‘পবিত্র ঈদ-উল-আযহা’র প্রকৃত শিক্ষা রাষ্ট্রীয়, সমাজ ও ব্যক্তিজীবনে প্রতিফলন ঘটিয়ে শোষণ ও বঞ্চনামুক্ত কল্যাণমুখী সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তর আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। পবিত্র ঈদ-উল-আযহা উপলক্ষ্যে নগরবাসীর উদ্দেশ্যে আজ এক শুভেচ্ছা বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।
মহানগরী আমীর বলেন, পবিত্র ‘জিলহাজ্জ’ মাস এক মহামহিমান্বিত ও বরকতপূর্ণ মাস। এ মাসেই মুসলিম জাতির পিতা হযরত ইব্রাহীম (আ.) আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নির্দেশে স্বীয় পুত্র হযরত ঈসমাইল (আ.) কে কোরবানি করতে প্রয়াসী হয়েছিলেন। যা সৃষ্টির আদিকাল থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত নজীরবিহীন। হযরত ইব্রাহীম (আ.)এর আদর্শ অনুসরণেই মুসলিম উম্মাহ দিবসটিকে পবিত্র ঈদুল আযহা হিসাবে পালন করে আসছে। তিনি মহিমান্বিত এই মাসে প্রিয় পুত্র ঈসমাঈল (আ.)কে কোরবানি করতে গিয়ে মহান আল্লাহর নির্দেশ পালনার্থে যে ত্যাগের নজরানা পেশ করেছিলেন তা শত-সহস্র বছর পরেও মুসলিম উম্মাহর জন্য অনুকরণীয় ও অনুসরণীয় আদর্শ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত আছে এবং কেয়ামত পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে।
তিনি বলেন, জাগতিক লোভ-লালসা ও কামনা-বাসনার উপর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করে প্রবৃত্তির উপর বিজয় অর্জনই ঈদুল-আযহার প্রকৃত শিক্ষা। অন্যায়-অসত্য, অনাচার-পাপাচার, হিংসা-বিদ্বেষ, জুলুম-নির্যাতন, বিভেদ-বিসংবাদ বন্ধ করে সমাজে সার্বিক শান্তি প্রতিষ্ঠা করে মানবজাতির প্রকৃত কল্যাণ সাধন করা পবিত্র ঈদ-উল-আযহার উদ্দেশ্য। এ উদ্দেশ্য যখন সাধিত হয়, তখনই আমাদের জন্য ঈদ আনন্দঘন ও অর্থবহ হয়ে ওঠে। প্রতি বছরের ন্যায় এবারও আমাদের মাঝে পবিত্র ঈদ-উল আযহা ফিরে আসলেও দেশের মানুষ ঈদের অবারিত আনন্দ থেকে বঞ্চিত। বস্তুত রাষ্ট্রশক্তি পশুশক্তি দমনের পরিবর্তে নিজেরাই সকল অপশক্তিকেই রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও জুলুম-নির্যাতনের মাধ্যম জনজীবনকে দুর্বিসহ করে তোলা হচ্ছে। যা স্বাধীন দেশে কারো কাম্য নয়।
তিনি আরও বলেন, সরকার দেশ পরিচালনায় সার্বিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তারা জনগণকে সুশাসন উপহার দিতে পারেনি। সরকার গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো ধবংস করার পর গণমানুষের শেষ ভরসাস্থল বিচার বিভাগ ধবংসের আত্মঘাতি খেলায় মেতে উঠেছে। দেশের উচ্চ আদালতের রায় মনপুত না হওয়ায় তারা আদালতকে বিষোদগার করে নিজেদের স্বৈরাচারি ও বাকশালী চেহারা জাতির সামনে উন্মুক্ত করেছে। তাই ঈদকে অর্থবহ, আনন্দঘন ও সর্বজনীন করতে দেশে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ, সাংবিধানিক ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই। তিনি পবিত্র ঈদ-উল আযহার প্রকৃত শিক্ষা ধারণ করে দেশে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে বেগবান করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালানোর আহবান জানান এবং পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষ্যে সকল স্তরের নগরবাসীর প্রতি শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন।