বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম বলেছেন, সরকার দেশ পরিচালনায় সার্বিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। জনগণের ক্রয়ক্ষমতা না বাড়লেও দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন উর্দ্ধগতিতে জনদুর্ভোগ এখন চরমে উঠেছে। তাই ব্যর্থ ও জুলুমবাজ সরকারের পতনের লক্ষ্যে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি ক্রমবর্ধমান দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। অন্যথায় সরকারকে গণরোষের মুখোমুখী হতে হবে।
তিনি আজ রাজধানীতে কেন্দ্র ঘোষিত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত চাল, ডাল, আটা, তেল, তরকারী, মাছ, গোশ্ত, পিঁয়াজ, রসূনসহ সকল নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের অসহনীয় উর্ধ্বগতির প্রতিবাদে এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণের দাবীতে এক বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে এসব কথা বলেন। বিক্ষোভ মিছিলটি উত্তর বাড্ডা থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মেরুল বাড্ডা গিয়ে সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ঢাকা মহানগরীর উত্তরের মজলিশে শুরা সদস্য ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, মিজানুর রহমান, নিয়ামুল করিম, জামায়াত নেতা এ আর সরকার, জিল্লুর রহমান ও ছাত্রনেতা জামিল প্রমূখ।
লস্কর তসলিম বলেন, চাল, ডাল, আটা, তেল, তরকারী, মাছ, গোশ্ত, পিঁয়াজ, রসূনসহ সকল নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির ফলে নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিষের দাম অসহনীয় পর্যায়ে পৌঁছেছে। সরকার জনগণের কল্যাণে কাজ না করে নিজেদের অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতেই ব্যস্ত রয়েছে। তারা নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধে কার্যকর কোন পদক্ষেপই গ্রহণ করছে না। সরকার গণপ্রতিনিধিত্বশীল নয় বলেই তারা জনগণের কল্যাণে কোন কাজ করে না। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই অগণতান্ত্রিক সরকারের পরিবর্তে গণপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। অন্যথায় আগামী দিনে গণদুর্ভোগ বাড়বে বৈ কমবে না।
তিনি বলেন, অগ্নিমূল্যের বাজারে এখন মিনিকেট চাল প্রতি কেজি ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, ভারতীয় চাল ৪৮ থেকে ৫০ টাকা, দেশী বিআর ৫২ থেকে ৫৩ টাকা, সরু চাল ৯০ টাকা থেকে ১০০ টাকা, আটা প্রতি কেজি ৩২ থেকে ৩৪ টাকা, মসুর ডাল প্রতি কেজি ১২৫ টাকা, মুগডাল প্রতি কেজি ১২০ টাকা, মাষকলাই প্রতি কেজি ১৩৫ টাকা, ছোলা প্রতি কেজি ৯০ থেকে ৯৫ টাকা, রুই মাছ প্রতি কেজি ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, কাতলা প্রতি কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, মুরগী প্রতি কেজি ১২৫ থেকে ১৭০ টাকা, গরুর গোশ্ত প্রতি কেজি ৪৮০ থেকে ৫২০ টাকা, খাসির গোশ্ত প্রতি কেজি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ১২০ টাকা, সিম ১৫০ টাকা, করলা, পটল, বরবটি ইত্যাদি ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। পিঁয়াজ প্রতি কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকা, কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ১৬০ থেকে ২০০ টাকায় কেনা যাচ্ছে। যা সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার একেবারেই বাইরে। এমতাবস্থায় সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রাখতে জনগণের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি সহ দ্রব্যমূল্য যৌক্তিকভাবে নিয়ন্ত্রণের কোন বিকল্প নেই।