বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের মহিলা বিভাগের সহকারি সেক্রেটারি উম্মে জামিনুর বলেছেন, বাস্তবজীবনে ইসলামের অনুসরণের অভাবেই নারী সমাজ তাদের নায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত। ফলে নারীরা এখন নির্যাতিত, নিগৃহীত ও অধিকার বঞ্চিত। মূলত ইসলামই নারী জাতিকে যথাযথ মর্যাদা দিয়েছে। তাই নারী সমাজের অধিকার সংরক্ষণ ও প্রতিষ্ঠায় ইসলামী আদর্শের দিকেই ফিরে আসতে হবে। তিনি নারীদেরকে ইসলামী আদর্শে জীবন গঠন করে দেশ ও জাতির কল্যাণে আত্মনিয়োগ করার আহবান জানান।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের মহিলা বিভাগ আয়োজিত আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষ্যে এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে একথা বলেন। আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য মার্জিয়া বিনতে রহমান, উম্মে জয়নাব ও মমতাজ আহমেদ প্রমূখ।
উম্মে জামিনুর বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন সৃষ্টির ধারাহিকতা ও ভারসাম্য রক্ষার জন্যই নর-নারীর সৃষ্টি করেছেন। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন নারীর নায্য অধিকার নিশ্চিত করেছেন। ইসলাম নারীদেরকে যে মর্যাদা দিয়েছে অন্য কোন ধর্মেই তা নিশ্চিত করা হয়নি বরং নারীদেরকে ভোগের সামগ্রী বানানো হয়েছে। তথাকথিত প্রগতিশীলদের নারী অধিকার নিয়ে সোচ্চার হতে দেখা গেলেও নারী সমাজ তাদের দ্বারা বেশী নিগ্রহের শিকার হন। এরা ইসলামকেই নারী অধিকারের প্রতিপক্ষ বানিয়েছে। অথচ ইসলামই নারী অধিকার ও সম্ভ্রমের অদ্বিতীয় রক্ষাকবজ। মূলত নারীরা পুরুষের অর্ধাঙ্গিনী ও একে অপরের পরিপূরক। কালামে হাকীমে নারী ও পুরুষকে পরস্পরের পোষাক হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে। তাই শান্তির সমাজ বিনির্মাণে নারী-পূরুষকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।
তিনি বলেন, নারীর সম্পৃক্ততা ছাড়া কোন ক্ষেত্রেই সাফল্য অর্জন করা সম্ভব নয়। সেই প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকেই নারীরা তাদের মেধা, মনন, প্রজ্ঞা, যোগ্যতা, শ্রম, কর্তব্যনিষ্ঠা ও মমতার সংমিশ্রণে সভ্যতার অগ্রযাত্রায় নিজেদেরকে অপরিহার্য প্রমাণ করেছেন। ইসলামের সুমহান আদর্শ প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদান রেখেছেন এবং হযরত সুমাইয়া (রা.) ইসলামের জন্য আত্মৎস্বর্গের মাধ্যমে ইসলামের প্রথম শহীদ হওয়ার সুমহান গৌরব অর্জন করেছেন। তাই নারী সমাজকে অতীতের ধারাবাহিকতা রক্ষায় ন্যায়-ইনসাফের ভিত্তিতে ইসলামী সমাজ বিনির্মাণে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। তিনি নারী সমাজকে ইসলামের সুশীতল ছায়াতলে আশ্রয় গ্রহণ করে নিজেদেরকে গৌরবান্বিত করার আহবান জানান।
তিনি আরও বলেন, দেশে অপশাসন-দুঃশাসন চলছে। রাজনৈতিক মত পার্থকের কারণে নারীরা হয়রানী ও জুলুম-নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন। রাষ্ট্রের শীর্ষপর্যায়ে নারীদের সরব পদচারণা হলেও সুশাসনের অভাবেই দেশের নারী সমাজ আজ অধিকার বঞ্চিত ও বিভিন্ন ক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার। দেশে নারী-নির্যাতন প্রতিরোধ আইন থাকলেও আইনের শাসনের অভাবে নারী নির্যাতনের ঘটনা ক্রমবর্ধমান। ফলে নারীরা সকল ক্ষেত্রেই অবমূল্যায়িত হচ্ছেন। নারীর ক্ষমতায়ন, ব্যবসা-বাণিজ্য, চাকরিসহ সকল পেশাতেই নারীরা উপেক্ষার শিকার হচ্ছেন। শুধু নারী সমাজই নয় বরং দেশে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠিত না থাকায় সকল শ্রেণির মানুষই এখন রাষ্ট্রীয় অনাচারের শিকার। তাই জাতির এই ক্রান্তিকাল থেকে উত্তরণের জন্য নারী-পূরুষসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস চালাতে হবে। তিনি অধিকার আদায়, জুলুম-নির্যাতন ও বৈষম্য মোকাবেলায় নারী সমাজকে ইসলামী আদর্শের আলোকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।