গণবিরোধী ও বিনাভোটের সরকারের বিরুদ্ধে বীরজনতা স্বতঃস্ফূর্তভাবে রাজপথে নেমে এসেছে; সরকারের পদত্যাগ ও কেয়ারটেকার সরকারের গণদাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা কোন ভাবেই রাজপথ ছাড়বে না বলে দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান।
তিনি আজ রাজধানীর মিরপুরে নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা, আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবিতে এবং জামায়াত সহ বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে বাধাদান, উপর্যুপরি হামলা, গুলীবর্ষণ ও হত্যাকাÐের প্রতিবাদে ১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত টানা ৩ দিনের সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধের কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির সমর্থনে বাংলাদেশ জামায়াতে ঢাকা মহানগরী উত্তরের মিরপুর অঞ্চলের আয়োজিত এক বিক্ষোভ পরবর্তী সমাবেশে এসব কথা বলেন। বিক্ষোভ মিছিলটি মিরপুর চিরিয়াখানা রোড থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে কমার্স কলেজ হয়ে প্রশিকা মোড়ে গিয়ে পথ সভার মাধ্যমে শেষ হয়। পথ সভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিশে শূরার সদস্য আবু নকীব, এডভোকেট আব্দুর রাকিব ও রিমন তমাল, ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান শামীম ও শাকিল প্রমূখ।
মাহফজুর রহমান বলেন, সরকার দেশ পরিচালনায় সার্বিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি ঘটেছে। তারা জনগণের জান-মালের নিরাপত্তা দিতে পারেনি বরং ভিন্নমত দমনের জন্য দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও জনপ্রশাসনকে দলীয় ক্যাডার বাহিনীর মত ব্যবহার করছে। সরকার জনগণের অবরোধ কর্মসূচিকে বাঞ্চাল করার জন্য দলীয় সন্ত্রাসী ও বশংবদ পুলিশ সদস্যদের যুগপৎভাবে মাঠে নামিয়ে সারাদেশে হত্যা, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য শুরু করেছে। জনতার শান্তিপূর্ণ অবরোধের প্রথম দিনে কিশোরগঞ্জ ও সিলেটে ৩ জন বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীকে নির্মম নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে। কিন্তু হত্যা, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্য চালিয়ে সরকারের শেষ রক্ষা হবে না; কেয়ারটেকার সরকারের গণদাবিও পাশ কাটানো যাবে না। তিনি সরকারকে সময় থাকতে শুভবুদ্ধির পরিচয় দিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ ও কেয়াটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহবান জানান। অন্যথায় রাজপথ আরো অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠবে।
তিনি বলেন, সরকার নতুন করে তামাশা ও ভাঁওতাবাজীর নির্বাচনকে নির্বিঘœ করতেই বিরোধী মতাদর্শের বিরুদ্ধে দলন-পীড়ন শুরু করেছে। সে ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবেই মানবতার ফেরিওয়ালা খ্যাত পরিচ্ছন্ন রাজনীতিক ও আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার ও ঢাকা মহানগরী উত্তর আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ এবং বরেণ্য আলেমদের বিনাদোষে কারারুদ্ধ করে রেখেছে। যা মানবাধিকার ও আইনের শাসনের মারাত্মক লঙ্ঘন। এমতাবস্থায় ফ্যাসীবাদী, স্বৈরাচারি ও জুলুমবাজ সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই। তিনি সরকারকে শুভ বুদ্ধির পরিচয় দিয়ে গণদাবি মেনে নিয়ে অবিলম্বে পদত্যাগ এবং আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দ নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার আহবান জানান। অন্যথায় তাদের পরিণতি শুভ হবে না।
মিরপুর শেওড়াপাড়ায় অবরোধ কর্মসূচি পালন
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দীন মানিক বলেন, জনগণের ওপর সরকারের জুলুম-নির্যাতন বাড়ছে, রাজপথ ততই উত্তাল হয়ে উঠছে। কিন্তু সরকার চলমান গণআন্দোলন দমনের জন্য হত্যা, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের পথ বেছে নিয়েছে। কিন্তু জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে অতীতে কোন স্বৈরাচারি ও ফ্যাসীবাদী শক্তির শেষ রক্ষা হয়নি, আওয়ামী লীগেরও হবে না। তিনি হঠকারিতা পরিহার করে অবিলম্বে সরকারকে পদত্যাগ ও দলনিরপেক্ষ কেয়ারটেকার হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহবান জানান। অন্যথায় সরকারকে গণরোষে বিদায় নিতে হবে।
তিনি আজ রাজধানীর মিরপুরের শেওড়াপাড়ায় নির্বাচনকালীন কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠা, আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দের নিঃশর্ত মুক্তি ও দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণের দাবিতে এবং জামায়াত সহ বিরোধী দলের শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে বাধাদান, উপর্যুপরি হামলা, গুলীবর্ষণ ও হত্যাকাÐের প্রতিবাদে ১ অক্টোবর থেকে ২ নভেম্বর পর্যন্ত টানা ৩ দিনের সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধের কেন্দ্র ঘোষিত অবরোধ কর্মসূচি পালনকালে এসব কথা বলেন। কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের ঢাকা মহানগরী পশ্চিমের সেক্রেটারি সালাউদ্দিন আহাম্মেদ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগর উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ও মিরপুর পূর্ব থানার আমীর টুটুল, কাফরুল উত্তরের থানা আমীর রেজাউল করিম, ভাষানটেক থানা আমীর ডা. আহসান হাবিব, কাফরুল পশ্চিম থানা সেক্রেটারি আতিক হাসান, কাফরুল দক্ষিণের থানা সেক্রেটারি মুসআব মুহিমিন, জামায়াত নেতা গোলাম রব্বানী, নূরুল আমীন, আনিস ও পরশ প্রমূখ।
কারওয়ান বাজারে জামায়াতের অবরোধ-বিক্ষোভ
কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের হাতিরঝিল-তেজগাঁ অঞ্চলের উদ্যোগে আজ ১ নভেম্বর ভোর ৭টায় কারওয়ান বাজারে অবরোধের সমর্থনে মিছিল ও রাজপথ অবরোধ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ঢাকা মহানগরী উত্তরের প্রচার-মিডিয়া সম্পাদক আতাউর রহমান সরকারের নেতৃত্বে এতে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য আমিনুল ইসলাম, জিল্লুর রহমান, নোমান আহমেদি, আহসান উল্লাহ, শ্রমিক নেতা সুলতান মাহমুদ, ছাত্রনেতা তানভির ও ফজলুর রহমান প্রমূখ।
মিরপুর ১১ নং-এ পল্লবী অঞ্চলের অবরোধ
টানা অবরোধের দ্বিতীয় দিনে জামায়াতে ইসলামীর নেতাকর্মীরা মিরপুর ১১ নং-এ অবরোধ কর্মসূচি পালন। এতে নেতৃত্ব দেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের কর্মপরিষদ সদস্য ও বাংলাদেশ যুব কল্যাণ পরিষদের ঢাকা মহানগরীর সেক্রেটারি নাসির উদ্দীন । উপস্থিত ছিলেন পল্লবী উত্তর থানা আমীর সাইফুল কাদের, রূপনগর থানা আমীর আবু হানিফ, জামায়াত নেতা হাসানুল বান্না চপল, রূপনগর থানা সেক্রেটারি মো: মোশাররফ হোসেন ও পল্লবী মধ্য থানা সেক্রেটারি জোবায়ের হোসাইন রাজন প্রমূখ।