দলমত নির্বেশেষে সকল পেশা ও শ্রেণির মানুষকে বন্যাদূর্গত মানুষের দুর্দশা লাঘব ও চিকিৎসা সেবায় এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি এবং ল²ীপুর সদর উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
তিনি আজ ল²ীপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চন্দ্রগঞ্জ থানার কুশাখালী ইউনিয়নের ফরাসগঞ্জ বাজারে ইউনিয়নভিত্তিক বন্যার্ত মানুষের সেবায় মেডিক্যাল টিম কার্যক্রমের অংশ হিসাবে দিনব্যাপী চলমান মেডিক্যাল ক্যাম্প পরিদর্শনকালে এসব কথা বলেন। এ সময় তার সাথে উপস্থিত ছিলেন থানা সেক্রেটারী এড. রেজাউল ইসলাম খাঁন সুমন, শিবিরের শহর সভাপতি আরমান পাটওয়ারী, ইউনিয়ন সভাপতি শফিকুল ইসলাম ও সাবেক সভাপতি জহিরুল ইসলামসহ নেতৃবৃন্দ। উল্লেখ্য, প্রতিটি টিমে ৭ করে ডাক্তার চিকিৎসা সহায়তা কার্যক্রমে অংশ গ্রহণ করেন এবং প্রায় ১ হাজার ২শ রুগীকে চিকিৎসা সেবা ও বিনামূল্যে ওষুধ প্রদান করা করা হয়।
ড. রেজাউল করিম বলেন, এবারের ভয়াবহ বন্যা মোটেই স্বাভাবিক ছিল না বরং প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের শান্তিপ্রিয় জনগণকে শাস্তি দেওয়ার জন্য পরিকল্পিতভাবে এই ভয়াবহ পরিস্থিতি করেছে। বাংলাদেশে উজানে ভারতে অভ্যন্তরে নির্মিত সকল বাধ খুলে দেওয়ার কারণে দেশের দক্ষিণাঞ্চল ভয়াবহভাবে প্লাবিত হয়েছিল। ফলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ৫০ লাখ মানুষ পানিবন্দী হয়ে সর্বশান্ত হয়েছেন। জানমালেরও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বানের পানিতে ভেসে গেছে হাজার হাজার গবাদী পশু। কিন্তু এ বিষয়ে বৃহত প্রতিবেশীর কোন উদ্বেগ নেই বরং ভারতের রাষ্ট্রদূত বাবু প্রণয় ভার্মা প্রধান উপদেষ্টার সাথে দেখা করে বলেছেন, ভারত বাধ খুলে দেয়নি বরং তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে খুলে গেছে বলে দাবি করেছিলেন। যা কোন ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয় বরং অসত্যও। তিনি ভারতকে তাদের হঠকারী সিদ্ধান্ত থেকে বিরত থেকে বাংলাদেশ সহ সকল প্রতিবেশির সাথে প্রতিবেশীসূলভ আচরণ করার আহবান জানান।
তিনি বলেন, জামায়াত একটি গণমুখী, কল্যাণকামী ও আদর্শবাদী রাজনৈতিক সংগঠন। আর্তমানবতার কল্যাণই জামায়াতের রাজনীতির মূলমন্ত্র ও দর্শন। হাদিসে রাসূল (সা.)-এ বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি তার মুসলিম ভাইয়ের বিপদ দূর করবে, আল্লাহ তাআলা কিয়ামতের দিন তার বিপদসমূহ দূর করে দেবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুসলমানের দোষ ঢেকে রাখবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার দোষ ঢেকে রাখবেন।’ (বুখারি, হাদিস : ২৪৪২) অনত্র বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমকে দুনিয়ার বিপদসমূহের মধ্যকার কোনো বিপদ থেকে রক্ষা করবে, এর প্রতিদানে মহান আল্লাহ কিয়ামতের দিনের বিপদসমূহের কোনো বিপদ থেকে তাকে রক্ষা করবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো গরিব লোকের সঙ্গে (পাওনা আদায়ে) নম্র ব্যবহার করবে, আল্লাহ তার সঙ্গে দুনিয়া ও আখিরাত উভয় স্থানে নম্র ব্যবহার করবেন।…. বান্দা যতক্ষণ তার ভাইয়ের সাহায্য করে, আল্লাহও ততক্ষণ তাঁর বান্দাকে সাহায্য করেন। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৯৪৬) অন্য হাদিসে বলা হয়েছে, ‘আল্লাহ তার ওপর দয়া করেন না, যে মানুষের ওপর দয়া করে না।’ (বুখারি, হাদিস : ২৪৮৬) তাই বন্যাদূর্গতদের কল্যাণে দলমত নির্বিশেষে সকলকে এযোগে কাজ করতে হবে। তিনি আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে ধৈর্য ও সাহসিকতার সাথে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকলের প্রতি আহবান জানান।