বাংলাদেশে দীর্ঘ ১২ বছর থেকে ভোগ বৈষম্য স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে। এটি প্রচলিত ধারণার বাইরে একটি নতুন তথ্য। তবে আয় বৈষম্য কতটুকু বা কী অবস্থায় আছে সেটি আরও গবেষণার বিষয়। বুধবার বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান (বিআইডিএস) আয়োজিত সেমিনারে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। রাজধানীর আগারগাঁওয়ে সংস্থাটির সম্মেলন কক্ষে সেমিনারে গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন বিশ্বব্যাংকের প্রভার্টি অ্যান্ড ইকুয়ালিটি প্র্যাকটিসের সিনিয়র ইকোনমিস্ট সার্জিও ওলিভিয়িয়ারি। তার গবেষণার বিষয়, রিকনস্ট্রাকচিং ২০১০-২০২২ প্রভার্টি অ্যান্ড ইনইকুয়ালিটি ট্রেন্ডনস ইন বাংলাদেশ : এ স্টাটিসটিক্যাল ম্যাচিং অ্যাপ্রোচ।
এতে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমান। সভাপতিত্ব করেন বিআইডিএসের মহাপরিচালক ড. বিনায়ক সেন।
সেমিনারে উপস্থাপিত গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, করোনা পরবর্তী পুনর্গঠন সময়েও যে কোনো মেথডে গবেষণা করলে দেখা যায় বাংলাদেশের সাধারণ দারিদ্র্য ও অতি দারিদ্র্য কমেছে। এটি অনেক বড় সাফল্য। এছাড়া ২০১০ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ভোগ বৈষম্য স্থিতিশীল রয়েছে। এটি বাংলাদেশের জন্য বড় বার্তা। তবে তখন মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৫-৬ শতাংশ। যেহেতু মূল্যস্ফীতি বেড়েছে তাই নতুন করে গবেষণার মাধ্যমে দেখতে হবে।
ড. মসিউর রহমান বলেন, আজকের গবেষণায় অনেক পজিটিভ লাইন আছে। করোনার সময়ে গবেষকেরা এবং গণমাধ্যম যেভাবে দারিদ্র্য হার বেড়ে যাওয়া নিয়ে আশঙ্কা করেছে বাস্তবে অতটা খারাপ হয়নি। সে সময় আইসিডিডিআর.বি একটি গবেষণা করে দেখিয়েছিল বস্তিতে লকডাউন না মানলেও তাদের মধ্যে করোনা হওয়ার হার খুব কম ছিল।
ড. বিনায়ক সেন বলেন, আমরা ভালোর পরও আরও কিছু দেখতে চাই। ফলে আগামীতে আরও গবেষণার প্রয়োজন আছে। প্রয়োজনে বিআইডিএস এ বিষয়ে গবেষণা পরিচালনা করতে পারে। আজকের গবেষণায় বিশ্বব্যাংকের পক্ষ থেকে কনজামশন সার্ভের ক্ষেত্রে বেশকিছু মেথড সাজেশন করা হয়েছে। এর যে কোনোটি দিয়ে হিসাব করলেই বাংলাদেশে ভোগ বৈষম্য যে দীর্ঘ বছর স্থিতিশীল সেটি উঠে আসবে। বৈষম্য নিয়ে অনেক কথা বলা হলেও এই ভালো দিকটা সম্পর্কে আমরা জানি না।
প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে, ২০১০ সালে বাংলাদেশের সাধারণ দারিদ্র্যের হার ছিল ২১ দশমিক ৩ শতাংশ, এছাড়া অতি দারিদ্র্যের হার ছিল ৬ দশমিক ৯ শতাংশ, সেটি ২০১৬ সালে এসে দাঁড়ায় ২২ দশমিক ৪ এবং ৭ দশমিক ২ শতাংশে। যা পরে কমেছে।