ঈদ সমাগত হলেও কোরবানির পশুর হাট এখনো জমেনি। গতকাল থেকে ক্রেতা হাটে এলেও বিক্রি কম। দরদাম চলছে বলে জানিয়েছেন বিক্রতারা। তবে পশুর দরে মধ্যবিত্তের নাভিশ^াস উঠছে। কারণ এখানো সর্বনি¤œ যে দামে পশু বিক্রি হচ্ছে তা মধ্যবিত্তের নাগালের বাইরে।
ইজারাদারদের ভাষ্য, প্রতি বছর এমন সময়ে বাজারে ক্রেতার ঢল নামলেও এবার তার ব্যতিক্রম। বিক্রেতারা গতকাল থেকে হাট জমার প্রত্যাশা করলেও তা প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়নি। হাটে পর্যপ্ত পশু থাকলেও এখনো ক্রেতা কম থাকায় গত দুই দিনের চেয়ে পশুর দাম স্থিতিশীল রয়েছে। শেষ পর্যন্ত আরো দাম কমবে বলে তাদের ধারণা।
গতকাল একাধিক হাটে দেখা যায় বিক্রতারা গরু নিয়ে ক্রেতার অপেক্ষায় আছেন। কিন্তু যে পরিমাণ ক্রেতার দেখা মিলেছে তা প্রত্যাশা অনুযায়ী না থাকায় পশু বিক্রি একেবারেই কম হচ্ছে। বিক্রেতারা জানান, প্রতি বছর এমন সময়ে বাজার জমজমাট থাকে। এবারো সে প্রত্যাশা থাকালেও কাজ হয়নি। ক্রেতা নেই বললেই চলে। যারা আসছেন তারা লাখ টাকার কম মূল্যের গরু খুঁজছেন। ফলে বাধ্য হয়ে বিক্রেতারাও দাম কমাচ্ছেন।
প্রতিটি হাটেই বিভিন্ন আকারের ও রঙের গরু এসেছে। তবে মাঝারি আকারের গরুর সংখ্যাটা বেশি। গত কয়েক দিন লাখ টাকার কম দাম না হাঁকলেও গতকাল ব্যাপারীদের সর্বনি¤œ ৭৫ হাজার থেকে এক লাখ টাকা এবং সর্বোচ্চ পাঁচ লাখ থেকে সাত লাখ টাকা পর্যন্ত দাম হাঁকাতে দেখা গেছে। অপর দিকে খাসির দাম আকারভেদে সর্বনি¤œ ১০-১৫ হাজার, আর সর্বোচ্চ জাত ও আকারভেদে ৩০-৬০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাঁকা হচ্ছে।
এরই মধ্যে ক্রেতার সংখ্যা কম হওয়ায় অনেকে হতাশা প্রকাশ করে বলছেন, ছুটির দিনের সকালে ঘুমিয়ে কিংবা বিশ্রাম নিয়ে সময় কাটান শহরের মানুষ। জুমার নামাজের পর থেকে বেচাবিক্রি শুরু হবে। তবে কিছুটা ভয় রয়েছে বৃষ্টি নিয়ে। বিক্রেতারা আশঙ্কা করছেন, বৃষ্টি হলেই ভাটা পড়বে গরু বিক্রিতে। বৃষ্টির মধ্যে পানি ও কাদা পেরিয়ে হাটের ভেতরের দিকে আসতে চান না ক্রেতারা।
আর একাধিক ক্রেতা জানান, তারা গরু কিনতে এলেও বাজেট লাখ টাকার মধ্যে। তাই বাজার ঘুরে গরু দেখছেন। এত দিন দাম না কমলেও এখন দাম কমছে মন্তব্য করে তারা বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত পশু রয়েছে। কিন্তু ক্রেতা কম থাকায় দামও কমছে।
ক্রেতা কম থাকার বিষয়ে তারা বলেন, মানুষজন এখন হাটে আসতে আসতে চায় না। আগে ভাগেই ফার্ম থেকে অনেকে গরু কিনে নিচ্ছেন। যার প্রভাবেই এখানে ক্রেতার অভাব দেখা দিয়েছে। যারা আসছেন, তারাও ছোট গরুর দিকে নজর দিচ্ছেন।
অন্য দিকে বিক্রেতাদের ভাষ্য, গতকালের বৃষ্টিতে অনেক কষ্ট হয়েছে। রাত পর্যন্ত গরু নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়েছে। বড়ো গরুর ক্রেতা কম। মাঝারি কিংবা ছোট সাইজের গরুর চাহিদা বেশি। তাই যারা বড় গরু নিয়ে এসেছেন তাদের দুশ্চিন্তা বেশি।
একাধিক ইজারাদার জানান, এত দিন ক্রেতার দেখা না মিললেও গতকাল থেকে ক্রেতা আসছেন। তবে প্রত্যাশার চেয়ে কম। কারণ প্রথম দিন যে পরিমাণ পশু বিক্রি হয়েছে তা অন্য বছরের তুলনায় হতাশাজনক। তাদের ভাষ্য, সাধারণত কোবানির পশুর বাজার শুরু হয় ঈদের দুই দিন আগে। সে হিসাবে শনিবার থেকে বাজারে ক্রেতার দেখা মিলবে। এরপর টানা দুই দিন বাজারে কেনাবেচা চলবে।
পশুর হাটে বড়ো গরুর বাইরে দাম চড়া হলো উট ও দুম্বার। হাটে এবার তোলা হয়েছে ভারতীয় উট। যেগুলোর দাম হাঁকা হচ্ছে ২০ লাখ। আর মরুর দুম্বার দাম চাওয়া হচ্ছে তিন লাখেরও বেশি। অন্য দিকে গরুর পরই ছাগল ও খাসির চাহিদা বেশি। দামও একেবারে কম নয়।