বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, স্বাধীনতা ও মহান বিজয়ের অর্ধশতাব্দী অতিক্রান্ত হলেও আমাদের প্রাপ্তির ফিরিস্তি খুব একটা সমৃদ্ধ হয়নি। সাম্যের পরিবর্তে বৈষম্য, ন্যায়বিচারের পরিবর্তে অবিচার, আইনের শাসনের পরিবর্তে জুলুমবাজী এবং গণন্ত্রের পরিবর্তে স্বেচ্ছাতন্ত্র জাতির ঘাড়ে চেপে বসেছে। তিনি শহীদ বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন এবং তাদের মাগফিরাত কামনায় মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোওয়া ও মোনাজাত পরিচালনা করেন।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা মহানগরী উত্তরের উত্তরা পশ্চিম থানা আয়োজিত মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমীর মাজহারুল ইসলামের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন থানা নায়েবে আমীর আবু হোসেন, থানা কর্মপরিষদ সদস্য সহিদুল ইসলাম ও শাইখুল সাকিব প্রমূখ।
ড. রেজাউল করিম বলেন, একটি সুখী, সমৃদ্ধ, শোষণ ও বঞ্চনামুক্ত সমাজই ছিল স্বাধীনতা ও মহান বিজয়ের ইপ্সিত লক্ষ্য। কিন্তু সে প্রত্যাশা আজও অনেকটা অধরাই রয়ে গেছে। আমাদের অনেক পরে মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুরের মত এশিয়ার বিভিন্ন দেশ স্বাধীনতা অর্জন কলেও দেশগুলো অনেকদূর এগিয়েছে। স্বাধীনতার অর্ধশতাব্দী পরে এসে আমরা কতখানি এগিয়েছি এখন সে হিসাব মেলানোর সময় এসেছে। আর জাতিকে এগিয়ে নিতে আগামী ৫০ বছর কী ধরনের কর্মপন্থা গ্রহণ করতে হবে এখনই তা নির্ধারণের সময়। তাই আমাদেরকে আর বসে থাকার সুযোগ নেই বরং দেশ ও জাতিকে চলমান শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, দেশে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিচ্যুতির কারণেই আইনের শাসন প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি পায়নি। সংবিধানে সর্বশক্তিমান আল্লাহর ওপর আস্থা কথা বলা হলেও রাষ্ট্রাচারের কোন ক্ষেত্রেই সে প্রতিফলন নেই। মূলত, ইসলাম ও ইসলামী মূল্যবোধই হচ্ছে আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের রক্ষাকবজ। কিন্তু শাসকগোষ্ঠী বিভিন্ন তন্ত্রমন্ত্রের কথা বলে জনগণকে বিভ্রান্ত করে জাতিকে এক অনিশ্চিত গন্তব্যের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তারা নিজেদের অবৈধ ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার জন্যই একদলীয় ও বানরের পিঠাভাগের নির্বাচনের আয়োজন করে নির্লজ্জ প্রহসন শুরু করেছে। তাই দেশের গণতন্ত্র, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং জনগণের ভোট ও ভাতের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য এই স্বৈরাচারি ও ফ্যাসীবাদী সরকারের পতনের কোন বিকল্প নেই। তিনি নৈশ্যভোটে সরকারের পতন ও নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার দাবি আদায়ের লক্ষ্যে রাজপথে আন্দোলন জোরদার করতে দলমত নির্বিশেষে সকলের প্রতি আহবান জানান।