রুকনরাই জামায়াতের মূল প্রণশক্তি ও এসেট; তাই নিরবিচ্ছিন্ন দাওয়াতি কার্যক্রম সম্প্রসারণ এবং বেশি বেশি ভালো কাজ করে দেশ-জাতির মুক্তি ও কল্যাণের জন্য নিজেদেরকে সময়ের সাহসী সন্তান হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
তিনি গতকাল রাত ৯টায় রাজধানীর মিরপুরের প্রিন্স চাইনিজ রেস্টুরেন্টে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের মিরপুর, কাফরুর, পল্লবী ও গুলশান জোন যৌথ আয়োজিত এক সদস্য (রুকন) সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান মূসার সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দীন মানিকের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সদস্য সম্মেলনে পবিত্র কালামে হাকিম থেকে দারস পেশ করেন বিশিষ্ট ইসলামী চিন্তাবিদ অধ্যাপক ড. মাওলানা আবুল ইহসান। এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ও পল্লবী অঞ্চল পরিচালক নাসির উদ্দীন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের প্রচার-মিডিয়া সম্পাদক মু. আতাউর রহমান সরকার, ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য শাহ আলম তুহিন ও মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ প্রমুখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, একটি সফল আন্দোলন ও গণবিপ্লবের মাধ্যমে গত ৫ আগস্ট দেশ স্বৈরাচার, ফ্যাসীবাদ ও অপশাসন-দুঃশাসন মুক্ত হয়েছে। ফলে জনগণের মধ্যে নতুন আশাবাদের সৃষ্টি হয়েছে। আর এই আন্দোলনে ছাত্র- জনতার সাথে জামায়াতে ইসলামীও ঐতিহাসিক ভূমিকা পালন করেছে। ফ্যাসিবাদ বিরোধী সকল রাজনৈতিক শক্তি ও দেশের সকল শ্রেণিপেশার মানুষ এই ঐতিহাসিক বিজয়ের অংশীদার। আন্দোলনে আপোষহীন ভূমিকার কারণে সাধারণ মানুষের মধ্যে জামায়াতের গ্রহণযোগ্যতা ও স্বীকৃতি আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। অপপ্রচার ও ভুল বুঝাবুঝির বৃত্ত থেকে বেড়িয়ে এসে মানুষ জামায়াতকে নিয়ে নতুন করে ভাবতে শুরু করেছে। তাই ইসলামী আন্দোলনের শপথের কর্মীদের হীনম্মন্যতার কোন সুযোগ নেই। তিনি দেশ ও জাতির মুক্তির জন্য রুকন সহ সকল স্তরের জনশক্তিকে ময়দানে আপোষহীন ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, জামায়াত দেশে একটি ন্যায়-ইনসাফভিত্তিক কুরআনের সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য দীর্ঘদিন নিরবিচ্ছিন্নভাবে আন্দোলন করে যাচ্ছে। তাই দেশে একটি সফল বিপ্লব ও দেশ চালানোর জন্য যোগ্য, প্রজ্ঞাবান ও নেতৃত্বের গুণাবলি সম্পন্ন জনশক্তি তৈরির কোন বিকল্প নেই। যার যতটুকু সুযোগ ও সক্ষমতা রয়েছে, তা-ই যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে বেগবান করতে হবে। তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠায় সর্বোচ্চ ত্যাগের নজরানা পেশ করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান। তাহলে বিজয় অনিবার্য হয়ে উঠবে।
তিনি আরো বলেন, পবিত্র কালামে হাকীমই উম্মাহর সর্বোচ্চ সংবিধান। রাসূল (সা.) এই কুরআন দিয়েই ঘোর তমসাচ্ছন্ন জাজিরাতুল আরবে অসাধ্য সাধন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। বহুমত এবং গোত্রে গোত্রে বিবদমান পক্ষগুলোকে মদীনা সনদের মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। মূলত, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন রাসূল (সা.)কে বিশ্ব জাহানের রহমত হিসাবে প্রেরণ করেছিলেন। আমরা তারই উম্মত । তাই বিজয়োত্তর সময়ে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে প্রতিশোধ প্রবণ হওয়ার কোন সুযোগ নেই। জামায়াতের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে গণমানুষের কল্যাণ ও মুক্তি। বিষয়টি মানুষকে বোঝাতে পারলেই তারা জামায়াতের দাওয়াত গ্রহণ করবে। এক্ষেত্রে জোরজবরদস্তির কোন সুযোগ নেই। শুধু আল্লাহকে রাজী-খুশী করার জন্যই আমাদেরকে দ্বীনে হকের পথে বিরামহীনভাবে কাজ করতে হবে। তিনি ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সকল পেশা ও শ্রেণির মানুষ দাওয়াতের আওতায় আনার আহ্বান জানান।