অর্থনীতি বিপদে পড়ার অন্যতম কারণ হিসেবে একের পর এক মেগা প্রকল্প গ্রহণকে দায়ী করেছেন অর্থনীতিবিদ ড. মঈনুল ইসলাম। তিনি বলেছেন, রূপপুরের মতো প্রকল্প ভারতে অর্ধেক টাকায় করে দিয়েছে রাশিয়া। তাহলে আমাদের বেশি অর্থ খরচ হচ্ছে কেন? এমন অনেক অপ্রয়োজনীয় অবকাঠামো করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে লুটপাট হচ্ছে। বড় অপ্রয়োজনীয় অবকাঠামো করে শ্রীলঙ্কা ধসে গেছে। আমরাও এমন খামখেয়ালি করে একই পথে চলছি। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবে ‘বাংলাদেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতা: সংকট ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক আলোচনা সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে তিনি এসব কথা বলেন। সভার আয়োজন করে বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টি।
মঈনুল ইসলাম বলেন, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ খাতে যে বরাদ্দ রাখা হয়েছে, তা থেকে এবছর আরও ১ বিলিয়ন ডলার বেশি খরচ হবে এই খাতে। পাশাপাশি বাংলাদেশের জিডিপি’র অনুপাত কমতে কমতে ৮ শতাংশের কাছাকাছি এসে গেছে-যা দক্ষিণ এশিয়ার সর্বনিম্ন। একই সঙ্গে দেশের বর্তমান মারাত্মক রাজনৈতিক সংকট অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে বড়োসড়ো বাধা হয়ে যাচ্ছে।
বেনজীর ইস্যুতে ড. মঈনুল ইসলাম বলেন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের পেছনে দুজন মাস্টারমাইন্ড ছিল।
তার মধ্যে একজন বেনজীর আহমেদ। যিনি বর্তমান সরকারের টার্গেট। পুরো পুলিশ প্রশাসনকে এভাবে অপব্যবহারের উদাহরণ সৃষ্টি করে গেছেন, সেটা কি সরকারের জানা ছিল না। সরকার কি এর সুবিধা ভোগ করেনি। এখন তাকে আমরা টার্গেট করেছি; তাই ছুড়ে ফেলে দিয়েছি।
এ সময় বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, আমাদের ডলার সংকটের মূল্য দিচ্ছে জনগণ। মুদ্রাস্ফীতি হচ্ছে। এই বাড়তি কর জনগণ দিচ্ছে। সংসার চলে না মানুষের। এখন দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত পার্টির বড় পদের লোক। বেনজীর ও আজিজ দু’জনের চরম আগ্রাসন দেখলাম। এখন দেখা যাবে দুদক কী করে!
তিনি আরও বলেন, আমাদের দাবি হবে, অর্থনীতির নিয়ন্ত্রণ ধনিক গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ থেকে নিয়ে আসতে হবে। পাকিস্তানের ২২ পরিবার থেকে রক্ষা পেতে যুদ্ধ করে স্বাধীনতা এসেছে, এখন কতো শত পরিবার তার হিসাব নেই। গোষ্ঠী তান্ত্রিক অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ শুধু রাজনৈতিক অস্থিরতা না সামাজিক অস্থিরতা তৈরি করছে। আমাদের রাষ্ট্রক্ষমতা যেখানে দাঁড়িয়ে আছে সেখান থেকে সমাজ অনেক দূরে সরে গেছে।