ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে উপকূলীয় এলাকায় ভেসে গেছে অনেক চিংড়ি ঘের। এতে এক রাতেই নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন মাছচাষিরা। সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও খুলনায়। বাগেরহাটে চিংড়ি ও সাদা মাছের শতভাগ ঘের তলিয়ে মাছ ভেসে গেছে। ঘের মালিকদের দাবি চিংড়িচাষিদের এ ক্ষতি পুষিয়ে নিতে সরকারের সহযোগিতা দরকার। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিষয়টি মৎস্য বিভাগকে জানানো হবে। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর-
বাগেরহাট : জোয়ারের পানিতে বাগেরহাটের বিভিন্ন অঞ্চলে বাঁধ ভেঙে নিুাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে জেলার ২০ হাজারের বেশি মাছের ঘের ভেসে গেছে। রামপাল উপজেলা নির্বাহী কার্মকর্তা রহিমা সুলতানা বুশরা বলেছেন, মানুষের প্রধান আয়ের উৎস মাছের ঘের তলিয়ে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।
সাতক্ষীরা : সাতক্ষীরার শ্যামনগরসহ বিভিন্ন উপজেলার এক হাজার বিঘা চিংড়ি ঘের প্লাবিত হয়েছে। দাতিনাখালী গ্রামের চাষি সোহাগ হোসেন বলেন, ১২ শতক জায়গা নিয়ে ঘের করেছি। ঝড় আসার খবর পেয়ে দুদিন ধরেই মেরামতের কাজ করেছি। কিন্তু পানি এত বেশি বেড়েছে, পুরো ঘের তলিয়ে গেছে। ঘেরের ওপরই নির্ভর করে চলে আমাদের জীবিকা। অপর এক চাষি আব্দুল হালিম বলেন, আড়াই বিঘা জমিতে সাদা মাছ ও চিংড়ি চাষ করেছিলাম। এক রাতেই সব ভেসে গেছে।
কয়রা (খুলনা) : খুলনার কয়রায় ২০ গ্রামের ৫ শতাধিক চিংড়ির ঘের ভেসে গেছে। এসব জায়গার মধ্যে রয়েছে মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের সিংহেরকোনা, মহারাজপুর ইউনিয়নের দশহালিয়া ও দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের কয়েকটি গ্রাম।
পাইকগাছা (খুলনা) : খুলনার পাইকগাছায় বাঁধ ভেঙে নিমজ্জিত হয়েছে হাজার বিঘার চিংড়ি ঘের। রয়্যাল ফিশ ট্রেডিংয়ের স্বত্বাধিকারী ও শিল্পপতি গোলাম কিবরিয়া রিপন বলেন, ঘূর্ণিঝড় রিমালের আক্রমণে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে চিংড়ি ঘের মালিকরা।
চরফ্যাশন (ভোলা) : চর ছায়াতিচর পালিতা, নজরুল নগর ও চর কুকড়িমুকড়িসহ বিভিন্ন স্থানে ২০০ চিংড়ি ঘের প্লাবিত হয়েছে।
হাতিয়া (নোয়াখালী) : নোয়াখালীর হাতিয়ায় নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের শতাধিক ঘের ও পুকুর প্লাবিত হয়েছে। অনেকে ঘেরের পাড় মাটি দিয়ে উঁচু করে এবং জাল দিয়েও শেষ পর্যন্ত মাছ রক্ষা করতে পারেননি। মাছ চাষিরা দাবি করছেন-কোটি টাকার মাছ জোয়ারের পানিতে ভেসে গেছে। নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আমার দুটি পুকুর তলিয়ে গেছে। সব মাছ ভেসে গেছে। কম হলেও অর্ধকোটি টাকার মাছ জোয়ারে ভেসে গেছে।
মনপুরা (ভোলা) : ভোলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ উপজেলা মনপুরায় জোয়ারে ভেসে গেছে শতাধিক পুকুর ও ঘেরের মাছ।
কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) : কলাপাড়া উপজেলায় ৭৭৮টি ঘের এবং দুই হাজার ৪৬৫টি পুকুরের মাছ ভেসে গেছে। ফলে কলাপাড়া উপজেলায় মৎস্য খাতে অন্তত ১৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানিয়েছেন।