সরবরাহ সংকটের অজুহাতে এক মাস ধরেই লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে কাঁচা মরিচের দাম এখন ২০০ টাকা কেজি। এক মাস আগেও রাজধানীর খুচরা বাজারে এর দাম ছিল ৮০ থেকে ১০০ টাকা। কাঁচা মরিচের দাম নিয়ন্ত্রণে আনতে আমদানির অনুমতি দিয়েছিল সরকার। কিন্তু গত ছয় দিনে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে ২৮৫ মেট্রিক টন কাঁচা মরিচ আমদানি করা হলেও তার সুফল মেলেনি।
এদিকে কয়েক সপ্তাহ ধরেই চড়া দামে ডিম বিক্রি করা হচ্ছে। ৬০ টাকার নিচে মিলছে না সবজিও। সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ মে) রাজধানীর রামপুরা, বাড্ডা, জোয়ারসাহারা ও মহাখালী কাঁচাবাজারে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
বিক্রেতারা বলছেন, সবজির সরবরাহ কমে যাওয়ায় দাম বাড়তি। গরমে মুরগি মারা যাওয়ায় ডিমের বাজারেও এমন পরিস্থিতি।
জোয়ারসাহারা বাজারের সবজি বিক্রেতা মিলন হোসেন খান কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘খরা ও ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সবজি ও কাঁচা মরিচ ক্ষেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। যার কারণে বাজারে দেশি কাঁচা মরিচের সরবরাহ একদম কমে গেছে।
এক মাস আগেও কাঁচা মরিচ পাইকারিতে প্রতি কেজি ৫০ থেকে ৬০ টাকায় কেনা গেলেও এখন ১৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। বাজারে নতুন সবজি না আসা পর্যন্ত দাম কমার সম্ভাবনাও দেখা যাচ্ছে না।’
মহাখালী কাঁচাবাজারের ডিম বিক্রেতা রাজীব মিয়া রাজু কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘গরমে খামারিদের মুরগি মারা যাওয়ায় বাজারে ডিমের কিছুটা সংকট চলছে। যার প্রভাবে দাম বাড়তি।’
রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) দৈনিক বাজারদর প্রতিবেদনেও কাঁচা মরিচ ও ডিমের অস্বাভাবিক দাম বৃদ্ধির চিত্র দেখা গেছে।
এদিনের বাজারদরের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি করা হচ্ছে ১৮০ থেকে ২৪০ টাকায়, যা গত এক মাস আগে বিক্রি হয় ৫০ থেকে ১০০ টাকায়। ফার্মের মুরগির প্রতি ডজন ডিম বিক্রি করা হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬৫ টাকায়, গত মাসে বিক্রি করা হয় ১২০ থেকে ১২৬ টাকায়।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ভারত থেকে এখন নিয়মিত পেঁয়াজ আমদানি হলেও বিক্রি হচ্ছে আগের বাড়তি দামেই। প্রতি কেজি পেঁয়াজ মানভেদে ৭০ থেকে ৮০ টাকা, দেশি রসুন কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকায় ও আমদানীকৃত রসুন কেজি ২২০ থেকে ২৪০ টাকা, আদা প্রতি কেজি ২৬০ থেকে ৩২০ টাকা এবং আলু মানভেদে কেজি ৫৫ থেকে ৬০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে মুরগির দাম কিছুটা কমেছে। ব্রয়লার কেজি ২০০ থেকে ২১০ টাকায় ও সোনালি মুরগি কেজি ৩৫০ থেকে ৩৬০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
সবজির বাজার
রাজধানীর বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বেগুনের কেজি মানভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকা, টমেটো ৮০ থেকে ১০০ টাকা, পেঁপে ৬০ থেকে ৭০ টাকা, ঢেঁড়স, পটোল, চিচিঙ্গা, ঝিঙ্গা ও করলার কেজি ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি শসার কেজি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৫০ থেকে ৬০ টাকা, চালকুমড়া প্রতি পিস ৫০ টাকায়, কচুরমুখী কেজি ১২০ টাকা ও কচুর লতি কেজি ৮০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে।
আমদানির পর হিলিতে মরিচের দাম কমেছে
ভারত থেকে আমদানি বাড়ায় দিনাজপুরের হিলির বাজারগুলোতে কাঁচা মরিচের দাম কমা শুরু হয়েছে। হিলি কাস্টমস সূত্রে জানা গেছে, গত ২৩ থেকে ২৯ মে পর্যন্ত ভারতীয় ২৯টি ট্রাকে ২৮৫ মেট্রিক টন ৯৬০ কেজি কাঁচা মরিচ আমদানি করা হয়েছে। এর ফলে এখন পর্যন্ত কেজিতে দাম কমেছে ২০ থেকে ৩০ টাকা।
এদিন হিলি স্থলবন্দর ও বাজার ঘুরে দেখা যায়, এক সপ্তাহ আগে পাইকারিতে ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া দেশি কাঁচা মরিচ এখন ১৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
https://www.kalerkantho.com/online/business/2024/05/31/1393069