দেশে যেন বন্যার আঘাত কাটছেই না। এক দফা ক্ষত কাটিয়ে ওঠার আগেই আরেক দফায় বন্যা আঘাত হানছে। আগস্টের ভয়াবহতা কাটার আগেই ফের শঙ্কা দেখা যাচ্ছে আরেক দফা বন্যার। গতকাল রোববার দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
আবহাওয়াবিদ ড. মো. ছাদেকুল ইসলাম জানিয়েছেন, এ মাসে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা আছে। বঙ্গোপসাগরে এক-দুটি বর্ষাকালীন লঘুচাপ সৃষ্টি হতে পারে, যার মধ্যে একটি মৌসুমি নি¤œচাপে পরিণত হতে পারে। এ ছাড়া দেশের উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে দুই-তিন দিন মাঝারি ধরনের বজ্রঝড় এবং সারাদেশে তিন-পাঁচ দিন হালকা বজ্রঝড়ের শঙ্কা রয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে মৌসুমি ভারী বৃষ্টিপাতজনিত কারণে কতিপয় স্থানে স্বল্প মেয়াদি বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
এদিকে গত কয়েকদিনের গরমের মধ্যেই আবার বৃষ্টির প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসাগর এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘনীভূত হয়েছে। বর্তমানে তা মৌসুমি নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি বর্তমানে উত্তর অন্ধ্র-দক্ষিণ ওড়িশ্যা উপকূলীয় এলাকায় অবস্থান করছে।
নিম্নচাপের প্রভাবে পটুয়াখালীর কুয়াকাটার আশপাশে বঙ্গোপসাগর কিছুটা উত্তাল রয়েছে। উপকূলীয় এলাকার বেশিরভাগ স্থানের আকাশ কিছুটা মেঘাচ্ছন্ন রয়েছে। বৃষ্টি না থাকলেও বাতাসের চাপ বেড়েছে। স্বাভাবিকের চেয়ে নদ-নদীর পানির উচ্চতাও কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে।
পটুয়াখালীর পায়রাসহ দেশের সব সমুদ্রবন্দরকে ১ নম্বর দূরবর্তী সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। এ সময় সব মাছ ধরার ট্রলার উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। এদিকে আবহাওয়া বিরূপ থাকলেও গত দুই দিন ধরে প্রচ- গরম অনূভূত হচ্ছে বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্রে জানা গেছে। তবে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রংপুর, ময়মনসিংহ, খুলনা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু স্থানে দমকা বাতাসের সঙ্গে বৃষ্টি হবে। তবে আজ সোমবার থেকে বাকি দুয়েক দিন বৃষ্টির প্রবণতা বাড়তে পারে বলে আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আবহাওয়াবিদ বজলুর করিম জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে বায়ু কম সক্রিয় রয়েছে। এই কারণে বৃষ্টি কমে গেছে। আগামীকাল সোমবারের মধ্যে মৌসুমি বায়ু আবারও শক্তি অর্জন করতে পারে। গতকাল দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রংপুর বিভাগের রাজারহাটে ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগের রাঙামাটিতে। যার পরিমাণ হচ্ছে ৪২ মিলিমিটার।
এদিকে পাকিস্তানে ভারী বৃষ্টিপাতে শনিবার ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আরব সাগরের উত্তর-পূর্ব অংশে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় আসনা এখন পাকিস্তানের করাচি থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে। ১৮৯১ সাল ও ২০২৩ সালের মধ্যে আরব সাগরে মোট তিনটি ঘূর্ণিঝড় হয়েছিল। আর এই আগস্ট মাসে আরব সাগরে ঘূর্ণিঝড় একটি বিরল ঘটনা।