বরিশাল নগরীর জনসাধারণ এত পানি আগে আর কখনো দেখেননি। নগরীর প্রাণকেন্দ্র সদর রোড ছিল তিন ফুট পানির নিচে। অন্যান্য এলাকার অবস্থাও ছিল প্রায় একই। সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা ছিল নগরীর নিম্নাঞ্চলের। এসব এলাকার বসতঘর জোয়ার ও বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে যায়। নিম্নাঞ্চলের বসতঘরগুলোতে তিন ফুট উচ্চতায় গিয়ে ঠেকেছে পানি। ঘরের মধ্যে সাঁতরে বেড়াচ্ছে সাপ ও মাছ। এ দুরবস্থার মধ্যে শুকনো খাবার খেয়ে চরম ভোগান্তিতে দিন পার করছেন নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা। মঙ্গলবার দুপুর পর্যন্ত কাটেনি এসব এলাকার জলাবদ্ধতা। সরেজমিন দেখা যায়, নগরীর সদর রোড, গির্জামহল্লা, কাকলীর মোড়, জেলখানার মোড়, ব্রাউন কম্পাউন্ডে সোমবার পানি ছিল তিন ফুট উচ্চতায়। এছাড়া পলাশপুর, বেলতলা, মোহাম্মদপুর, রসুলপুর, দক্ষিণ রূপাতলী, ভাটিখানা, কাউনিয়া, প্যারারা রোড, কলেজ রোড, কলেজ অ্যাভিনিউ, কেডিসি, ত্রিশ গোডাউন, দপদপিয়া, কালিজিরা, রূপতলীর জিয়ানগর, খ্রিস্টানপাড়া এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এসব এলাকার বাসিন্দাদের ঘরে তিন ফুট পর্যন্ত পানি প্রবেশ করেছে। যা মঙ্গলবার পর্যন্ত নামেনি। এ কারণে এসব এলাকার বাসিন্দাদের ঘরে রান্না বন্ধ রয়েছে। তারা চিঁড়া-মুড়ি খেয়ে দিন পার করছেন। ভুক্তভোগীরা বাইরের উঁচু স্থানে অবস্থান নেবেন সেই সুযোগও নেই।
পলাশপুর এলাকার প্রবীণ ব্যক্তি শামিম আহমেদ বলেন, এমন পানি জীবনেও দেখিনি। ঘরের মধ্যেই সাঁতরে বেড়াচ্ছে সাপ। খাট-আসবাবপত্র সব তলিয়ে গেছে। খাটের ওপর খাট বসিয়ে রাত পার করেছি।
মোহাম্মদপুর এলাকার ফজলুল উলুম বহুমুখী এতিমখানার পরিচালক ওহিদুল ইসলাম বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় হঠাৎ মাদ্রাসায় পানি প্রবেশ করে। এতিমদের জন্য রাখা চালের বস্তাসহ সব খাবার নষ্ট হয়ে গেছে। মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত তিন ফুট পর্যন্ত পানি ছিল। এখন পানি একটু কমলেও রান্না করার সুযোগ নেই। জামাকাপড়, বইখাতা, খাবারসহ সবকিছু পানিতে ভেসে গেছে।
জেলা প্রশাসক শহিদুল ইসলাম বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমাল অপূরণীয় ক্ষতি করেছে। তবে বরিশালবাসী ঘুরে দাঁড়ানো শুরু করেছে। দুর্গতদের মাঝে শুকনো খাবারসহ অন্যান্য সহায়তা করা হচ্ছে।