রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অব্যাহত দ্রব্যমূল্য ঊর্ধ্বমুখীতে দেশের মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। মূল্যস্ফীতির বাড়ায় পিষ্ট দেশের সাধারণ ও খেটে খাওয়া মানুষ। গ্রাম ও শহরে কেউ ভালো নেই। গড়ে সাড়ে ১২ শতাংশের বেশি মূল্যস্ফীতি খাদ্য খাতে গ্রাম ও শহরে। গত অক্টোবরে সরকারি হিসাবে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে ৯.৯৩ শতাংশ। আর খাদ্য খাতে এই হার বেড়ে ১২.৫৬ শতাংশে রেকর্ড গড়েছে। যা গত বছরের এই সময়ে ছিল ৮ দশমিক ৫০ শতাংশ। খাদ্য বহির্ভূত খাতে ৮.৩০ শতাংশ বলে পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) গতকাল রাতে প্রকাশিত সর্বশেষ তথ্য থেকে জানা গেছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) মূল্যস্ফীতি নিয়ে চলতি বছরের অক্টোবর মাসের ভোক্তা মূল্যসূচকের (সিপিআই) হালনাগাদ তথ্য প্রকাশ করেছে। তাতে মূল্যস্ফীতির এ চিত্র দেখা গেছে। বিবিএসের হালনাগাদ তথ্যে দেখা গেছে, গত সেপ্টেম্বর মাসে খাদ্যে মূল্যস্ফীতি হয়েছে ১২.৩৭ শতাংশ। আগস্টে ছিলে ১২.৫৪ শতাংশ। ২০২০ সালে খাদ্য খাতে ১০০ টাকার পণ্যে ৫ টাকা ৫৬ পয়সা বৃদ্ধি হয়েছিল, একই পণ্যে ২০২৩ সালের অক্টোবর মাসে বাড়তি ১২ টাকা ৫৬ পয়সা দিতে হচ্ছে।
গ্রামে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার অক্টোবর মাসে বেড়ে ৯.৯৯ শতাংশে এসেছে, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ৯.৭৫ শতাংশ। খাদ্য খাতে এই হার ১২.৫৩ শতাংশ হয়েছে, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ১২.৫১ শতাংশ। আর খাদ্য বহির্ভূত খাতে ৭.৪২ শতাংশ থেকে বেড়ে অক্টোবর মাসে ৮.০১ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। আর শহরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি অক্টোবর মাসে বেড়ে ৯.৭২ শতাংশ হয়েছে, যা সেপ্টেম্বরে ছিল ৯.২৪ শতাংশ। খাদ্য খাতে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি পেয়ে ১২.৫৮ শতাংশ হয়েছে, যা আগের মাসে ছিল ১২.০১ শতাংশ। অন্য দিকে খাদ্য বহির্ভূত খাতে মূল্যস্ফীতির হার ৮.১২ শতাংশ থেকে বেড়ে অক্টোবর মাসে ৮.৫০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে।
এ দিকে চলতি ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সরকার মূল্যস্ফীতি সাড়ে ৬ শতাংশের মধ্যে রাখার পরিকল্পনা নিয়েছে। কিন্তু চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে গড় মূল্যস্ফীতি ৯ দশমিক ৭৪ শতাংশের মধ্যে। অক্টোবর মাসে সাধারণ মূল্যস্ফীতির হার বেড়ে হয়েছে ৯ দশমিক ৯৩ শতাংশ, সেপ্টেম্বর মাসে এ খাতে মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৬৩ শতাংশ।
মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধি প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানকে ফোনে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ও ডিম ডিস্টার্ব করেছে। এই কারণে মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। তবে একটা ভালো দিক মূল্যস্ফীতি লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে না। ধীরে ধীরে বাড়ছে। তারপরও আমরা এটা চাই না। তিনি বলেন, আগামী মাসে কৃষকের ঘরে ঘরে আমন ধান উঠবে, তখন মূল্যস্ফীতি কমবে।
তবে গত সেপ্টেম্বরে পরিকল্পনামন্ত্রী মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির ব্যাপারে বলেছিলেন, মূল্যস্ফীতি বেড়েছে, এটাকে অ্যাড্রেস করার চেষ্টা করব। শিগগিরই এটা কমানোর চেষ্টা করব। আগস্টে মূল্যস্ফীতির নায়ক মুরগি ও ডিম। এবার আলু ও ডিমকে দায়ী করলেন।