বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সম্মানিত আমীর ও বর্ষীয়ান জননেতা মকবুল আহমাদ, নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান সহ নেতৃবৃন্দকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার ও রিমান্ডের নামে হয়রানীর প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে রিমান্ড বাতিল করে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে আহুত সকাল-সন্ধ্যা হরতালে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর মারমুখী আচরণ, ছাত্রলীগ-যুগলীগের হামলা, উস্কানী সৃষ্টি ও সরকারের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে সারা দেশের মত ঢাকা মহানগরী উত্তরেও সকাল-সন্ধ্যা হরতাল শান্তিপূর্ণভাবে সর্বাত্মক সফল করায় এক বিবৃতিতে সর্বস্তরের নগরবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তর আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
বিবৃতিতে তিনি আরো বলেন, সরকার নিজেদের অবৈধ ক্ষমতাকে নির্বিঘ্ন করতেই পোড়ামাটি নীতি গ্রহণ করেছে। তারা জনগণের ক্ষমতায় বিশাবসী নয় বলেই নির্মম দলন ও পীড়নের পথ বেছে নিয়েছে। দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্র সাংবিধানিকভাবে স্বীকৃত হলেও সরকার দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ইতোমধ্যেই ধবংস করে দিয়েছে। অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতন্ত্রের রক্ষাকবচ কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি ষড়যন্ত্রমূলকভাবে বাতিল করা হয়েছে। রাজনৈতিক সংগঠন প্রতিষ্ঠা ও সভা-সমাবেশ করা নাগরিকের মৌলিক এবং সাংবিধানিক অধিকার হলেও ফ্যাসিবাদী ও জুলুমবাজ সরকার সে অধিকার থেকে দেশের মানুষকে বঞ্চিত করছে। এমনকি রাজনৈতিক দলগুলোর ঘরোয়া বৈঠকগুলোকে কথিত গোপন বৈঠক আখ্যা ও নাশকতা পরিকল্পনার অপপ্রচার চালিয়ে রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করে বিভিন্নভাবে নাজেহাল করা হচ্ছে। যা আইনের শাসন, সংবিধান ও মানবাধিকারের মারাত্মক লঙ্ঘন।
তিনি বলেন, সরকার দেশে একদলীয় বাকশালী শাসন প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই আদর্শবাদী ও জনপ্রিয় সংগঠন জামায়াতকে বিশেষভাবে টার্গেট করেছে। তারা ইতোমধ্যেই মিথ্যা ও যোগসাজসী অভিযোগে সাবেক আমীরে জামায়াত ও বিশ্ববরণ্যে আলেমে দ্বীন মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীসহ ৫ শীর্ষনেতাকে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে। শীর্ষ নেতৃবৃন্দের শাহাদাতের পরও জামায়াতের ক্রমবর্ধমান অগ্রগতিতে ঈর্শান্বিত হয়ে সম্পূর্ণ অন্যায় ও অযৌক্তিভাবে ঘরোয়া বৈঠক থেকে জামায়াতে ইসলামীর সম্মানিত আমীর ও বয়োবৃদ্ধ রাজনীতিক মকবুল আহমাদ, নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ও সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান সহ নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতার করে রিমান্ডের নামে হয়রানী করা হচ্ছে। কিন্তু হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য এবং গ্রেফতার করে অতীতে জামায়াতের অগ্রযাত্রা রুদ্ধ করা যায়নি। জনগণ জামায়াতের শীর্ষনেতৃবৃন্দকে রিমান্ডের নামে নির্যাতন কখনোই মেনে নেবে না। তিনি নেতিবাচক রাজনীতির পথ পরিহার করে অবিলম্বে আমীরে জামায়াত সহ সকল রাজবন্দীর নিঃশর্ত মুক্তি দিতে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান।
মহানগরী আমীর বলেন, আমীরে জামায়াত সহ শীর্ষনেতৃবৃন্দের গ্রেফতার ও রিমান্ডের প্রতিবাদে জনগণ বিক্ষুব্ধ হয়েছে। তারা শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে ও অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে রাজপথে নেমে এসেছে। দেশপ্রেমী জনতা সকাল-সন্ধ্যার হরতাল সর্বাত্মকভাবে সফল করে জুলুমবাজ সরকারের প্রতি গণঅনাস্থা জানিয়েছে। কিন্তু সরকারের নির্দেশে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও ছাত্রলীগ-যুবলীগ সন্ত্রাসীরা বিক্ষুদ্ধ জনতার ওপর হামলা চালিয়েছে। মিরপুরে সন্ত্রাসীদের হামলায় ৫ জন আহত হয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ১ জনকে গ্রেফতার করেছে। গতকাল গুলশানে হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করা হলে পুলিশ ধাওয়া দিয়ে ৫ জনকে গ্রেফতার করে। কিন্তু সকল বাধা-প্রতিবন্ধকতা উপেক্ষা করে বিক্ষুব্ধ জনতা সকাল-সন্ধ্যার হরতাল সর্বাত্মকভাবে সফল ও সার্থক করেছে। তিনি জনগণের শান্তিপূর্ণ হরতাল কর্মসূচীতে হামলা, সন্ত্রাস, উস্কানী সৃষ্টি ও গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা-প্রতিবাদ জানান, আমীরে জামায়াত সহ গ্রেফতারকৃতদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন এবং সকাল-সন্ধ্যার হরতাল কর্মসূচী শান্তিপূর্ণভাবে সর্বাত্মক সফল করায় সকল স্তরের নগরবাসীর প্রতি অভিনন্দন জানান।