চট্টগ্রামের সংঘর্ষে নিহতদের মধ্যে ৩ জনই ছিলেন গুলিবিদ্ধ। তাদের ৩ জনই যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছেন। আহতদের অধিকাংশও ছিলেন গুলিবিদ্ধ। সংঘর্ষের সময় বেশ কয়েকজনকে প্রকাশ্যে গুলি করতে দেখা যায়। তবে সেখানে সাংবাদিকদের ফুটেজ নিতে নিষেধ করেন তারা। এরমধ্যে একজনের অস্ত্র হাতে দৌড়াদৌড়ি করার ভিডিও এসেছে মানবজমিনের হাতে। ভিডিওতে দেখা যায়, ধূসর রঙের পোলো-টিশার্ট পরা এক যুবক পিস্তল হাতে পায়চারি করছেন। এ সময় আশপাশের মানুষকে শাসাতে দেখা যায় তাকে। আবার অন্য একজনের কাছ থেকে গুলি নিয়ে পিস্তলেও ভরতে দেখা যায় তাকে। তবে মাথায় হেলমেট পরায় ওই যুবকের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া আরেকটা ছবিতে আরও দুজনকে প্রকাশ্যে গুলি করতে দেখা যায়। এদের মধ্যে একজন নগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের পদধারী নেতা মোহাম্মদ দেলোয়ার। তিনি কেন্দ্রীয় যুবলীগের সাবেক নেতা হেলাল আকবরের অনুসারী বলে পরিচিত।
জানা যায়, শিক্ষার্থীরা বিকেল সাড়ে ৩টায় নগরের ষোলশহর স্টেশনে বিক্ষোভ করার কর্মসূচি দিয়েছিল। তবে দুপুর ২টার দিকে নগর ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সেক্রেটারি নুরুল আজিম রনির নেতৃত্বে সেখানে যুবলীগের কর্মীরা অবস্থান নেন। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা বিকেল ৩টার দিকে পার্শ্ববর্তী মুরাদপুর মোড়ে জড়ো হতে থাকলে সেখানে হামলা চালায় যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। সেখানে তারা অস্ত্র হাতে গুলিবর্ষণের পাশাপাশি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এই ঘটনায়ও নেতৃত্বে ছিলেন নুরুল আজিম রনি। এই এলাকায় সাবেক এই ছাত্রলীগ নেতার প্রভাব রয়েছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, মূলত রনির নেতৃত্বেই শুরুতে নগরের মুরাদপুরে শিক্ষার্থীদের উপর হামলা হয়। পরে ছড়িয়ে পড়ে সংঘর্ষ। এক পর্যায়ে কয়েক হাজার শিক্ষার্থীর ধাওয়ায় পিছু হটে যুবলীগ ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সংঘর্ষের যুবলীগের নেতারা প্রকাশ্যে গুলি চালিয়েছেন। তাদের গুলিতেই ৩ জন নিহত হয়েছেন।
এদিকে চট্টগ্রামের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ৩ প্লাটুন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মোতায়েন করা হয়েছে। মঙ্গলবার (১৬ জুলাই) বিকেলে তাদের মোতায়েন করা হয়। বিজিবি চট্টগ্রাম-৮ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল শাহেদ মিনহাজ ছিদ্দিকী বলেন, চট্টগ্রামে ৩ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে। ইতিমধ্যে বিজিবি গাড়ি নিয়ে নগরের মুরাদপুর, অক্সিজেন ও পাহাড়তলী এলাকায় টহল দিচ্ছে।