হজের নিবন্ধনের চূড়ান্ত সময় বেঁধে দিলেও তেমন সাড়া মেলেনি। গত সাত দিনে মাত্র পাঁচ হাজার ৪২০ জন নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। এতে গত এক মাসে মোট নিবন্ধন করেছেন মাত্র ১২ হাজার ১৫ জন হজযাত্রী। এখনো বাকি রয়েছে এক লাখ ১৫ হাজার ১৮৩ জনের কোটা। আগামী ১৪ দিনের মধ্যে বাধ্যতামূলকভাবে এসব হজযাত্রীদের নিবন্ধনের জন্য বলেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
চাঁদ দেখাসাপেক্ষে আগামী বছরের ১৬ জুন পবিত্র হজ অনুষ্ঠিত হবে। এ জন্য সৌদি সরকার এবার আগেভাগেই হজযাত্রীদের নিবন্ধনের তাগিদ দিয়ে চিঠি দিয়েছে। সে জন্য দেশেও হজযাত্রীদের নিবন্ধন শুরু হয়েছে। প্যাকেজ ঘোষণার পর ধর্ম মন্ত্রণালয় গত ১৫ নভেম্বর থেকে নিবন্ধন শুরু করে। সরকারি ও বেসরবারি দু’টি মাধ্যমেই নিবন্ধন শুরু হলেও হজযাত্রীদের তেমন একটা সাড়া মেলেনি। মোট এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের কোটার মধ্যে সরকারি কোটা রয়েছে ১০ হাজার ১৯৮ জনের এবং বেসরকারি কোটা রয়েছে এক লাখ ১৭ হাজার জনের। হজ নিবন্ধনের প্রথম দফায় শেষ সময় ছিল গত ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু সে সময় ২৬ দিনে মাত্র সাড়ে ছয় হাজার ধর্মপ্রাণ মানুষ চূড়ান্ত নিবন্ধন করেন।
এ পরিপ্রেক্ষিতে ধর্ম মন্ত্রণালয় থেকে ১০ ডিসেম্বর এক প্রজ্ঞাপন জারি করে বলা হয়, রাজকীয় সৌদি সরকারের সাম্প্রতিক সিদ্ধান্ত অনুসারে ২০২৪ সালের হজযাত্রীর চূড়ান্ত তালিকা আগামী ৭ জানুয়ারির মধ্যে সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ে পাঠাতে হবে। এ ছাড়া ২০২৪ সালের হজে মিনার তাঁবু এলাকাকে পাঁচটি জোনে এবং প্রতিটি জোনকে চারটি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত করা হয়েছে। আগে এলে আগে পাবেন ভিত্তিতে মিনায় তাঁবু বরাদ্দ প্রদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ জন্য এ বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে চূড়ান্ত হজযাত্রীর সংখ্যা পাওয়া না গেলে মিনায় কাক্সিক্ষত স্থানে তাঁবু পাওয়া যাবে না। সে ক্ষেত্রে মিনায় জামারাহর কাছের এলাকার পরিবর্তে দূরবর্তী নিউ মুজদালিফা ও পাহাড়ি এলাকায় তাঁবু গ্রহণ করতে হবে। এমন পরিস্থিতি এড়ানোর স্বার্থে আগামী ৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত হজযাত্রী নিবন্ধনের সময় চূড়ান্তভাবে বৃদ্ধির ঘোষণা দেয় ধর্ম মন্ত্রণালয়। একই সাথে প্রজ্ঞাপনে সব বেসরকারি এজেন্সিকে সতর্ক করে বলা হয়- এরপর আর সময় বাড়ানো হবে না। কিন্তু সাত দিনের হজযাত্রী নিবন্ধনের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ধর্ম মন্ত্রণালয় কড়া বার্তা দিলেও এখনো আশানুরূপ সাড়া পড়েনি। গত এক সপ্তাহে মাত্র পাঁচ হাজার ৪২০ জন নিবন্ধন করেছেন। এর মধ্যে সরকারি মাধ্যমে মাত্র ৩৩৫ জন এবং বেসরকারি এজেন্সির মাধ্যমে নিবন্ধন করেছেন পাঁচ হাজার ৮৫ জন। ফলে বর্তমানে মোট ১২ হাজার ১৫ জন হজের চূড়ান্ত নিবন্ধন সম্পন্ন করেছেন। এর মধ্যে সরকারি মাধ্যমে এক হাজার ৭৫১ জন এবং বেসরকারি মাধ্যমে করেছেন ১০ হাজার ২৬৪ জন। ফলে হজযাত্রী নিবন্ধনের এখনো বাকি রয়েছে এক লাখ ১৫ হাজার ১৮৩ জনের কোটা। আগামী ১৪ দিনের মধ্যে বাধ্যতামূলকভাবে এসব হজযাত্রীদের নিবন্ধনের জন্য বলেছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।
এ দিকে বিভিন্ন বেসরকারি এজেন্সি মালিকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, বর্তমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, জাতীয় নির্বাচন, এজেন্সি প্রতি ৫০০ হজযাত্রী বাধ্যতামূলক করা, হজে সুযোগ-সুবিধা নিয়ে অসন্তুষ্টি ইত্যাদি কারণে নিবন্ধন কার্যক্রমে এখনো গতি আসেনি। তা ছাড়া বিগত বছরগুলোতে একেবারে শেষ সময়ে এসে নিবন্ধন করার প্রবণতাও অন্যতম কারণ। বেঁধে দেয়া সময়ে কোটা পূরণ না হলে সময় বাড়ানো হতে পারে বলেও মনে করেন কোন কোন এজেন্সি মালিক।