পবিত্র মাহে রমযান ও বদরের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে অগণতান্ত্রিক, স্বৈরাচারি ও ফ্যাসীবাদী সরকারের বিরুদ্ধে দলমত নির্বিশেষে সকলকে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড.মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
তিনি আজ সকালে রাজধানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত পবিত্র মাহে রমযানের পবিত্রতা রক্ষা, দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, অশ্লিলতা, বেহায়াপনা ও নগ্নতা বন্ধের দাবিতে এক বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে এসব কথা বলেন। বিক্ষোভ মিছিলটি মিরপুর ১ নং গোল চত্তর থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে টেকনিক্যালে এসে সংক্ষিপ্ত পথসভার মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দীন মোল্লা ও ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য জিয়াউল হাসান, ইয়াছিন আরাফাত, মাওলানা মুহিব্বুল্লাহ ও মুহাম্মদ জামাল উদ্দীন এবং ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য মু. আতাউর রহমান সরকার ও নাসির উদ্দীন, ছাত্রনেতা সালাহ উদ্দীন ও আসাদুজ্জামান প্রমূখ।
ড. রেজাউল করিম বলেন, পবিত্র মাহে রমযান এক মহিমান্বিত ও বরকতপূর্ণ মাস। এই মাসেই বিশ্বমানবতার মুক্তির সনদ মহাগ্রন্থ আল কুরআন নাযিল হয়েছে। এই মাস শুধু মুসলমানদের কাছে নয় বরং সকল ধর্মের মানুষের কাছেই মহাসম্মানের। কিন্তু বিনাভোটের সরকারকে জনগণ ভোট দেয়নি বলেই তারা জনগণকে না খেয়ে মারার জন্যই এই মোবারক মাসে পরিকল্পিতভাবে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধগতি ঘটিয়েছে। সরকারের মন্ত্রীরা খেজুরের পরিবর্তে বরই দিয়ে ইফতারের কথা বলে জনগণের সাথে নির্মম তামাশায় লিপ্ত হয়েছেন। তাই এসব গণধিকৃত, অথর্ব ও অবৈধ মন্ত্রীদের অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। কারণ, দেশের ৯৬% জনগণ এই সরকারকে ‘না’ বলে বলে দিয়েছে। তাই এই বিনাভোটের সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোন অধিকার নেই বরং তাদেরকে জনগণের তোপের মুখেই অপমানজনকভাবে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হবে। তিনি অবৈধ ও গণবিরোধী সরকারের পতনের লক্ষ্যে সকলকে রাজপথে আপোষহীন থাকার আহবান জানান।
তিনি বলেন, সরকার অবৈধ ক্ষমতালিপ্সা চরিতার্থ করার জন্যই দেশকে অপরাধ ও অপরাধীদের অবাধ বিচতরণ ক্ষেত্রে পরিণত করেছে। তারা জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় ও সিলেট সহ পুরো দেশকে নারী নির্যাতনের অভয়ারণ্যে পরিণত করে জাতিকে কওমে লুতের উত্তরসূরি বানানোর গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। দেশ চলছে ভিন্ন রাষ্ট্রের নির্দেশনায়। আওয়ামী লীগ দেশকে নেতৃত্বশূণ্য করে অবৈধ ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার জন্যই মানবতার ফেরিওয়ালা খ্যাত আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান ও সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল ও মজলুম জননেতা এটিএম আজহারুল ইসলাম এবং বরণ্যে আলেম- উলামাদের সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে কারা নির্যাতন চালাচ্ছে। কিন্তু হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য চালিয়ে এবং জুলুম-নির্যাতন করে বাকশালী সরকারের শেষ রক্ষা হবে না। তিনি অবিলম্বে আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ ও কারাবন্দী সকল আলেম-উলামার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
তিনি আরো বলেন, ফিলিস্তিনের গাজায় ইতিহাসের নির্মম ও নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ চলছে। প্রতিদিনই মজলুম ফিলিস্তিনীদের রক্তে রঞ্জিত হচ্ছে গাজার রাজপথ। তাই ইতিহাসের এই নিষ্ঠুর হত্যাযজ্ঞ বন্ধে মুসলমানদেরকে ইস্পাত কঠিন ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। অবিলম্বে গণহত্যা বন্ধে জাতিসংঘ, কমনওয়েলথ, আবরলীগ ও ওআইসি সহ বিশ্বসংস্থাগুলোকে কার্যকর ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি গাজায় হত্যা বন্ধে বিশ্ব মুসলিম এক প্লাট ফরমে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান। অন্যথায় জায়নবাদীরা আরো বেপরোয়া হয়ে উঠবে।