মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ক্ষুধা, দারিদ্র, ও বৈষম্যমুক্ত গণতান্ত্রিক এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে দলমত নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিমের পরিচালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান মুসা ও কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা প্রমুখ।
মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, সাম্য, মানবিক মর্যাদা, অবাধ গণতন্ত্র ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্যই আমরা মরণপন যুদ্ধ করে স্বাধীনতা অর্জন করেছিলাম। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষের বোধ-বিশ্বাসের আলোকে শাসনকাজে ইসলামী আদর্শ অনুসৃত না হওয়ায় আমাদের স্বাধীনতা পুরোপুরি অর্থবহ হয়ে ওঠেনি। এদেশের ৯০ ভাগ মানুষ মুসলমান হলেও কুরআন-সুন্নাহর আলোকে শাসনতন্ত্র রচিত হয়নি। তাই অর্জিত স্বাধীনতাকে অর্থবহ করতে হলে আমাদেরকে ইসলামী আদর্শের দিকেই ফিরে আসতে হবে। তিনি শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ এবং তাদের রূহের মাগফিরাত কামনায় মহান আল্লাহ তা’য়ালার দরবারে দোয়া করেন ।
তিনি বলেন, মানবসভ্যতার গতিধারায় বারবার প্রমাণিত হয়েছে যে, মানবরচিত মতবাদ কখনো মানুষের জন্য কল্যাণকর হয় না। বিশ্ববাসী সমাজতন্ত্র ও সাম্যবাদ সহ বিভিন্ন তন্ত্রমন্ত্রের শাসন দেখেছে। এসব মানবরচিত আদর্শ মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করেছে। কেড়ে নিয়েছে গণমানুষের অধিকার। এরাই লাগামহীন ভোট চুরির মাধ্যমে দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এদের কারণেই দেশে পবিত্র রমজান মাসেও দ্রব্যের মূল্য বিষ্ফোরণ ঘটেছে। তাই এসব অবিচারের প্রবক্তাদের আর সময় দেয়া যায় না। তিনি অসৎ ও অযোগ্য নেতৃত্বের পরিবর্তে সৎ ও যোগ্য লোকের শাসন প্রতিষ্ঠায় সকলকে জামায়াতে ইসলামীর পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
তিনি বলেন, জামায়াতই এদেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে সফল ও স্বার্থক রাজনৈতিক দল। আমরা প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে গণমানুষের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে এসেছি। জামায়াত মানুষের কল্যাণে নানাবিধ কর্মসূচি গ্রহণ করেছে। আমরা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় হাসপাাতাল, স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও দাতব্য চিকিৎসালয়,লাশবাহী এম্বুলেন্সসহ বিভিন্ন জনহিতকর প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করে আর্ত-মানবতার কল্যাণে সাধ্যমত প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।মানুষের জন্য আমাদের এই কল্যাণকামীতা আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে-ইনশাআল্লাহ। মূলত, স্বাধীনতাকে স্বার্থক ও অর্থবহ করতে এবং জনপ্রতিনিধিত্বশীল সরকার প্রতিষ্ঠায় আমাদেরকে চলমান সংগ্রাম অব্যাহত রাখেতে হবে। তিনি জনগণের অধিকার আদায় ও ভোটাধিকার পূণঃপ্রতিষ্ঠায় দলমত নির্বিশেষে সকলকে রাজপথে সোচ্চার হওয়ার আহবান জানান।