জনগণ সরকারের পাতানো, সাজানো ও ডামী নির্বাচন ‘না’ বলে এবং স্বতঃস্ফূর্তভাবে ভোটদান বিরত থেকে স্বৈরাচারি ও বাকশালী সরকারকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম।
তিনি আজ রাজধানীতে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত প্রহসন ও ডামী নির্বাচন বাতিল করে অবিলম্বে কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে নির্বাচনের নতুন তারিখ ঘোষণার দাবিতে রামপুরা-মালিবাগ সড়কে গণসংযোগ ও লিফলেট বিতরণকালে এসব কথা বলেন। কর্মসূচিতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ও প্রচার এবং মিডিয়া সম্পাদক মু. আতাউর রহমান সরকার, ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য এম কে খন্দকার, আবু সাদিক, কলিম উল্লাহ ও ইঞ্জিনিয়ার জাহাঙ্গীর আলম প্রমূখ।
ড. রেজাউল করিম বলেন, গত ৭ জানুয়ারি দেশে কোন নির্বাচন হয়নি বরং হয়েছে মাফিয়া সরকারের চর দখলের মহড়া। কথিত এই নির্বাচনে সরকারি দলের কোন প্রতিপক্ষ ছিল না বরং স্বতন্ত্র প্রার্র্থীর নামে দলীয় প্রার্থী দিয়ে নির্বাচন নির্বাচন প্রীতিম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই নির্বাচনের ফলাফল ছিল পূর্ব নির্ধারিত। নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের পরাজয়ও ছিল রীতিমত আই ওয়াস। নিরপেক্ষ পর্যবেক্ষণ সংস্থা এই নির্বাচনে ২শতাংশ ভোটার উপস্থিতির কথা উল্লেখ করলেও কথিত নির্বাচন কমিশনের নামে ইন্তিকাল কমিশন ৪০ শতাংশ ভোটা উপস্থিতির কথা উল্লেখ করে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানকে জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়েছে। মূলত, রাজধানীর ভোট কেন্দ্রগুলো ছিল সারাদিনই ভোটার শূণ্য; সারাদেশেই ছিল একই চিত্র। খোদ প্রধান নির্বাচন কমিশনার স্বীকার করেছেন যে, কোন ভোট কেন্দ্রেই তিনি নৌকা ছাড়া অন্য কোন প্রার্থীর এজেন্ট দেখতে চাননি। এতেই প্রমাণিত হয় ৭ জানুয়ারি নির্বাচনের পুরো দেশকেই আওয়ামী রঙ্গশালায় পরিণত করা হয়েছে। তাই এই ফ্যাসীবাদী, বাকশালী ও ভোট ডাকাত সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোন অধিকার নেই। তিনি ভোট বর্জনের গণরায়কে সম্মান দেখিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ, কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নতুন নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার আহবান জানান। অন্যথায় দেশে গণতন্ত্র ও জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত জনগণ রাজপথ ছাড়বে না।
তারা বলেন, কথিত এই নির্বাচনে যেমন ডামী প্রার্থী ছিল ঠিক তেমনিভাবে বিভিন্ন কেন্দ্রে ডামী এজেন্টও লক্ষ্য করা গেছে। কোন কোন এজেন্ট নিজেদেরকে প্রতিদ্ব›দ্বী প্রার্থীদের প্রতিনিধি বলে দাবি করলেও কোন প্রার্থী বা কোন প্রতীকের প্রতিনিধি তা তারা নিজেরাই বলতে পারেন নি। বিভিন্ন কেন্দ্রে ভোটার উপস্থিতি দেখানোর জন্য বস্তি থেকে ভাড়াটিয়া ভোটার এবং অপ্রাপ্ত বয়স্কদের লাইনে দাঁড় করানো হয়েছে। প্রত্যেক কেন্দ্রেই ভোটারদের চেয়ে আওয়ামী আঁতেলদের উৎপাৎ ছিল চোখে পড়ার মত। ভোটার শূণ্য ভোট কেন্দ্রে চলেছে ভোট চুরির মহোৎসব। আর এর মাধ্যমে আওয়ামী বাকশালীদের নগ্ন চেহারা দেশ-জাতি ও আন্তর্জাতিক বিশে^র উম্মুক্ত হয়ে পড়েছে। আসলে সরকার কথিত নির্বাচনের নামে জনগণের মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকারের মারাত্মক লঙ্ঘন করেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও জাতিসংঘ সহ বিশে^র প্রভাবশালী দেশগুলো এই নির্বাচনকে অগ্রহণযোগ্য বলে মন্তব্য করেছে। মূলত, জনগণ স্বতঃস্ফূর্তভাবে নির্বাচনকে বর্জনের মাধ্যমে নিজেদের বিজয়ের এই মাইল ফলক স্পর্শ করেছে। এমতাবস্থায় দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই এই দানব সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করতে হবে। অন্যথায় আগামী দিনে মাফিয়াতন্ত্রীরা অগ্নিমূর্তি ধারণ করবে।