ডিএনসিসির উপ-নির্বাচনে জামায়াত মনোনীত মেয়র প্রার্থী, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের নির্বাচনী তৎপরতা ক্রমেই জোরদার হচ্ছে। তার নির্বাচনী প্রচারাভিযানে সাধারণ নগরবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি বেশ চোখে পরার মত। যা মেয়র প্রার্থী সেলিম উদ্দিনের পক্ষে নগরবাসীর মধ্যে বাড়তি উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। তিনি তার নির্বাচনী প্রচারাভিযানের অংশ হিসেবেই নগরীর বিভিন্নস্থানে গণসংযোগ, মতবিনিময় সভা, নির্বাচনী সমাবেশ ও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশ নিচেছন। তার নির্বাচনী কর্মতৎপরতার অংশ হিসেবেই তিনি আজ মোহাম্মদপুর খানার জনকল্যাণ সমিতি আয়োজিত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে মতবিনিময় সভায় মিলিত হন। মতবিনিময়কালে তিনি নগরজীবনের সমস্যা ও সমাধান বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য মনোযোগ সহকারে শোনেন। নগরবাসী তাকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করলে তিনি ডিএনসিসির সকল সমস্যার সমাধান এবং সম্ভবনাগুলো যথাযথভাবে কাজে লাগানোর প্রতিশ্রুতি দেন। মতবিনিময় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন, জিয়াউল হাসান, এ্যাডভোকেট আজহার মুন্সী, এনামুল হক, নূরুল ইসলাম ও আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমূখ।
মতবিনিময় সভায় মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, ডিএনসিসিকে সুখী, সমৃদ্ধ, আদর্শ ও শান্তির নগরী হিসেবে গড়ে তুলতে হলে নাগরিকদরে জীবনমান বাড়াতে হবে। বাড়াতে হবে গণমানুষের ক্রয়ক্ষমতাও। নাগরিকদের অর্থনৈতিকভাবে সাবলম্বী ও কর্মক্ষম করে তুলতে না পারলেও কোন উন্নয়নই ফলপ্রসূ ও টেকসই হবে না। তাই এই মহতি কাজকে সর্বাঙ্গ সুন্দর করতে হলে ডিএনসিসির নাগরিকদের উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে। মূলত নগরীর সরকারি হাসপাতালগুলোতে স্বাস্থ্যসেবার মান মোটেই কাঙ্খিত নয়। তাই নগরবাসীকে আধুনিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করতে হলে ডিএনসিসির আওয়ায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। একই সাথে সেবা কেন্দ্রগুলোর আধুনিক সেবার মানও নিশ্চিত করাও জরুরি। মাতৃত্বকালীন স্বাস্থ্যসেবার বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে। জনগণ তাকে মেয়র নির্বাচিত করলে ডিএনসিসির স্বাস্থ্যকর্মীর মাধ্যমে সন্তানসম্ভবা মা’দের তালিকা প্রস্তুত করে উন্নত স্বাস্থ্যসেবা, প্রয়োজনে মানসম্মপন্ন ও অপাদেয় খাবার সরবরাহ এবং দরিদ্র মায়েদের নগর প্রশাসনের খরচে নিরাপদ মাতৃত্ব নিশ্চিত করা হবে নিশ্চয়তা দেন।
তিনি বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ঢাকা শহরের আতঙ্কের নাম এডিস মশাবাহিত চিকুনগুনিয়া রোগ। মূলত এটি এখন ঢাকার সবচেয়ে বড় জনস্বাস্থ্য সমস্যা। ডিএসিসিও এই আওতার বাইরে নয়। যেহেতু মশা থেকেই রোগের উৎপত্তি তাই মশক নিধনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু অতীত ও বর্তমানের নগর প্রশাসন এসব বিষয়ে কার্যকর কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। ঢাকায় প্রতি বছরই দেখা যাচ্ছে এডিস মশা বাহিত আর এক রোগ ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ। ডিএনসিসির আরেক উপদ্রবের নাম ডায়েরিয়া। নগরীতে বর্ষার শুরুতে এবং শেষে ডায়েরিয়ার প্রকোপ থাকে। বর্ষার সাথে সাথে এডিস মশার বিস্তারের কারণে ডেঙ্গুর প্রদূর্ভাবও লক্ষ্য করা যায়। এছাড়া খাদ্য ও পানিবাহিত রোগ পেটের পীড়া, জন্ডিস বা টাইফয়েড সেগুলোও রয়েছে। তাই ডিএনসিসিকে রোগমুক্ত করে নগর জীবনে স্বস্তি ফিরে আনতে হলে এসব প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ব্যুরো অফ স্ট্যাটিসটিকস ও ইউনিসেফের তথ্যমতে ঢাকায় সরবরাহকৃত পানির দুই তৃতীয়াং মলবাহিত জীবাণু পাওয়া যায়। এটি ঢাকায় জনস্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে বড় ঝুঁকির কারণ। নগরীতে বছরে দু’বার ডায়রিয়ার প্রাদূর্ভাব দেখা দেয়। মূলত প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যার একটা অন্যতম উপাদান হচ্ছে পানি, পয়ঃনিষ্কাশন এবং পরিচ্ছন্নতা। পানি সরবরাহের দিক থেকে আমরা অনেকটা এগোলেও ভোক্তা পর্যায়ে যে পানি পৌঁছায় তার মান খুবই খারাপ। এর বড় কারণ নগরীর স্যানিটেশন ব্যবস্থার মানহীনতা। তাই একটু বৃষ্টি হলেই সুয়ারেজ, ড্রেন আর পাইপের পানি সব একাকার হয়ে যায়। নিয়মিত খোঁড়াাখুঁড়িও এই মিশ্রণের জন্য দায়ি । ঢাকার নিম্নবিত্তদের কাছে একেবারেই পৌঁছায়নি স্যানিটেশন ব্যবস্থা। তিনি নির্বাচিত হলে নগরবাসীর জন্য সুপেয় পানীয় জলের ব্যবস্থা, মানসম্পন্ন স্যানিটেশন ও পানি নিষ্কাষণের সর্বাধুনিক ব্যবস্থা নিশ্চিত করে নগরস্বাস্থ্য উন্নয়নে যথাযথ ভূমিকা পালন করবেন বলে অঙ্গীকার করেন।