কোটা পদ্ধতি বাতিলের দাবিতে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের (ববি) ঢাকা-পটুয়াখালী মহাসড়ক অবরোধ করে অবস্থানকালে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়েছে ছাত্রলীগ পরিচয়দানকারী একদল শিক্ষার্থী। গতকাল বিকাল ৬টার দিকে ববি’র ভিসি গেটের সামনের মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটেছে। এরপর পণ্ড হয়ে যায় আন্দোলন-অবরোধ। দুপুর ১২টা ৫০ মিনিট থেকে মহাসড়কে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। ছাত্রলীগের হামলায় সাধারণ শিক্ষার্থী নাইমুল ইসলাম, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় প্রেস ক্লাবের সদস্য ও সংবাদকর্মী আবু ওবায়দাসহ ৩ জন আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থলে মোতায়েন রয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। অবরোধের প্রভাবে মহাসড়কের দু’পাশে অন্তত ৫ কিলোমিটার মহাসড়ক জুড়ে যানবাহন আটকে পড়ে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা।
একাধিক শিক্ষার্থী জানান, গতকাল বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মহাসড়ক ছাড়তে ঘটনাস্থলে যান ববি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া ও প্রক্টর ড. মো. আব্দুল কাইয়ুম। তারা আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন। তখন শিক্ষার্থীরা অবরোধ প্রত্যাহারে রাজি না হয়ে জানান, দেশব্যাপী চলমান থাকা এ আন্দোলন একসঙ্গে প্রত্যাহার হবে।
এরপর উপাচার্য ও প্রক্টর চলে যান। কিছুক্ষণ পর অবরোধ ভেঙে ছাত্রলীগের এক নেতা মোটরসাইকেল চালিয়ে যেতে চেষ্টা করে। এসময় তাকে বাধা দেয় শিক্ষার্থীরা। এমন তুচ্ছ ঘটনার জের ধরে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালিয়ে চড়-থাপ্পড় দেয় ববি ছাত্রলীগ নেতা আবুল খায়ের আরাফাত ও আল সামাদ শান্ত। তাদের সঙ্গে আরও ১০-১৫ জন ছিল। এসময় হামলার ভিডিও ধারণের অভিযোগে গণমাধ্যমকর্মী আবু ওবায়দার ওপর হামলা চালানো হয় এবং মুঠোফোন ছিনিয়ে নেয়া হয়। পরে শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে মহাসড়ক থেকে উঠে আসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর হামলাকারীদের মদদ দিয়েছে বলে অভিযোগ করে তারা।
হামলায় আহত রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী আরিফুল ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হামলার জন্য উস্কে দেন প্রক্টর ড. মো. আব্দুল কাইয়ুম। তাদের হামলা মারধোরের মুখে মহাসড়ক ছেড়ে উঠে আসতে বাধ্য হই আমরা। এরপর মহাসড়কে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। এ বিষয়ে প্রক্টর ড. মো. আব্দুল কাইয়ুম বলেন, শিক্ষার্থীরা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা মহাসড়ক ছাড়তে রাজি না হওয়ায় চলে এসেছি। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ উঠেছে তা মিথ্যা। এ বিষয়ে কথা বলতে ছাত্রলীগ পরিচয়দানকারী নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।