বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান বলেছেন, সরকার জামায়াতে ইসলামীকে নেতৃত্বশূন্য করতেই আমীরে জামায়াত ও বয়োবৃদ্ধ জাতীয় নেতা মকবুল আহমাদকে বারবার রিমান্ডে নিয়ে শারীরিক ও মানসিকভাবে নাজেহাল করছে। কিন্তু দেশপ্রেমী জনতা এই বর্ষীয়ান রাজনীতিকের ওপর জুলুম-নির্যাতন কোন ভাবেই মেনে নেবে না। তিনি আমীরে জামায়াতের রিমান্ড বাতিল করে অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। অন্যথায় জুলুমবাজ সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
তিনি আজ রাজধানীতে আমীরে জামায়াত ও বর্ষীয়ান রাজনীতিক মকবুল আহমাদকে বারবার পুলিশি রিমান্ডের নেয়ার প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে রিমান্ড বাতিল করে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত এক বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে এসব কথা বলেন। বিক্ষোভ মিছিলটি মিরপুর ১নং গোলচত্তর থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে চাইনিজ মোড়ে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিশে শুরা সদস্য অধ্যাপক আনোয়ারুল করিম, নাসির উদ্দীন, আলাউদ্দীন মোল্লা, আবুল হাসান, আশরাফুল আলম ও আব্দুস সাকী, শিবিরের ঢাকা মহানগরী পশ্চিমের সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম ও সাংগঠনিক সেক্রেটারি জোবায়ের প্রমূখ।
মাহফুজুর রহমান বলেন, সরকার দেশকে বিরোধী দলমুক্ত ও একদলীয় বাকশালী শাসন কায়েম করতেই ফরমায়েসী বাদী, সাজানো সাক্ষী, দলীয় প্রসিকিউশন ও কাল্পনিক অভিযোগে সাবেক আমীরে জামায়াত ও বিশ্ব বরেণ্য আলেমে দ্বীন মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সাবেক সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আব্দুল কাদের মোল্লা এবং সাবেক কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীকে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে। সরকারের বিরাজনীতিকরণের অংশ হিসেবেই জনপ্রিয় বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের নামে হাজার হাজার মিথ্যা, বানোয়াট ও যোগসাজসী মামলা দিয়ে তাদেরকে বছরের পর বছর ধরে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। রিমান্ডের নামে এসব নেতাকর্মীদের ওপর চালানো হয়েছে লোমহর্ষক ও অবর্ণনীয় নির্যাতন। কিন্তু সরকার বিরোধী দল নির্মূলের জন্য যতই জুলুম-নির্যাতনের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে, জনতার প্রতিরোধও ততই শানিত হচ্ছে। তাই জামায়াতের বিরুদ্ধে কোন ষড়যন্ত্র সফল হবে না বরং তা সরকারের জন্যই বুমেরাং হবে-ইনশা আল্লাহ।
তিনি বলেন, সরকার দেশ পরিচালনায় সার্বিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। দেশের মানুষের স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি নেই। সরকারের জুলম-নির্যাতন, হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, বিচারবহির্ভূত হত্যাকান্ড, গুম, অপহরণ ও গুপ্তহত্যায় জনমনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে অবৈধ সরকার জনবিচ্ছিন্ন হয়ে ক্ষমতা হারানোর প্রহর গুণছে। তারা জনগণের শক্তির ওপর আস্থা হারিয়ে দেশকে পুলিশী রাষ্ট্রে পরিণত করেছে। সরকার জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেয়ার পরিবর্তে নিজেরাই জননিরাপত্তায় বিঘ্ন সৃষ্টি করছে। তারা রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ চরিতার্থ করতেই রাষ্ট্রের সকল অঙ্গকে দলীয়করণ করে ফেলেছে। ধবংস করা হয়েছে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ। দেশের বিচারবিভাগকে সরকারের আজ্ঞাবাহী প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। মাননীয় প্রধান বিচারপতির সাথে সরকারের ঘৃণ্য আচরণ সে কথায় স্মরণ করিয়ে দেয়। কিন্তু এসব করে জুলুমবাজ ও স্বৈরাচারী সরকারের শেষ রক্ষা হবে না বরং ইতিহাসের ধারাবাহিকতায় সরকারকে লজ্জাজনকভাবে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হবে।