নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম অব্যাহতভাবে বেড়েই যাচ্ছে। মজুতদাররা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে যখন তখন ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়াচ্ছে। আর তাতে নাভিশ্বাস উঠেছে সীমিত আয়ের মানুষের। বাজারে ডিমের হালি হাফ সেঞ্চুরি ছুঁয়েছে গত সপ্তাহেই। পাড়া মহল্লার দোকানে ৫৫ টাকা হালিও বিক্রি হতে দেখা গেছে। যা আগের সপ্তাহে ছিল ৪৫ টাকা, আর তিন সপ্তাহ আগে ছিল ৪০ টাকা। সপ্তাহের ব্যবধানে দ্বিগুণ হয়েছে কাঁচা মরিচের দাম। এ পণ্যটি কেজিতে ১০০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ২০০-২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাড়তি আলু-পেঁয়াজের দামও। সবজির দামও কমেনি। দ্রব্যমূল্য কমানোর দাবি ক্রেতাদের। সরকার কঠোরভাবে বাজার মনিটরিংয়ের নির্দেশ দিলেও সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য কিছুতেই কমছে না। এ নিয়ে ক্রেতাদের অসন্তোষ ও ক্ষোভের শেষ নেই।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বাজারে দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে হঠাৎ করে কাঁচামরিচের দাম ১০০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকায় এবং ২০০ টাকা কেজির ধনেপাতা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়। হঠাৎ কাঁচামরিচ ও ধনেপাতার চড়া দামে ক্রেতা-বিক্রেতারা ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করছে। কাঁচা মরিচ বিক্রেতারা জানান, গত তিন সপ্তাহ ধরে কাঁচামরিচের বাজার অস্থির। ৮০ থেকে ১০০ টাকার মরিচ এখন ২৪০ টাকা হয়েছে। চাহিদার তুলনার উৎপাদন কম থাকায় এমনটি হয়েছে। তবে দামের কারণে আমাদের বিক্রি অর্ধেকে নেমেছে।
বাজারে ব্রয়লার মুরগি ২১০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গত সপ্তাহেও একই দরে বিক্রি হয়েছিল। বাজারগুলোতে সোনালি ৩৬০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সোনালি হাইব্রিড ৩৩০ টাকা, দেশি মুরগি ৬৫০ থেকে ৬৮০ টাকা কেজি, লেয়ার মুরগি ৩৪০ টাকা এবং সাদা লেয়ার ৩১০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর মুরগির লাল ডিম ১৪৫ টাকা এবং সাদা ডিম ১৪০ টাকা প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে।
সবজি বাজারে দেখা গেছে, বাজারে সব ধরনের সবজি চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে গ্রীষ্মকালীন সবজি কচুরমুখীর কেজি ১২০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ১০০ টাকা, করলা ৮০ টাকা, পটল ৬০ টাকা, ঢেঁড়স ৫০ টাকা, বরবটি ১০০ টাকায়, শসা ৬০ টাকা, লাউ প্রতিটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ৮০ টাকা, ধুন্দল ৬০ টাকা, চিচিঙ্গা ৬০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, ঝিঙা ৮০ টাকা, সজনে ১৬০ টাকা এবং কাঁচা আম প্রকারভেদে ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজারগুলোতে প্রতি কেজি মুলা ৫০ টাকা, ফুলকপি প্রতিটি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, বাঁধাকপি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, ব্রোকলি ৪০ টাকা, পাকা টমেটো প্রকারভেদে ৪০ থেকে ৬০ টাকা এবং গাজর ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। লেবুর হালি ১০ থেকে ৪০ টাকা, ধনে পাতার কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, কলার হালি ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ার কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লাল শাকের আঁটি ১৫ টাকা, লাউ শাক ৪০ টাকা, মুলা শাক ১৫ টাকা, পালং শাক ১৫ থেকে ২০ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। দেশি পেঁয়াজের কেজি ৭০ টাকা আর আলুর কেজি ৫৫ টাকা।
বাজারে প্রতি কেজি মোটা চালের দাম ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, বি আর-আটাশ ৫৫ থেকে-৫৮ টাকা, পাইজাম ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। মাঝারি মানের চিকন চালের কেজি ৭৫ টাকা। আর ভালো মানের চিকন চালের কেজি ৮০ টাকা। প্যাকেট পোলাওয়ের চাল ১৫৫ টাকা, খোলা পোলাওয়ের চাল মানভেদে ১১০-১৪০ টাকা, ছোট মসুরের ডাল ১৪০ টাকা, মোটা মুসরের ডাল ১১০ টাকা, বড় মুগ ডাল ১৬০ টাকা, ছোট মুগ ডাল ১৮০ টাকা, খেসারি ডাল ১২০ টাকা, বুটের ডাল ১১৫ টাকা, ডাবলি ৮০ টাকা, ছোলা ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেল ১৬৭ টাকা, খোলা সয়াবিন তেল ১৪৭ টাকা, কৌটাজাত ঘি ১৩৫০ টাকা, খোলা ঘি ১২৫০ টাকা, প্যাকেটজাত চিনি ১৪৫ টাকা, খোলা চিনি ১৩০ টাকা, দুই কেজি প্যাকেট ময়দা ১৫০ টাকা, আটা দুই কেজির প্যাকেট ১৩০ টাকা, খোলা সরিষার তেল প্রতি লিটার ১৯০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, নতুন দেশি রসুন ২০০ টাকা, চায়না রসুন ২২০ টাকা, চায়না আদা ২৬০ টাকা, ভারতীয় আদা ২৬০ দরে বিক্রি হচ্ছে।
মাছের বাজারে দেখা গেছে, বাজারগুলোতে ৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ মাছ কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ১০০ টাকা। ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রামের ইলিশের কেজি ১ হাজার ৮০০ টাকা। প্রতি কেজি চাষের শিং (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, রুই (আকারভেদে) ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, মাগুর ৯০০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা, মৃগেল ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, পাঙাশ ২১০ থেকে ২৩০ টাকা, চিংড়ি ৮০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা, বোয়াল ৫০০ থেকে ৯০০ টাকা, কাতলা ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, পোয়া ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, পাবদা ৪০০ থেকে ৫০০ টাকা, তেলাপিয়া ২২০ টাকা, কই ২২০ থেকে ২৪০ টাকা, মলা ৫০০ টাকা, বাতাসি টেংরা ১ হাজার ৬০০ টাকা, টেংরা ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা, কাচকি ৬০০ টাকা, পাঁচমিশালি ২২০ টাকা, রূপচাঁদা ১ হাজার ২০০ টাকা, বাইম ১ হাজার ২০০ থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, দেশি কই ১ হাজার ২০০ টাকা, মেনি ৭০০ টাকা, শোল ৬০০ থেকে ১ হাজার টাকা, আইড় ৭০০ থেকে ১ হাজার টাকা, বেলে ৭০০ টাকা এবং কাইক্কা মাছ ৬০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এদিকে গরুর গোশত ৭৮০-৮০০ টাকা, খাসির গোশত ১১৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।