আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে বিদ্যুতের মূল্য ইউনিট প্রতি ৩৫ পয়সা বৃদ্ধির প্রতিবাদে এবং অবিলেম্বে বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবিতে কেন্দ্র ঘোষিত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী ২৬ নভেম্বর রোববার শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে ঢাকা মহানগরী উত্তরের নগরবাসীর প্রতি আহবান জানিয়ে এক বিবৃতি প্রদান করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
এক বিবৃতিতে মহানগরী আমীর বলেন, সরকার সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে দফায় দফায় বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করে জনজীবনকে বিপর্যস্ত ও দুর্বিসহ করে তুলেছে। সরকারের এই গণবিরোধী সিদ্ধান্ত দেশের মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র জনগোষ্ঠীর ওপর মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বিশ্ববাজারে জ্বালানী তেলেন দাম বেশ কমলেও সরকার জনগণের রক্ত চোষার জন্যই সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। বিশ্ববাজারে তেলের মূল্য কমে যাওয়ায় বিদ্যুতের দাম আনুপাতিক হারে কমে যাওয়াই যৌক্তিক হলেও সরকারি ঘোষণায় এখন বিদ্যুতের দাম প্রতি ইউনিটে বাড়বে ৩৫ পয়সা। যা প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য গোদের উপর বিষফোঁড়া হিসেবে দেখা দেবে।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর রাষ্ট্রের সকল সেক্টরেই হরিলুটের রাজত্ব কায়েম করেছে। এই সরকারের আমলেই দেশের শেয়ার মার্কেট থেকে লক্ষ কোটি টাকা পাচার করা হয়েছে। হলমার্ক, বেসিক ব্যাংক, বিসমিল্লাহ গ্রুপ, ডেসটিনি, জনতা ব্যাংক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুুরির মত ন্যাক্কারজনক ঘটনা এই সরকারের আমলেই ঘটেছে। সরকার এসব কেলেঙ্কারীর নিরপেক্ষ কোন তদন্ত করে অপরাধীদের শাস্তির আওতায় আনেনি বরং পরোক্ষভাবে তারা অপরাধীদেরকে পৃষ্টপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে। ফলে দেশের ব্যাংক-বীমা সহ আর্থিকখাতগুলো এখন অপমৃত্যুর প্রহর গুণছে। এমতাবস্থায় বারবার গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়িয়ে ফ্যাসীবাদী সরকার গণনিবর্তনের পথকেই বেছে নিয়েছে। সরকার গত মার্চ মাসেই গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে। তারা ২০১০ সাল থেকে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছয় বছরে পাইকারি পর্যায়ে ছয়বার এবং খুচরা পর্যায়ে সাতবার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে। যা কোন ভাবেই যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য নয়।তিনি আরও বলেন, মূলত বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির সাথে সাথে সব কিছুরই উৎপাদন খরচ বেড়ে যায় । তাই বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সবচেয়ে বেশি বিপাকে পড়বে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী ও নিম্নবিত্তের মানুষ। শিল্প খাতেও পড়বে নেতিবাচক প্রভাব। এমনিতেই সরকারের লুটপাট আর ভয়াবহ দুঃশাসনে দেশে কোনো বিনিয়োগ নেই। তাই বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা মানেই বিনিয়োগকারীদের নিরুৎসাহিত করা। ফলে দেশের অর্থনীতি মারাত্মক হুমকির মুখে পড়বে। প্রতিযোগী মূল্যে শিল্প উৎপাদন সক্ষমতা ব্যাহত হবে। এ ছাড়া বৃহৎ অবকাঠামোর প্রকল্প, রফতানি সক্ষমতা, শিল্প বহুমুখীকরণ ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি উৎপাদন খরচ ও ব্যবসা পরিচালনা ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। ফলে ব্যাপকভাবে কর্মসংস্থান হ্রাস পাবে। দেশে জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পাবে বেকারত্ব্। তাই সরকারের এই গণবিরোধী সিদ্ধান্ত জনগণ কখনোই মেনে নেবে না বরং জুলুমবাজ সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলবে। তিনি সরকার কর্তৃক সম্পূর্ণ অযৌক্তিকভাবে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ও অবিলম্বে বর্ধিত মূল্য প্রত্যাহারের দাবিতে আগামী ২৬ নভেম্বর রোববার ঢাকা মহানগরী উত্তরে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করতে সকল স্তরের নগরবাসীর প্রতি আহবান জানান।