‘সরকার দেশ থেকে ইসলাম ও ইসলামী মূল্যবোধ ধ্বংস এবং নিজেদের অবৈধ ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতেই আল্লামা দেলওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ জামায়াত নেতৃবৃন্দকে কারারুদ্ধ করে রেখেছে’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর জনাব মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে কেন্দ্র ঘোষিত দোয়া দিবস উপলক্ষ্যে প্রখ্যাত মুফাসসিরে কুরআন ও সাবেক জাতীয় সংসদ সদস্য আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীসহ কারাবন্দী জামায়াত নেতৃবৃন্দের আশু মুক্তির লক্ষ্যে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত এক দোয়া মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন। দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তর সেক্রেটারি ড. মুহা. রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি লস্কর মোহাম্মদ তাসলিম, মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য ইবনে কারীম আহমদ মিঠু, মহানগরী শুরা সদস্য বেলায়েত হোসাইন সুজা ও মাহবুব আলম প্রমূখ।
জনাব সেলিম উদ্দিন বলেন, আল্লামা সাঈদী বিশ্ববরেণ্য আলেমে দ্বীন এবং অভিজ্ঞ পার্লামেন্টারিয়ান। কথিত যুদ্ধাপরাধ নয় বরং আল্লাহর জমিনে ওহী ভিত্তিক জ্ঞানের প্রচার ও প্রসার ঘটানোই ছিল তার প্রধান অপরাধ। সর্বোপরি তিনি আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠায় আপোষহীন। তিনি যে পুরোপুরি নির্দোষ তা তার প্রাণদন্ডের রায় ঘোষণার পর জনগণের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিক্রিয়া এবং শতাধিক মানুষের অকাতরে শাহাদাত বরণই প্রমাণ করে। তিনি আল্লামা সাঈদীসহ আটক জামায়াত নেতৃবৃন্দের মুক্তি এবং সরকারের জুলুম-নির্যাতনের শিকার হয়ে যে সব নেতা-কর্মী ও সাধারণ জনগণ নিহত হয়েছেন তাদের শাহাদত কবুলের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া করেন এবং নিহতদের শোক-সন্তপ্ত পরিবার পরিজন ও আহত, পঙ্গু এবং বিভিন্নভাবে যারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন তাদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। তিনি বলেন, আল্লামা সাঈদী একটি নাম; একটি ইতিহাস। তিনি বিশ্ব ইসলামী আন্দোলনের জীবন্ত কিংবদন্তী। গণমানুষের প্রাণ প্রিয় নেতা এবং কুরআনের ময়দানে এক অকুতোভয় সৈনিক। সরকার তার যোগ্যতা, জনপ্রিয়তা ও গ্রহণযোগ্যতায় ইর্ষাণি¦ত হয়ে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়েছে। সে ধারাবাহিকতায় সরকার তাকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে দীর্ঘদিন কারারুদ্ধে করে রেখে দেশ, জাতি ও ইসলামপ্রিয় মানুষকে তার মহান খেদমত থেকে বঞ্চিত করছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আল্লামা সাঈদী অবিলম্বে মুক্তি লাভ করবেন এবং গণমানুষের মাঝে ফিরে এসে যাবতীয় অন্যায়, অবিচার, নৈতিক অবক্ষয় ও পাপ-পঙ্কিলতার বিরুদ্ধে তার বজ্রকন্ঠ আবারও সোচ্চার হয়ে উঠবেন। তিনি আবারও পবিত্র কুরআনের দাওয়াত দিয়ে ঈমানদার সৎ মানুষ গড়ার কাজে আত্মনিয়োগ করবেন-ইনাশা আল্লাহ।
তিনি আরও বলেন, কথিত মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আল্লামা সাঈদীর বিচারের সরকারি উদ্যোগ বিশ্ব ইতিহাসের নিকৃষ্টতম মিথ্যাচার। স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে তার বিরুদ্ধে জনৈক ইব্রাহিম কুট্টি ও বিশাবালীর হত্যাকা-সহ যে সমস্ত ঘটনায় জড়ানো হয়েছে তার সাথে আল্লামা সাঈদীর দূরতম কোন সম্পর্ক ছিল না। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে নিহত ইব্রাহিম কুট্টির স্ত্রী সালেহা কুট্টি তার স্বামী হত্যার অভিযোগে এফআইআর করলেও সেখানে আল্লামা সাঈদীর নাম ছিল না। মূলত পাতানো মামলা, সাজানো সাক্ষী ও দলীয় প্রসিকিউশনের মাধ্যমে পবিত্র কুরআনের এই খাদেমকে আমৃত্যু কারাদ- প্রদান করায় বিশ্ববিবেক স্তম্ভিত। তিনি দন্ডাদেশ বাতিল করে অবিলম্বে এই বর্ষীয়ান মুফাসসিরে কুরআনের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন এবং তার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে বলে দৃঢ় প্রত্যয় ঘোষণা করেন। তিনি দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, ইসলাম ও গণতন্ত্র রক্ষায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহবান জানান।