স্বৈরাচারি আওয়ামী লীগ সরকার জনগণের ভোটাধিকার ও রাষ্ট্রের মালিকানা নির্মমভাবে কেড়ে নিয়ে দেশকে প্রজাতন্ত্রের পরিবর্তে বাকশালতন্ত্রে পরিণত করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা এ টি এম মা’ছুম।
তিনি আজ ঢাকায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত সংগঠনের রুকনপ্রার্থী ও অগ্রসরকর্মীদের এক ভার্চুয়াল শিক্ষা শিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমীর আব্দুর রহমান মূসার সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমানের পরিচালনায় শিক্ষাশিবিরে বিষয়ভিত্তিক আলোচনা রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরীর উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি নাজিম উদ্দীন মোল্লা এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ড. মাওলানা হাবিবুর রহমান প্রমূখ।
মাওলানা এটিএম মা’ছুম বলেন, সংবিধান অনুযায়ি দেশের জনগণ ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে নিজেদের পছন্দমত শাসক নির্বাচিত করার অধিকারী। কিন্তু আওয়ামী বাকশালীরা গণমানুষের সে অধিকার পরিকল্পিতভাবে কেড়ে নিয়েছে। মালিককে পরিণত করা হয়েছে প্রজায়। আমাদেরকে দাসানুদাসে পরিণত করার গভীর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। তারা আমাদেরকে চিরতরে পরাধীন বানাতে চায়। তারা এই দেশে অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আধিপত্য বিস্তার করে দেশকে দাসানুদাস ও করদরাজ্য বানানোর চক্রান্তে লিপ্ত। তাই আওয়ামী বাকশালীদের ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় দেশপ্রেমী ও ইসলামী মূল্যবোধে বিশ্বাসীদের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। তিনি দেশ ও জাতিস্বত্ত্বাবিরোধী ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় সকলকে এক মঞ্চে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
তিনি বলেন, মুসলিম উম্মাহ এক মহাক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। মুসলমানদেরকে পরিকল্পিতভাবে বিভক্ত করার কারণেই বিশ্বে এখন ৫৭ টি মুসলিম রাষ্ট্র। মুসলমানরা ঐক্যবদ্ধ না থাকার কারণে গোটা বিশ্বের মুসলিমবিরোধী শক্তির মাতম চলছে। প্রতিটি জনপদেই মুসলমানরা নির্যাতিত ও অধিকারহারা। সে ধারাবাহিকতা থেকে আমাদের দেশও আলাদা নয়। দেশে, জাতিস্বত্ত্বা ও আধিপত্যবাদী শক্তির যৌথ প্রযোজনায় দেশকে গোলাম বানানোর ষড়যন্ত্র বাস্তবায়নের কাজ চলছে। তাই এই অবস্থা থেকে দেশ ও জাতিকে বাঁচাতে হলে ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। কারণ, যারা প্রকৃত পক্ষে আল্লাহর হতে পারেন, তারাই দেশকে তাবেদারী ও গোলামী মুক্ত করতে সক্ষম। তিনি আল্লাহর দেওয়া বিধান অনুযায়ি আত্মগঠন ও আদর্শ সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য সকলকে জামায়াতবদ্ধ জীবন গঠনের আহবান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে আব্দুর রহমান মূসা বলেন, আল্লাহ তা’য়ালা আমাদেরকে খিলাফতের দায়িত্ব দিয়ে দুনিয়াতে প্রেরণ করেছেন। এই দায়িত্ব আমাদেরকে যথাথথভাবে এই দায়িত্ব পালন করতে হবে। এই দায়িত্ব পালনের জন্য আমাদেরকে আত্মগঠনে মনোনিবেশ করতে হবে। ইসলামের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণের জন্য নিজেদের জ্ঞানভা-ারকে সমৃদ্ধ করতে হবে। প্রত্যেককে পালন করতে হবে দায়ী ইলাল্লাহ হিসাবে যথাযথ ও কার্যকর ভূমিকা। মূলত, আপনারাই হচ্ছেন ইসলামী আন্দোলনের আগামী দিনের উত্তরসূরি। আর আপনাদের হাতে ইসলামের বিজয়ের পতাকা উড্ডীন হবে ইনশাআল্লাহ। তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠার কাজকে তরান্বিত করার জন্য সকলকে বাইআত গ্রহণের আহবান জানান।
ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, ইসলামী আন্দোলনের জন্য কর্মীরাই সংগঠনের মূল শক্তি। তাই আল্লাহর জমীনে ইসলামকে বিজয়ী আদর্শ হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করতে হলে কর্মীদের অবশ্যই কঠোর পরিশ্রমী হতে হবে। লক্ষ্য বাস্তবায়নে হতে হবে আপোষহীন ও দৃঢ় প্রত্যয়ী। নিজেদেরকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির জ্ঞানে সমৃদ্ধ করতে হবে। নেতৃত্বের গুণাবলী ও যথাযথ জ্ঞান অর্জনের জন্য কুরআন, হাদিস ও ইসলামী সাহিত্য বেশি বেশি অধ্যয়ন করতে হবে। প্রতিটি ঘরে ঘরে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাতে হবে। উপেক্ষা করতে হবে সকল প্রকার বাধা-প্রতিবন্ধকতা। তাহলেই ইসলামের বিজয় অনিবার্য হয়ে উঠবে।