বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহা. রেজাউল করিম বলেছেন, যে জাতি যত উন্নত সে জাতির শিক্ষা ব্যবস্থা ততই উন্নত। তাই একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় জাতিকে সুশিক্ষিত ও যোগ্যতর করে গড়ে তোলার কোন বিকল্প নেই । আমরা সে উদ্দেশ্যকে সামনে রেখেই মেধাবী ও বিত্তহীন শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবৃত্তি প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। আশা করি সীমিত পরিসরে হলেও শিক্ষার্থীরা এর মাধ্যমে উপকৃত হবে। তিনি সুশিক্ষিত জাতি ও বুদ্ধিভিত্তিক সমাজ গঠনে সরকার সহ সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আশার আহবান জানান।
তিনি আজ রাজধানীর মগবাজারে শহীদ আব্দুল কাদের মোল্লা মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের হাতিরঝিল থানা পশ্চিম আয়োজিত বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ ও মাদরাসায় অধ্যয়নরত মেধাবী ও অস্বচ্ছল শিক্ষার্থীদের মাঝে শিক্ষাবৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমীর মুহাম্মদ আতাউর রহমান সরকারের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি ইউসুফ আলী মোল্লার পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন জামায়াত নেতা সুলতান মাহমুদ, থানা সমাজ কল্যাণ সম্পাদক গোলাম মাওলা ও রমনা থানা শিবির সভাপতি মেহেদী হাসান প্রমূখ।
ড. এম আর করিম বলেন, জাতিকে সুশিক্ষিত করে গড়ে তোলার দায়িত্ব কোন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর নয়। মূলত এ দায়িত্ব পুরোপুরি রাষ্ট্রের। কিন্তু রাষ্ট্রের নির্লিপ্ততা ও উদাসীনতার কারণেই স্বাধীনতার প্রায় ৫ দশক অতিক্রান্ত হলেও আমরা এখন সে লক্ষ্যে পৌঁছতে সক্ষম হয়নি। ঔপনিবেশিক আমলের শিক্ষা ব্যবস্থা এখনও আমাদের দেশে চালু আছে। স্বাধীনতার পর জাতীয় কারিকুলামে বারবার পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও পরিমার্জন হলেও শিক্ষা ব্যবস্থা এখনও সেই সনাতনী ধারা থেকে বেড়িয়ে আসতে পারেনি। ফলে প্রচলিত শিক্ষাব্যবস্থা যোগ্য নাগরিক তৈরিতে খুব একটা সহায়ক হচ্ছে না। তাই আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে যুযোপযোগী করে ঢেলে সাজানোর সময় এসেছে। দেশের কোন নাগরিকই যাতে শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হোন সেদিকেও গুরুত্ব দেয়াও জরুরি। মূলত দেশের শিক্ষাব্যবস্থা সহ সকল সেক্টরকে গণমুখী ও সময়োপযোগী করতে দেশকে কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার কোন বিকল্প নেই। তিনি দেশকে কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার সংগ্রামে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
তিনি বলেন, সরকার গণতন্ত্রের নামে জনগণের সাথে তামাশা শুরু করে দিয়েছে। সদ্য সমাপ্ত খুলনা ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনই তার জ্বলন্ত প্রমাণ। এসব নির্বাচনে তারা অভিনব কায়দায় ভোট ডাকাতির মাধ্যমে দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করেছে। আজকের রাজশাহী, সিলেট ও বরিশালের নির্বাচনেও সরকার দলীয় নেতাকর্মীরা চর দখলের মত ভোট কেন্দ্র দখল করে নিয়ে সরকারি দলের প্রার্থীর অনুকুলে গণহারে সিল মারছে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীও সরকার দলীয় প্রার্থীর অনুকুলে কাজ করছে। ফলে চলমান নির্বাচন রীতিমত প্রহসনে পরিণত হয়েছে। মূলত আওয়ামী লীগ যখনই ক্ষমতায় আসে তখনই গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়। তাই হৃত গণতন্ত্র পূনরুদ্ধার করে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে এই ফ্যাসীবাদী ও গণবিরোধী সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করতে হবে। তিনি সরকারের জুলুম-নির্যাতন মোকাবেলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।