রাসূল সা. এর স্বীকৃত জ্ঞানের শহরের দরোজা হযরত আলী রা. বলেছেন, “নিজেকে কখনো অন্যের সাথে তুলনা করবে না। যদি তুমি তা করো, তাহলে তুমিই বরং নিজেকে অপমান করলে।” ইসলাম আমাদেরকে অন্যের সাথে তুলনা করার মানসিকতা পরিহার করার আহ্বান জানায়। রাসূল সা. এর দেখানো পথ ধরে আমাদের সাহাবিগণ, নবি পরিবারের সদস্যগণ ও পরবর্তী সময়ের সালফে সালোহীনগণ সচেতনভাবে এ চর্চাটি করে গিয়েছেন। অপর কোনো মানুষের জাগতিক প্রাপ্ত বা সফলতা কখনোই তাদের বিচলিত করতো না। এ কারণে তাদের জীবনে অস্বস্তি ছিল না, আফসোস ছিল না, দুর্নীতি করার কোনো প্রয়োজনও তাদের পড়েনি।
এর বিপরীতে আমরা এখন অস্থির একটি সময় পার করছি। কোনো কিছুই যেভাবে আমাদের সন্তুষ্ট করতে পারছে না। আমরা কেবল অতৃপ্তই রয়ে যাচ্ছি- এর কারণ হচ্ছে আমরা আমাদের যা আছে তাতে সুখী নই। আমরা অপরের দিকে তাকিয়ে আছি। তাদের কী আছে বা কী নেই-তা নিয়ে আমরা পেরেশান থাকছি। পক্ষান্তরে নিজেরা যা পাচ্ছি, অথবা আমাদের কাছে যা আছে-সেগুলোকে আমরা প্রাপ্য হিসেবেই ধরে নিচ্ছি। ফলে, প্রাপ্ত বিষয়গুলো আমাদেরকে সন্তুষ্ট করতে পারছে না। অপরের সম্পদের সাথে নিজেদের তুলনা কিংবা অপরের সাথে ক্রমাগত প্রতিযোগিতা করার মানসিকতা আমাদের জীবন থেকে তৃপ্তি ও সুখকে ছিনিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
আল্লাহ তাআলা মানুষকে খুবই সুন্দর করে এবং ভারসাম্যপূর্ণ পন্থায় সৃষ্টি করেছেন। প্রতিটি মানুষকে আল্লাহ আলাদা আলাদা মেধা, প্রতিভা ও যোগ্যতা দিয়েছেন। মানুষ অপরের সাথে নিজেকে তুলনা করতে পারে কিন্তু তাই বলে কেউ চাইলেই অপরের মতো হতে পারে না। অপরের মতো করে জীবনকে সাজাতে পারে না। সবার শৈশব যেমন এক হয় না, তেমনি কৈশোরকালও একরকম হয় না। আবার কারো দাম্পত্য জীবনের সাথে অপরের দাম্পত্য জীবনে মিল থাকে না। আবার সবার মন মানসিকতা ও একরকম হয় না। এই দুনিয়ায় সঠিক পথ দেখানোর লোকের খুবই অভাব তবে ভুল ধরতে সকলেই যেন সিদ্ধহস্ত।
আমাদের মধ্যে যত ধরনের ঈর্ষা, হিংসা, রাগ, কষ্ট এবং দুঃখসহ-যত ধরনের আবেগ রয়েছে তার মূলে রয়েছে নিজেকে অন্যের সাথে তুলনা করার মানসিকতা। হালেল অস্থিরতার ফাঁদে পড়ে এই মানসিকতাগুলো ক্রমাগতভাবে নিজেদের মানসিক সমস্যায় পরিণত হয়ে যাচ্ছে। আর এ সমস্যা থেকেই আমাদের মধ্যে নানা ধরনের ক্ষতিকর আবেগের জন্ম হয়। মানুষের মনে এই আবেগগুলো যখনই আসে তখন সে নিজেকে অসুখী মনে করতে শুরু করে। তুলনা করার এই ব্যাপারটি আমাদের মানসিক শান্তিও কেড়ে নেয় নিমেষেই।
এ বিষয়গুলো নিয়ে এত কথা লেখার কারণ হলো, সমাজে ভয়াবহভাবে দুর্নীতি ও অসততার পরিমাণ বাড়ছে। প্রতিদিন খবরের পাতা খুললেই শুধু অবৈধ সম্পদের মালিক হওয়ার কিংবা দেশ থেকে বিদেশে অবৈধ মুদ্রা পাচার করার সংবাদ চোখে পড়ে। রাজনীতিবীদ, আমলা, জনপ্রতিনিধি, বিভিন্ন পেশার মানুষ কেউই যেন দুর্নীতির এ রাহুগ্রাস থেকে মুক্ত নয়। আমরা এতদিন রাজনীতিবীদদের অসততার কথা জেনেছি আর এখন জানতে পারছি, পুরো সিস্টেমটাই কীভাবে কলূষিত হয়ে আছে। নেতিবাচক এসব খবর দেখতে দেখতে আমরা রীতিমতো হাঁপিয়ে উঠছি। একদিকে মানুষ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনতেই হিমশিম খাচ্ছে। প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোও অনেকে জোগাড় করতে পারছে না। জীবনযাত্রার মান নেমে গেছে আশংকাজনকভাবে। অথচ একই সমাজেই এমনও মানুষ রয়ে গিয়েছেন যারা হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক, যারা দেশে বিদেশে নির্বিকারভাবে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
অনৈতিকতা এতটা প্রকট হয়ে ওঠার একটি বড়ো কারণ হলো, মানুষ তার নিজস্ব অবস্থানে সন্তুষ্ট নয়। বেশিরভাগ মানুষ তার উপার্জন, জীবন যাপন, সন্তানদের পড়াশুনা কোনো কিছু নিয়েই তৃপ্ত নয়। তাই তার মধ্যে নিজের বর্তমান অবস্থা থেকে বেরিয়ে যাওয়ার একটি অদম্য বাসনা কাজ করে। এই বাসনা তার হিতাহিত জ্ঞানকে দুর্বল করে দেয়। অপরের অবস্থান, প্রাপ্তি ও অর্জন আমাদেরকে পেরেশান করে তোলে। তার কেন আছে আর আমার কেন নেই-এ প্রশ্ন, এ ভাবনা আমাদেরকে মানসিকভাবে অসুস্থ করে ফেলছে। আমরা নিজেরাই শুধু এ সমস্যায় আক্রান্ত তা কিন্তু নয়। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকেও আমরা অপরের সাথে তুলনা করার বা অন্যের সাথে প্রতিযোগিতা করার ব্যধিতে জর্জরিত করে ফেলেছি।
আমাদের পুরো জগতটা আমাদের সন্তানদেরকে ঘিরেই। প্রতিটি পিতামাতা নিজেদের সন্তানদের সফলতা প্রত্যাশা করে। সন্তানের ভালো করতে গিয়ে অনেক বাবা-মা সন্তানকে অতিরিক্ত বকাঝকা করে। অন্য কারো বাচ্চার সাথেও তুলনা করে। এটি আমাদের সমাজের খুবই প্রচলিত একটি চিত্র। এমনকী আত্মীয় স্বজনের সাথে দেখা সাক্ষাত বা পারিবারিক কোনো আয়োজনেও মূল ইস্যুর চেয়ে পারস্পরিক তুলনা করাটাই মূখ্য হয়ে যায়।
এভাবে আমরা না চাইতেই আমাদের সন্তানদের ক্ষতি করছি। তাদের লোভী বানিয়ে ফেলছি। আবার এই আমরাই সন্তানদেরকে চক্ষু শীতলকারী বানানোর জন্য আল্লাহর কাছে দোয়াও কামনা করছি। অথচ এই বৈপরীত্য রয়েছে আমাদেও গোটা জীবন জুড়েই। আমরা আল্লাহর কাছে দোয়া করার সময় সন্তানকে যেভাবে চাই, বাস্তবিক জীবনের চাহিদার সাথে তা অনেকটাই বেমানান।
তাই সন্তানদেরকে সুপথে রাখার জন্য, নিলোর্ভ হিসেবে তৈরি করার জন্য সবার আগে আমাদের নিজেদের চাওয়ার মাত্রাকে সংযত করতে হবে। সন্তানের মেধা, প্রতিভা, যোগ্যতা, আগ্রহ ও শেখার সক্ষমতাকে বিবেচনায় নিয়ে আমাদের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সন্তানদেরকে তাদের মতো করে ভালো করার সময় ও সুযোগ দিতে হবে। শিশুদের মনস্তত্ব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাচ্চাদের সাথে চিৎকার চেঁচামেচি, অকারণ বেশি বকাঝকা, অপমানজনক কথা বলা, মানুষের সামনে হেয় বা তিরস্কার করার প্রভাবে কেবল যে নেতিবাচক প্রতিক্রিয়াই হয় তাই নয় বরং এ ধরনের পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে যেসব শিশুরা যায় পরবর্তীতে তারা ভীষণরকম আক্রমণাত্মক ও জেদি হয়ে ওঠে।
সন্তানদের আত্মবিশ্বাস কমে যায়, অস্থিরতা দেখা দেয়, নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে। শৈশবের এ সংকটগুলো তাদের বাকি জীবন জুড়েই অব্যহত থাকে। অর্থাৎ আমরা সন্তানদের ভবিষ্যত ভালো করতে গিয়ে উল্টো তাদের ভবিষ্যতকে আরো অনিশ্চিত করে ফেলছি।
সন্তানদেরকে ভালোভাবে গড়ে তোলার জন্য ওদেরকে সময় দেওয়ার কোনো বিকল্প নেই। অনেকেই আছেন, সারাদিন অন্য কাজ করে সন্তানদেরকে কোয়ালিটি টাইম দেওয়ার কথা বলে। কিন্তু হিসেব করে দেখা গেছে, তথাকথিত এই কোয়ালিটি টাইমেও সন্তানেরা অগ্রাধিকার পায় না। সবার আগে সন্তানদের ক্ষেত্রে আমাদের মানসিকতা সঠিক করতে হবে। সন্তানকে হেয় না করে বরং তার প্রশংসা করতে হবে। বাচ্চারা একটু বেশিই প্রশংসা পছন্দ করে। তুলনা না করে বরং বাচ্চাদের আত্মবিশ^াসী করে গড়ে তোলার চেষ্টা করুন। রাসূল সা. এর সীরাতের ঘটনাগুলো সন্তানদেরকে বেশি বেশি শোনানো দরকার। সাহাবাদের ত্যাগের কাহিনীগুলোও তাদের জানানো প্রয়োজন।
আমাদের নেককার পূর্বসরীদের সাধাসিধে জীবন যাপন সম্পর্কেও তাদেরকে ধারণা দেওয়া উচিত। সবচেয়ে বড়ো কথা, পিতামাতা হিসেবে আমাদের প্রধান একটি করনীয় হলো সন্তানদের জন্য আন্তরিকভাবে দুআ করা। দোয়ার কোন বিকল্প নেই। মা বাবার দুয়া সন্তানের জন্য অনেক বড় নেয়ামত। এই নেয়ামত থেকে আমাদের সন্তানেরা যেন বঞ্চিত না হয়।
আমাদের পরিবারগুলোতে তুলনা করার মানসিকতা বাড়ছে তার পেছনে অভিভাবকদের দায়ও কম নয়। একজন অভিভাবক কোন সন্তানকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন, কোন সন্তানের বেশি প্রশংসা করছেন-তা নিয়ে তাদেরও ভাবা প্রয়োজন। ধরা যাক, একটি সন্তান দেশে আছে, একটি চাকরি করছে। পিতামাতার সাথে আছে। তাদেরকে দেখভাল করছে। এখন বাবা-মা যদি এ সন্তানের সামনে অন্য কোনো অর্থশালী সন্তান বা বিদেশে আছেন-এমন কোনো সন্তানের প্রশংসা করে তার একটি প্রতিক্রিয়া কিন্তু পরিবারের অন্যান্য সন্তানের মধ্যেও হয়। আরো স্পষ্ট করে বললে, বাবা-মা যদি একটি সন্তানের পিতামাতার সেবা, নামায বা সাধাসিধে জীবনের তুলনায় অর্থবিত্তকে বেশি মর্যাদা দেয়-তার প্রতিক্রিয়া পরিবারের অন্যান্য সদস্য এমনকী বাচ্চাদের ওপরও পড়ে। যে সন্তানের বাবা হয়তো দেশে আছেন, তার সন্তানেরা তখন হীণমন্য হয়ে বড়ো হয়। তাদেরও ইচ্ছে হয়, পড়ালেখায় একটু অগ্রসর হওয়া মাত্রই দেশের বাইরে চলে যাওয়ার। কেননা তাদের মধ্যে বদ্ধমূল ধারণা হয়ে যায় যে, দূরে থেকে টাকা পয়সা দিলেই বাবা-মা কিংবা আত্মীয় স্বজনের মূল্যায়ন পাওয়া যায়।
যদি কোনো বাবা-মা তার কর্মজীবী মেয়ের বা পুত্রবধুর প্রশংসা করে এবং অপর মেয়ে বা পুত্রবধু যে গৃহিনী হিসেবে কাজ করছেন-তাকে অবমুল্যায়ন করেন, তাহলেও পরিবারে বিশৃংখলা হয়। প্রথমত, গৃহিনী মেয়েটি নিজেকে তখন তুচ্ছ বলে ভাবতে শুরু করে। সংসারধর্মকে তখন তার কাছে নিতান্তই একটি গতানুগতিক কাজ বলে মনে হয়।
দেখা যায়, বাবা-মা পারিবারিক কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কর্মজীবী নারী সদস্যের মতামতকে গুরুত্ব দিচ্ছে, অথচ গৃহিনী মেয়ে বা পুত্রবধুর মতামতকে আমলে নিচ্ছে না, তাদেরকে অযোগ্য বলে ভাবছে-এমনটা ঘটলেও পরিবারে ফাটল ধরে। সাম্প্রতিক সময়ে এই ধরনের দৃষ্টান্ত আমাদের পরিবারগুলোতে অহরহ দেখা যাচ্ছে। আর পিছিয়ে থাকা বা অবমুল্যায়িত অবস্থান থেকেই জিদ করে হুট করে অর্থশালী হওয়ার মানসিকতার জন্ম হয়।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আমাদের জন্য আরেকটি বড়ো সংকট হয়ে দেখা দিয়েছে। যারা একটু ভালো আছেন, অথবা যারা সেলিব্রেটি অথবা যারা ভিডিও ভøগ তৈরি করেন এমনকী আমাদের প্রবাসী পরিবারের সদস্য বা আত্মীয় স্বজন যখন তাদের জীবনের কোনো অর্জন, বিলাসিতা, দামি গাড়ি বা দামি বাড়ির ছবি বা ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেন তখনও এর একটি নেতিবাচক প্রভাব অন্যদের ওপরও পড়ে। যদিও ইসলাম আমাদেরকে আমার তুলনায় দুর্বলদের দিকে তাকাতে বলেছে, সুবিধাজনক অবস্থানে থাকা মানুষজনের সাথে তুলনা করতে নিরুৎসাহিত করেছে; তারপরও আমরা বেশিরভাগই এ অনুশীলনটি পারছি না। অপরের দেখানো সুখ, স্বস্তি আমাদের জীবন থেকে স্বস্তি কেড়ে নিচ্ছে।
হুট করে বা অল্প সময়ে বড়ো লোক হওয়ার সংখ্যা সমাজে বাড়ছে। যে মানুষগুলো বছর কয়েক আগেও খুবই নাজুক অবস্থায় ছিল, রাজনীতিসহ বিভিন্ন ধরনের ট্রেন্ড অনুসরণ করার বদৌলতে তারা এখন সমাজের বিত্তশালীদের কাতারে চলে আসছে। অথচ তাদের মানসিকতা সমৃদ্ধ হচ্ছে না।
তাদের লোক দেখানো বিলাসী জীবন যাপনের চিত্র সমাজের নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষগুলোর মাঝে এক ধরনের অস্থিরতা তৈরি করছে। কে কীভাবে টাকা উপার্জন করলো, কোনটা হালাল আর কোনটা হারাম-এগুলো এখন আর বিবেচ্য থাকছে না। বরং যে কোনো উপায়েই সমাজে অর্থশালী হওয়াটা অনেকের মূল উদ্দেশ্যে পরিণত হয়েছে।
মূলত এই ধরনের অনুচিত মানসিকতার কারণেই সমাজে ও রাষ্ট্রে দুর্নীতি ও অনাচারের মাত্রা এতটা বেড়েছে। দুর্নীতি আর অসদাচরণ সাম্প্রতিক সময়ে যেভাবে আমাদের সামনে এসেছে, এতটা ব্যাপকভাবে আগে কখনো আসেনি। অনেকে হয়তো এ জন্য দেশের বিদ্যমান রাজনৈতিক অবস্থাকেই দায়ী করবেন। তবে আমার মনে হয়, পরিকল্পিতভাবে আমাদের নৈতিকতা ও বিবেকবোধকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। পাঠ্যপুস্তকে বাচ্চাদের নৈতিকতা শেখানোর যে কয়েকটি বিষয় ছিল, যে সব গল্প কবিতা ছিল-সবটাই বাতিল করা হয়েছে। ধর্মকে অপ্রয়োজনীয় একটি বিষয়ে পরিণত করা হয়েছে। রাষ্ট্রীয়ভাবে বিজাতীয় ও ধর্মহীন সংস্কৃতিতে পৃষ্ঠপোষকতা দেওয়া হয়েছে।
এ ধরনের অসুস্থ পরিস্থিতি চলতে থাকলে দুর্নীতি শুধু ছাগলকান্ডে, বা বিদেশী ব্যাংকে টাকা জমা রাখার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না; বরং বিরাট আকারের দৈত্য হয়ে সমাজকেই গিলে ফেলতে শুরু করবে। আমরা এরই মধ্যে এরকমই একটি শংকাজনক পরিস্থিতিতে পড়ে গিয়েছি। যদি সরকার, সমাজনেতা, অভিভাবক ও বিভিন্ন পেশার মানুষ এ বিষয়গুলো নিয়ে সচেতন না হয়, এবং নিজেদের অবস্থান থেকে প্রতিরোধ করার চেষ্টা না করি, তাহলে কেবল পরবর্তী প্রজন্ম নয়, হয়তো আমাদের দেশের অস্তিত্বই একটি সময়ে বিলীন হয়ে যাবে।
নীতি নির্ধারণী পর্যায়ে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ঘন ঘন সিদ্ধান্ত নেওয়ার কারণে এবং অসৎ উদ্দেশ্যে আইন প্রণয়নের কারণে প্রকৃত দুর্নীতিবাজরা বিচারের আওতায় আসে না। অধিকাংশ বিতর্কিত ও দুর্নীতিবাজের নাম সন্দেহজনক তালিকায় আসার আগেই তারা কীভাবে যেন খবর পেয়ে যায় এবং দেশ ছেড়ে পালিয়েও যায়। ফলে দুর্নীতিবাজরা আরো দুর্নীতি করতে উৎসাহিত হয়। ব্যক্তি, সমাজ শুধু নয় গোটা সিস্টেমেই পরিবর্তন নিয়ে আসা ছাড়া এই পতনোম্মুখ পরিস্থিতি থেকে আমাদের মুক্তি মিলবে না।