বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের ভারপ্রাপ্ত আমীর বলেছেন, আওয়ামী লীগের অবৈধ ক্ষমতালিপ্সা দেশকে হানাহানী ও অনিশ্চিত গন্তব্যের মুখে ঠেলে দিয়েছে। তাই এই অগণতান্ত্রিক ও গণবিরোধী শক্তির হাত থেকে দেশ ও জাতিকে বাঁচাতে হলে বৃহত্তর জাতীয় ঐক্যের বিকল্প নেই। তিনি ঘোষিত তফসিল বাতিল, সরকারের পদত্যাগ ও কেয়ারটেকার সরকারের গণদাবি আদায়ের লক্ষ্যে দলমত নির্বিশেষে সকলকে রাজপথে অতন্ত্র প্রহরীর ভুমিকা পালনের আহবান জানান। অন্যথায় দেশকে ফ্যাসীবাদ মুক্ত করা যাবে না।
তিনি আজ রাজধানীতে কাফরুল-মোহাম্মদপুর অঞ্চল আয়োজিত এক ভার্চুয়াল রুকন সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি ও কাফরুল অঞ্চল পরিচালক ডা. ফখরুদ্দীন মানিকের সভাপতিত্বে এবং ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ও মোহাম্মদপুর অঞ্চল পরিচালক জিয়াউল হাসানের পরিচালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম। উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য অধ্যাপক আনোয়ারুল করিম, ডা. শফিউর রহমান ও মশিউর রহমান প্রমূখ।
আব্দুর রহমান মূসা বলেন, সরকার দেশ থেকে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করার জন্যই জাতীয় ঐক্যমতের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠিত কেয়ারটেকার সরকার পদ্ধতি বাতিল করেছে। তারা রাজনৈতিক ময়দানকে প্রতিপক্ষ শূণ্য করার জন্যই বিরোধী দলের ওপর দলন-পীড়ন চালাচ্ছে। সরকার মজলুম জননেতা আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ জাতীয় নেতাদের সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে কারাগারে অন্তরীণ রেখে পুরো দেশকেই প্রকারান্তরে বন্দীশালায় পরিণত করেছে। আওয়ামী ফ্যাসীবাদীরা দেশকে মেধা ও নেতৃত্বশূণ্য করার জন্য আমীরে জামায়াত ও বিশ^বরেণ্য আলেমে দ্বীন মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী সহ জামায়াতের শীর্ষনেতাদের পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে দেশকে বধ্যভূমিতে পরিণত করেছে। এমতাবস্থায় এই মাফিয়াদের হাত থেকে দেশকে বাঁচাতে হলে সকলকে ময়দানে অগ্রসৈনিকে ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি দ্বীন বিজয়ের লক্ষ্যে প্রতিটি মানুষের ঘরে দাওয়াত সম্প্রসারণের জন্য রুকনদের প্রতি আহবান জানান।
তিনি বলেন, সরকার জামায়াতকে রাজনৈতিক ও আদর্শিকভাবে মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়ে ন্যায়ভ্রষ্ট রায়ের মাধ্যমে দলের নিবন্ধন বাতিল করেছে। কিন্তু আওয়ামী লীগের মনে রাখা উচিত জামায়াত একটি আদর্শবাদী, গণমুখী, গণতান্ত্রিক ও জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল। জাতির যেকোন ক্রান্তিকালে এবং যেকোন দুর্যোগকালীন মূহুর্তে জামায়াতে ইসলামী নিজেদের শক্তি-সামর্থ উজার করে দিয়ে জনগণের পাশে থেকেছে। ফলে আমাদের শেকড় এখন অনেক গভীরে। তাই দলের নিবন্ধন বাতিল করে জামায়াতকে গণবিচ্ছিন্ন ও অগ্রযাত্রা বোধ করা যাবে না। তিনি সরকারকে প্রতিহিংসার রাজনীতি পরিহার করে অবিলম্বে জামায়াতের নিবন্ধন পুনর্বহালের আহবান জানান। অন্যথায় সরকারকে গণরোষে পড়তে হবে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেন, সরকারের জুলুম-নির্যাতন যত বাড়ছে রাজপথ ততই উত্তাল ও অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠছে। অবৈধ নৈশ্যভোটের সরকার আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তি, নৈশ্যভোটের সরকারের পদত্যাগ ও কেয়ারটেকার সরকারের দাবি আদায়ে জনগণ আজ রাজপথে আজ ঐক্যবদ্ধ। রাজপথে গণজোয়ার দেখে সরকার এখন ক্ষমতা হারানোর ভয়ে প্রমাদ গুণতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যেই তারা তারা বেসামাল ও অসংলগ্ন কথা বলতে শুরু করেছে। আর এক ধাক্কা দিতে পারলেই সরকারের কাঁচের ঘর ভেঙে চুরমার হয়ে যাবে। তিনি গণদাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সকলকে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানান।
সভাপতির বক্তব্যে ডা. ফখরুদ্দীন মানিক বলেন, সরকার সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান নির্বাচন কমিশনকে নিজেদের দলীয় কার্যালয়ে পরিণত করেছে। ফলে নির্বাচন কমিশন এখন রীতিমত প্রহসন কমিশনে পরিণত হয়েছে। এই দলদাস নির্বাচন কমিশনের অধীকে কোন নির্বাচন জনগণ মেনে নেবে না বরং যেকোন মূল্যে রুখে দেবে। তিনি জনমতের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে অবিলম্বে পুরো কমিশনকে পদত্যাগ করার আহবান জানান। অন্যথায় জনতার রুদ্ররোষে তাদেরকে বিদায় নিতে হবে।