বাংলাদেশ জামায়াত ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহা. রেজাউল করিম বলেছেন, সরকার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে দলন-পীড়নের পথ বেছে নিয়েছে। সে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবেই বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদ ও আমীরে জামায়াত মকবুল আহমাদ এবং সেক্রেটরি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমানসহ নেতৃবৃন্দকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু জুুলুম-নির্যাতন চালিয়ে অতীতে কোন ফ্যাসীবাদী ও স্বৈরাচারি শক্তির শেষ রক্ষা হয়নি, আর আওয়ামী লীগেরও হবে না। তিনি জামায়াতের শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান এবং অবিলম্বে আটককৃতদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন। অন্যথায় সরকারকে গণরোষের মুখোমুখী হতে হবে।
তিনি আজ রাজধানীতে কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ কর্মসূচীর অংশ হিসেবে আমীরে জামায়াত মকবুল আহমাদ ও সেক্রেটারি জেনারেল ডা. শফিকুর রহমান সহ ৯ নেতার গ্রেফতারের প্রতিবাদে এবং অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত এ বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। বিক্ষোভ মিছিলটি উত্তর বাড্ডা থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর সহকারি সেক্রটারি লস্কর মোহাম্মদ তসলিম ও মাহফুজুর রহমান, শিবিরের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় মজলিশে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ঢাকা মহানগরীর মজলিশে শুরা সদস্য ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, মোস্তাফিজুর রহমান, ডা. শফিউর রহমান, আবুল হাসান, হোসাইন আহমদ, আলাউদ্দীন, নাসির উদ্দীন, আনোয়ারুল করিম ও আব্দুল কাইয়ুম মজুমদার, জামায়াত নেতা আতিকুর রহমান, সাইফুল ইসলাম ও ফেরদৌস, ছাত্রনেতা মুজাহিদুল ইসলাম ও সজীব প্রমূখ। বিক্ষোভ সমাবেশ শেষ হলে পুলিশ সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে ৬ পথচারীকে আটক করে।
ড. এম আর করিম বলেন, জামায়াত একটি নিয়মতান্ত্রিক, গণতান্ত্রিক, সাংবিধানিক ও বৈধ রাজনৈতিক সংগঠন। জামায়াত দলীয় কার্যক্রম পরিচালনায় দেশের আইন, সংবিধান ও প্রচলিত নিয়ম অনুসরণ করে আসছে। কিন্তু পুলিশ সম্পূর্ণ ন্যাক্কারজনকভাবে আমীরে জামায়াতের নেতৃত্বে ঘরোয়া বৈঠক চলাকালে তিনিসহ কেন্দ্রীয় নেতৃব্ন্দৃকে গ্রেফতার করেছে। যা আইনের শাসন, মানবাধিকার ও রাষ্ট্রীয় সংবিধানের মারাত্মক লঙ্ঘন। তিনি সরকারকে বিরাজনীতিকরণের পথ পরিহার করে গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক শাসনে ফিরে আসার আহবান জানান। অন্যথায় জনগণ ফ্যাসীবাদী সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলবে।
তিনি বলেন, সরকার দেশকে নেতৃত্বশুণ্য করে করদরাজ্য বানানোর জন্যই দেশপ্রেমী জাতীয় নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। এ সরকারের আমলেই জামায়াতকে নেতৃত্ব শূন্য করার জন্য পরিকল্পিতভাবে শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে ফরমায়েসীবাদী বাদী, সাজানো সাক্ষী ও দলীয় প্রসিকিউশনের মাধ্যমে বিচারের নামে প্রসহন করে সাবেক অমীরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক সেক্রটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সাবেক সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আব্দুল কাদের মোল্লা এবং সাবেক কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীকে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে। কিন্তু নেতৃবৃন্দকে হত্যা করে, জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে জামায়াতের অগ্রযাত্রা অতীতে রুদ্ধ করা যায়নি আর কখনো যাবেও না। তিনি সরকারের গণবিরোধী ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় দলমত, ধর্মবর্ণ নির্বিশেষে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।