বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, ছাত্র-জনতার দুর্বার আন্দোলনের মাধ্যমে স্বৈরাচারি ও ফ্যাসীবাদী আওয়ামী লীগ সরকারের মাধ্যমে জনজীবনে স্বস্তি ফিরে এসেছে। তাই এই বিজয়কে টেকসই ও অর্থবহ জামায়াতের রুকনদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। তিনি দলমত বাছ- বিচার না করে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে সকল শ্রেণির মানুষ ও জামায়াতের জনশক্তিদের প্রতি আহবান জানান।
তিনি আজ সকাল ১০টায় রাজধানীর উত্তরায় পলওয়েল কমিউনিটি সেন্টারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের উত্তরা পূর্ব-পশ্চিম অঞ্চল আয়োজিত এক রুকন সম্মেলনের প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি,অঞ্চল পরিচালক ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। আরো বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান মূসা,কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ড.মাওলানা আবুল ইহসান এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য মুহাম্মদ জামাল উদ্দীন প্রমূখ।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জামায়াতে ইসলামীর ঘরের খুঁটি হচ্ছে রুকন। রুকন শব্দের অর্থ পিলার, খুঁটি ও স্তম্ভ। মূলত ভার বহন করতে সক্ষম এমন কিছুকেই রুকন বলা হয়। পবিত্র কালামে হাকিমে এই শব্দটি দুই স্থানে এসেছে। আর সাংগঠনিক পরিভাষায় এটি খুবই তাৎপর্যময় ও গুরুত্বপূর্ণ। মূলত, রুকনগণই সংগঠনের মূল শক্তি এবং বাইয়াতের কর্মী। তাই তারা যেমন মর্যাদাবান, সর্বপরি তাদের দায়িত্বও অনেক বেশি। তাই জামায়াতের শপথের কর্মীদের নিজেদের মধ্যে নেতৃত্বের গুণাবলী সৃষ্টিতে আত্মনিয়োগ করতে হবে। ইসলামী আন্দোলনে যোগ্যতার সাথে নেতৃত্ব দিতে নিজেদের যোগ্যতা বৃদ্ধির জন্য কুরআন,সুন্নাহ ও ইসলামী সাহিত্যের যথাযথ অনুশীলন করতে হবে। একটি সফল বিপ্লবের জন্য মানুষের ঘরে দাওয়াত সম্প্রসারণের কোন বিকল্প নেই। তিনি দেশ ও জাতির কল্যাণে রুকনদের যেকোন ত্যাগ স্বীকারে প্রস্তুত থাকার আহবান জানান।
তিনি বলেন,জামায়াত একটি আদর্শ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। এটি কোন গতানুগতিক রাজনৈতিক দল নয় বরং যোগ্য ও আদর্শবাদী মানুষ গড়ার আদর্শ বিশ্ববিদ্যালয়। সঙ্গত কারণেই জনগণের মধ্যে জামায়াতের গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে। বিরুদ্ধবাদী অপপ্রচারে যারা বিভ্রান্ত ছিলেন তারা তাদের ভুল বুঝতে পারছেন। সঙ্গত কারণেই সাম্প্রতিক সময়ে জামায়াত একটি পরাক্রমী ও অপ্রতিরোধ্য রাজনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়েছে। তাই আগামীর বাংলাদেশ ইসলামের বাংলাদেশ হবে- ইনশাআল্লাহ। তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে আগামী দিনে নিজেদের কর্মতৎপরতা বৃদ্ধির জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, জামায়াত আগামী দিনের জন্য অতিসম্ভবনাময় ও প্রত্যয়ী শক্তি। একই সাথে জামায়াতের গ্রহণযোগ্যতা ও জনপ্রিয়তা এখন ক্রমবর্ধমান। জামায়াতের প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ বেড়েছে; সৃষ্টি হচ্ছে গণজোয়ার। তাই এই ইতিবাচক ধারাকে কাজে লাগাতে জামায়াতের সকল স্তরের জনশক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে মাঠে-ময়দানে কাজ করতে হবে। আর দেশের স্বাধীনতা-স্বার্বভৌমত্ব রক্ষায় জামায়াতকেই পালন করতে হবে অগ্রসৈনিকের ভুমিকা। তিনি অর্জিত বিজয়কে কাজে লাগিয়ে দেশ ও জাতির কল্যাণে সামর্থ অনুযায়ি সকলকে যথাযথ ভ‚মিকা পালনের আহবান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, হাজারো প্রাণের বিনিময়ে বাংলাদেশে দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনে শহীদরা আমাদের জাতীয় বীর; গর্বিত ও শ্রেষ্ঠ সন্তান। তাদের রক্তের পথ ধরেই জাতির বিজয় সোপান রচিত হয়েছে। তাই জাতীয় স্বার্থেই শহীদদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে হবে।