বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই দেশ ও জাতির স্বার্থকে উপেক্ষা করে এবং দেশের মানুষকে অন্ধকারে রেখে ভারতের সাথে একতরফা প্রতিরক্ষাসহ ১১ টি চুক্তি ও ২৪ টি সমঝোতা স্বাক্ষর করেছে। কিন্তু আমাদের নায্য দাবি তিস্তার পানি বন্টন নিয়ে কোন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়নি। যা সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতিরই পরিচয় বহন করে। তিনি ভারতে সাথে স্বাক্ষরিত সকল চুক্তি অবিলম্বে জনসমক্ষে প্রকাশ করার জোর দাবি জানান। অন্যাথায় সরকারকে একদিন জনগণের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
তিনি আজ রাজধানীতে প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে তিস্তাচুক্তি সহ দ্বিপাক্ষিক সমস্যা সমাধানে উপর্যুপরি ব্যর্থতা এবং নায্য কোন দাবি আদায় ছাড়াই প্রতিরক্ষাসহ ১১ টি চুক্তি ও ২৪ টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রতিবাদে কেন্দ্র ঘোষিত শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ কর্মসূচীর অংশ হিসাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত এক বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে একথা বলেন। বিক্ষোভ মিছিলটি কুড়িল বিশ্বরোড থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে যমুনা ফিউচার পার্কের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরীর সহকারি সেক্রেটারি লস্কর মো. তসলীম ও মাহফুজুর রহমান, ঢাকা মহানগরীর কর্মপরিষদ সদস্য মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন ও নাজিম উদ্দীন মোল্লা, ঢাকা মহানগরীর মজলিশে শুরা সদস্য মুস্তাফিজুর রহমান, সাইফুল ইসলাম, ইব্রাহীম খলিল, আনোয়ার হোসেন ও সালাহউদ্দীন, ছাত্রনেতা জামিল হোসেন, মুজাহিদুল ইসলাম ও মেহেদী প্রমূখ।
ড. করিম বলেন, ভারত বাংলাদেশের উজানে অভিন্ন ৫২ টি নদীতে অন্যায়ভাবে বাধ নির্মাণ ও একতরফা পানি প্রত্যাহার করার ফলে ইতোমধ্যেই দেশে মরুকরণ প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ভারতীয় সীমান্ত রক্ষীবাহিনী বিএসএফ সীমান্তে প্রতিনিয়ত পাখির মত বাংলাদেশী নাগরিক হত্যা করে চলেছে। কিন্তু সরকার এই ইস্যুতে রহস্যজনকভাবে নিরব। ভারতের সাথে আমাদের বণিজ্য ঘাটতি ক্রমেই বাড়ছে বৈ কমছে না। মূলত প্রধানমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক সকল সমস্যার সমাধানের কথা বলেই ভারত সফরে গিয়েছিলেন। কিন্তু তিনি দ্বিপাক্ষিক সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে জাতীয় স্বার্থকে জলাঞ্জলি দিয়ে যেসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছেন তার সাথে জাতীয় স্বার্থের কোন সম্পর্ক নেই বরং তা প্রতিবেশী দেশকেই একতরফা অনুকুল্য দিয়েছে। তিনি তিস্তার পানির নায্য হিস্যা আদায় সহ ভারতে সাথে সকল দ্বিপাক্ষিক সমস্যা সমাধানে সরকারকে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণের আহবান জানান।
তিনি বলেন, সরকার দেশ পরিচালনায় সার্বিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। তারা জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। হত্যা, সন্ত্রাস, নৈরাজ্য, গুম, অপহরণ ও গুপ্তহত্যা প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। সরকার নিজেদের অবৈধ ক্ষমতাকে চিরস্থায়ী করতেই দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংসের গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। তারা ইসলাম ও ইসলামীমূল্যবোধ ধ্বংশ করে নাস্তিক্যবাদ ও অপসংস্কৃতিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিচ্ছে। সে ধারাবাহিকতায় সরকার দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মঙ্গল সোভাযাত্রাকে বাধ্যতামূলক করে দেশের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর আগেব-অনুভূতির প্রতি আঘাত হেনেছে। তারা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে রাজনৈতিক ও আদর্শিভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে বিরোধী দলের উপর দলন-পীড়ন চালাচ্ছে। পরিকল্পিতভাবে বিরোধী দলীয় শীর্ষ নেতার একের পর এক হত্যা করা হচ্ছে। বিরাজনীতিকরণ কর্মসূচী বাস্তবায়নের জন্যই সারাদেশে সরকার দলীয় তান্ডব চলছে। তাই এই ফ্যাসীবাদী ও জুলুমবাজ সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন গণদুর্ভোগ বাড়বে বৈ কমবে না। তিনি সরকারের জুলুম-নির্যাতন মোকাবেলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান