ছাত্র-জনতার বিক্ষোভে শেখ হাসিনার পতনের পর পরিস্থিতি এখনো থমথমে। ঢাকাসহ সারা দেশেই বিভিন্ন থানায় হামলার আতঙ্ক বিরাজ করছে পুলিশের মধ্যে। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল অফিস-আদালত চালু করা হলেও সড়কে দেখা যায়নি কোনো ট্রাফিক পুলিশকে। তবে সড়কের শৃঙ্খলা ফেরাতে মাঠে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের। তারা বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে সড়কের গাড়ি নিয়ন্ত্রণ করেছেন।
গতকাল সকাল থেকেই রাজধানীর মিরপুর, বিজয় সরণি, জাহাঙ্গীর গেট,? ফার্মগেট, কাওরান বাজার, বাংলামোটর, শাহবাগ মোড়, কাকরাইল মোড়, রামপুরা বাজারসহ বিভিন্ন এলাকায় শিক্ষার্থীরা ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করেছেন। মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরে ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করা শিক্ষার্থী মো. শাহাবুদ্দীন বলেন, আমরা আমাদের দেশ স্বাধীন করে ফেলেছি। এখন এটা গোছানোর পালা। যেহেতু এখনো কোনো সরকার গঠন হয়নি, এই মুহূর্তে পুলিশ বা ট্রাফিক পুলিশও নেই। রাস্তায় যেন যান চলাচলে সমস্যা না হয় তাই আমরা শিক্ষার্থীরা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছি। মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরে হ্যান্ডমাইকে শিক্ষার্থীদের বলতে শোনা যায়, কোনো ভাঙচুর বা অগ্নিসংযোগ যাতে না ঘটে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।
এই দেশটা আমাদের, এই দেশের সম্পদ রক্ষা করার দায়িত্বও আমাদের। এই ব্যাপারে সকল শিক্ষার্থীদের সতর্ক ও সচেতন থাকার আহ্বান জানান তারা।
বিজয় সরণির মোড়ে কয়েকজন স্বেচ্ছাসেবী শিক্ষার্থীকে গাড়ির সিগন্যাল নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায়। সেখানে রফিকুল ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমি সকালে বাসায় ফেরার সময় দেখলাম এখানে কোনো ট্রাফিক পুলিশ নেই। এতে চতুর্দিকে এক ধরনের বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। তাৎক্ষণিক কয়েকজন মিলে চার রাস্তায় দায়িত্ব নিয়েছি। ট্রাফিক পুলিশ যে দায়িত্বটুকু পালন করে আমরা সেটুকু পালন করছি। সাইদুল ইসলাম নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, গাড়ির শৃঙ্খলা ফেরাতে আমরা দায়িত্ব পালন করছি। যতক্ষণ না ট্রাফিক পুলিশ এখানে আসবে ততক্ষণ আমরা দায়িত্ব পালন করবো। এ ছাড়া রাজধানীর অন্য গুরুত্বপূর্ণ সড়ক মোড়েও শিক্ষার্থীদের ট্রাফিক শৃঙ্খলা ফেরাতে কাজ করতে দেখা যায়। শিক্ষার্থীদের এই কাজের প্রশংসা করেছেন পথচারী যাত্রী ও সাধারণ মানুষ। পরিবহন চালকরাও তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তারা বলছেন, শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে দেশের শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন করেছেন। তাদের চেষ্টায় দেশের আগামীও বদলে যাবে। ফার্মগেটে দায়িত্ব পালন করা শিক্ষার্থীরা মোটরসাইকেল আরোহীদের হেলমেট পরিধানের বিষয়ে উৎসাহিত করেন। যারা হেলমেট ছাড়া বের হন তাদের সতর্ক করে দেয়া হয়।