের কাছে ইলিশ কেনা বিলাসিতা। দেশে ইলিশের দামও আকাশ সমান। এমন চিন্তা থেকেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার একাধিক গণমাধ্যমে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দেশের বাজারে ইলিশের সরবরাহ বাড়াতে চায়।
মৎস্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সর্বশেষ ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ ভারতে ৬৬৪ দশমিক ৮৬ টন ইলিশ রপ্তানি করেছে। যার রপ্তানি মূল্য ৭ দশমিক ৭১ মিলিয়ন ডলার। এর আগে ২০২২-২৩ অর্থবছরে বাংলাদেশ ১ হাজার ৩৭৬ দশমিক ৪২ টন ইলিশ রপ্তানি করেছিল, যার মূল্য ১৩ দশমিক ৬৮ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশেও এ মাছের চাহিদা বেশি। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ইলিশের আহরণ বাড়লেও দেশের বাজারে দাম এখনো বেশ চড়া।