আবারো একটি ঘূর্ণিঝড়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ সপ্তাহের শেষ দিকে সৃষ্টি হতে পারে এ ঘূর্ণিঝড়ের। আগামী ১ থেকে ২ ডিসেম্বরের মধ্যে এটি উপকূলে উঠে আসতে পারে। আগামী সপ্তাহের কোনো এক সময় বঙ্গোপসাগরের দ্বীপপুঞ্জ আন্দামান ও নিকোবরের আশপাশে একটি লঘুচাপ সৃষ্টির মাধ্যমে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টির সূচনা হতে পারে।
সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা ও এই অঞ্চলের সাব ট্রপিক্যাল জেট স্ট্রিমের কারণে লঘুচাপটি নিম্নচাপে পরিণত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এটা হতে পারে ২৫ থেকে ২৮ নভেম্বরের মধ্যে বলে জানিয়েছেন কানাডার সাসকাচুয়ান ইউনিভার্সিটির আবহাওয়া গবেষক মো: মোস্তফা কামাল পলাশ। তিনি বেশ কয়েকটি আবহাওয়া কেন্দ্রের ঘূর্ণিঝড়ের মডেল বিশ্লেষণ করে বলেন, প্রক্রিয়াটি আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হতে পারে এবং ডিসেম্বরের ১ থেকে ২ তারিখের মধ্যে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি উপকূলে উঠে যেতে পারে। প্রক্রিয়াটি মাঝপথে থেমে না গেলে এটি বাংলাদেশের বরিশাল ও চট্টগ্রাম উপকূল দিয়ে আঘাত হানতে পারে। উল্লেখ্য, আবহাওয়া একটি অনিশ্চয়তার (আনপ্রেডিক্টেবল) বিষয়। পূর্বাভাস দেয়ার আগেই যেকোনো সময় দিক বদল করে নিতে পারে অথবা দুর্বল হয়ে যেতে পারে অথবা পূর্বাভাসের আগেই খুবই অ্যাক্টিভ (কার্যকর) হয়ে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে এ ঘূর্ণিঝড়ের যে পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে তা আন্তর্জাতিক আবহাওয়া কেন্দ্রগুলোর মডেল অনুসরণ করে করা হয়েছে। পূর্বাভাসে যে তারিখ উল্লেখ করা হয়েছে, তা কাটায় কাটায় না মিললেও উল্লিখিত তারিখের কাছাকাছি সময়ে ঘূর্ণিঝড়টি হতে পারে অথবা সাগরেই বিলীন হয়ে যেতে পারে। এটা নির্ভর করবে সাগরে কী পরিমাণ শক্তি রয়েছে ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হওয়ার জন্য।
চলতি মাসের মধ্যেই যে সাগরে ঘূর্ণিঝড় হতে পারে তা ভারতীয় আবহাওয়া দফতর আইএমডিও দিয়েছে। আইএমডিকে উদ্ধৃত করে দ্য হিন্দু পত্রিকা লিখেছে, আগামীকাল শনিবার (২৫ নভেম্বর) দক্ষিণ আন্দামান সাগরে প্রক্রিয়াটির সূচনা হতে পারে এবং আগামী রোববার লঘুচাপ হতে পারে এবং ২৭ নভেম্বর দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর এবং আন্দামান সাগর সংলগ্ন এলাকায় নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। দ্য হিন্দু লিখেছে, অধিকাংশ আন্তর্জাতিক আবহাওয়া কেন্দ্রের মডেল পূর্বাভাসে বাংলাদেশের উপকূলের দিকে ঘূর্ণিঝড়টি অগ্রসর হতে পারে বলে উল্লেখ করেছে।
তবে এ সুনির্দিষ্ট গতিপথ জানতে আরো দুই থেকে তিন দিন সময় লাগবে। লঘুচাপ থেকে প্রক্রিয়াটি নিম্নচাপে পরিণত হলে এটা হবে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বিদায় নেয়ার পর চতুর্থ নম্বর নিম্নচাপ। ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হলে নাম হবে মিচাউং (মিগজাউম উচ্চারণ হবে)। এটা মিয়ানমার আবহাওয়া অফিসের দেয়া নাম।