কোরবানি হচ্ছে আল্লাহর পক্ষ থেকে কল্যাণময় নিদর্শন
ত্যাগের মহিমায় সমুজ্জ্বল পবিত্র ঈদুল আযহা’র প্রকৃত শিক্ষা রাষ্ট্রীয়, সমাজ, পরিবার ও ব্যক্তিজীবনে প্রতিফলন ঘটিয়ে কল্যাণমুখী ও ন্যায়- ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর Mohammad Selim Uddin এবং কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি Dr. Rezaul Karim। পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে নগরবাসীর উদ্দেশে দেয়া শুভেচ্ছা বাণীতে তাঁরা আজ এসব কথা বলেন।
মহানগরী নেতৃদ্বয় বলেন, পবিত্র ঈদুল আযহা মুসলিম উম্মাহর এক অতি তাৎপর্যপূর্ণ দিন। বস্তুত, আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নির্দেশ পালনার্থে মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহীম (আ.) স্বীয় পুত্র হযরত ঈসমাইল (আ.)কে কুরবানি করতে প্রয়াসী হয়েছিলেন। সে আদর্শ অনুসরণেই মুসলিম উম্মাহ দিবসটিকে পবিত্র ঈদুল আযহা হিসাবে পালন করে আসছে। মূলত, মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের প্রতি একনিষ্ঠ আনুগত্য, তার প্রকৃত সন্তুষ্টি ও মানবকল্যাণে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগই ঈদুল আযহার প্রকৃত শিক্ষা। আর নিজের প্রবৃত্তির ওপর নিয়ন্ত্রণ আরোপই পশু কুরবানির প্রকৃত উদ্দেশ্য। এ প্রসঙ্গে কালামে হাকীমে বলা হয়েছে, ‘কুরবানির পশুর রক্ত, গোশত কোন কিছুই আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, পৌঁছে কেবল তোমাদের তাক্বওয়া বা আল্লাহভীতি’ (সুরা হজ্জ, আয়াত-৩৭)। তাই কুরবানির শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে আত্মগঠন ও আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে আর্ত-মানবতার মুক্তির জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
তাঁরা বলেন, জাগতিক লোভ-লালসা ও কামনা- বাসনার উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে পশুপ্রবৃত্তির উপর বিজয় অর্জনই ঈদুল আযহার প্রকৃত শিক্ষা। অন্যায়-অসত্য, অনাচার- পাপাচার, হিংসা-বিদ্বেষ, জুলুম-নির্যাতন, বিভেদ- বিসংবাদ বন্ধ করে সমাজ-রাষ্ট্রে সার্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে মানবজাতির প্রকৃত কল্যাণ সাধন করা পবিত্র ঈদুল আযহার উদ্দেশ্য। কোরবানি হচ্ছে আল্লাহর পক্ষ থেকে কল্যাণময় নিদর্শন। আর সে কল্যাণকে যথাযথভাবে কাজে লাগানোই মোমিন জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।
তাঁরা আরও বলেন, দেশ ও জাতি এমন এক সময় পবিত্র ঈদুল আযহা উদ্যাপন করতে যাচ্ছে যখন দেশে নীরব দুর্ভিক্ষ চলছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির কারণে জনদুর্ভোগ এখন চরমে উঠেছে। অপশাসন-দুঃশাসন, দুর্নীত, লুটপাট ও ক্ষমতাসীনদের অতিমাত্রায় ক্ষমতালিপ্সা পুরো জাতিস্বত্তাকেই ভঙ্গুর ও দুর্বল করে দিয়েছে। পরিকল্পিতভাবে দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছে। ফলে দেশ এখন অপরাধ ও অপরাধীদের অভয়ারণ্য।সরকার দলীয় লোকজন ও বিভিন্ন কর্তাব্যক্তিদের লাগামহীন দুর্নীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার সেদিকেই অঙ্গলী নির্দেশ করে। ফলে বহির্বিশ্বে দেশ ও জাতির সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে। তাই দেশ ও জাতিকে কলঙ্কমুক্ত করতে পবিত্র ঈদুল আযহার শিক্ষায় উদ্বুদ্ধ হয়ে অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ ভূমিকা পালন করতে হবে। নেতৃবৃন্দ গণ প্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠায় দলমত নির্বিশেষে সকলকে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান এবং নগরবাসীর প্রতি পবিত্র ঈদুল আযহার আন্তরিক শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন।