বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান বলেছেন, সরকার জনগণের ম্যান্ডেট ছাড়াই ক্ষমতায় থাকার জন্য জামায়াত সহ বিরোধী দলগুলোর ওপর দলন-পীড়নের মাত্রা বাড়িয়ে দিয়েছে। তারা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দলনিরপেক্ষ কেয়ারটেকার সরকারের গণদাবি পাশ কাটাতে চায়। কিন্তু বীরজনতা তাদের সে ষড়যন্ত্র সফল হতে দেবে না। তিনি সরকারকে ষড়যন্ত্র বন্ধ করে অবিলম্বে পদত্যাগ ও কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহবান জানান। অন্যথায় তাদের জন্য মরাত্মক বে-ইজ্জতি অপেক্ষা করছে।
তিনি আজ রাজধানীতে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের মিরপুর থানা আয়োজিত অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ, কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, বিএনপির মহাসমাবেশে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের হামলা, আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ নেতাকর্মীদের গ্রেফতার এবং জামায়াত ঘোষিত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশে পুলিশের বাধাদান ও মহাসমাবেশে যোগ দিতে আসা নেতাকর্মীদের অন্যায়ভাবে গ্রেফতারের প্রতিবাদে আহুত সারাদেশে সকাল-সন্ধ্যা শান্তিপূর্ণ হরতালের সমর্থনে এক মিছিল পরবর্তী সমাবেশে এসব কথা বলেন। মিছিলটি ৬০ ফিট পাকা মসজিদ থেকে শুরু হয়ে নগরীর বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে মিরপুর-২-এ এসে পথসভার সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। পরে নেতাকর্মীরা হরতালের সমর্থনে পিকেটিং-এ অংশ নেন। সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের ঢাকা মহানগরী পশ্চিমের সভাপতি আসাদুজ্জামান, জামায়াতের ঢাকা মহানগরীর মজলিসে শূরা সদস্য এডভোকেট আব্দুল হামিদ, আবু নকিব ও এ্যাডভোটেক আব্দুর রকিব এবং ছাত্রনেতা মওদুদ আহমেদ প্রমূখ।
মাহফুজুর রহমান বলেন, সরকার দেশ পরিচালনায় সার্বিকভাবে ব্যর্থ হয়েছে। দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এখন খাদের কিনারে এসে ঠেকেছে। আইন ও সাংবিধানিক শাসন আজ ভ‚লুন্ঠিত। সরকার পরিকল্পিতভাবে দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে দিয়েছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতিতে জনজীবন অস্থির হয়ে উঠেছে। ফলে সারাদেশেই নিরব দুর্ভিক্ষের প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছে। কিন্তু বিনাভোটের সরকার দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ না করে এমন কিছু করছে যার সাথে দেশ ও জাতির স্বার্থের কোন সম্পর্ক নেই। মূলত, এ সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে ততদিন জনদুর্ভোগ বাড়বে বৈ কমবে না। তিনি দেশে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠায় সকলকে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
তিনি বলেন, সরকারের জুলুম-নির্যাতন অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। তারা রাজনৈতিক ময়দানকে প্রতিপক্ষ মুক্ত করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবেই পরিচ্ছন্ন জাতীয় নেতা ও আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান, ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন এবং কেন্দ্রীয় প্রচার সেক্রেটারি এ্যাভোকেট মতিউর রহমান আকন্দসহ হাজার হাজার নেতাকর্মীকে সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে করারুদ্ধ করে গোটা দেশকেই বন্দীশালায় পারিণত করেছে। কিন্তু এসব করে স্বৈরাচারি ও ফ্যাসীবাদী শক্তির শেষ রক্ষা হবে না বরং জনগণের তোপের মুখেই তাদেরকে লজ্জাজনকভাবে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হবে। তিনি সকাল-সন্ধ্যার হলতাল সফল করতে সকলকে ময়দানে অগ্রসৈনিকের ভ‚মিকা পালনের আহবান জানান।
তুরাগ থানা
তুরাগ থানায় সকালে হরতালের সমর্থনে মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। মিছিলের নেতৃত্ব দেন তুরাগ মধ্য থানার আমীর গাজী মনির হোসেন। উপস্থিত ছিলেন তুরাগ দক্ষিণ থানা আমীর, মাহবুবুল আলম, তুরাগ উত্তর থানা আমীর মতিউর রহমানসহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ। মিছিলটি উত্তরা ১২ নম্বর সেক্টর খালপাড় থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে এক পথ সভায় মিলিত হয়।
উত্তরা মডেল থানা
হরতালের সমর্থনে উত্তরা মডেল থানা এবং উত্তরা পশ্চিম থানার যৌথ উদ্যোগে উত্তরায় মিছিল-পিকেটিং অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল-সমাবেশে নেতৃত্ব দেন উত্তরা পশ্চিম থানা আমীর মাজহারুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন, থানা সেক্রেটারী ফিরোজ আলোম, উত্তরা মডেল থানা নায়েবে আমীর হারুনুর রশিদ তারিক, জামায়াত নেতা মাওলানা শামসুল হক নিজামী ও ইলিয়াস হুসাইন প্রমূখ।
গুলশান থানা
আজকের সকাল সন্ধ্যা হরতালের সমর্থনে গুলশান অঞ্চলের উদ্যোগে গুলশান লিংক রোডে এক বিক্ষোভ মিছিল এবং হরতাল পিকেটিং সম্পন্ন করে। এতে নেতৃত্ব দেন যথাক্রমে বনানী থানা আমীর আবু ফয়সল খান, গুলশান পশ্চিম থানা আমীর মাহমুদুর রহমান আজাদ, গুলশান পূর্ব থানা আমীর আবু জুনাইদ সহ গুলশান পূর্ব, পঃ ও বনানী থানার বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ। মিছিলটি লিংক রোড থেকে শুরু হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে পথসভার মাধ্যমে শেষ হয়।
বিমানবন্দর
সকাল-সন্ধ্যা হরতালের সমর্থনে রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকায় সকালে মিছিল ও পিকেটিং করেছে জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীরা। থানা আমীর মাওলানা এম এ হক মোল্লার নেতৃত্বে মিছিলটি হাজী ক্যাম্প সংলগ্ন তালতলা থেকে শুরু হয়ে নদ্দা বৈশাখী মোড়ে গিয়ে থানা আমীরের বক্তব্যের মাধ্যমে শেষ হয়। উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।