পেট্রোল পাম্পে মোটরসাইকেল চালকদের লাইন
রোববার ভোর থেকে ধর্মঘটের খবর পেয়ে রাজধানীতে তেলের জন্য পেট্রোল পাম্পগুলোতে দীর্ঘ লাইন পড়েছে। শনিবার রাত ১১টার দিকে তেজগাঁওয়ের কয়েকটি পেট্রোল পাম্পে শতশত মোটরসাইকেল চালককে তেলের জন্য লাইন ধরে থাকতে দেখা গেছে।
জ্বালানি তেল বিক্রির কমিশন বাড়ানোসহ তিন দফা দাবিতে রোববার ভোর থেকে সারাদেশে পেট্রোল পাম্প ও ট্যাঙ্কলরি মালিক-শ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট শুরু হচ্ছে। এ সময় ডিপো থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলন, পরিবহন ও পাম্প থেকে তেল বিক্রি বন্ধ থাকবে। পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির একাংশের মহাসচিব মিজানুর রহমান রতন এ তথ্য জানিয়েছেন।
পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির অপর অংশের আশা, সরকার ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে তাদের দাবি মেনে নেবে। তাই তারা জ্বালানি তেল বিক্রি ও সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে ব্যবসায়ীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় জ্বালানি বিভাগ জানিয়েছে, সরকার পেট্রোল পাম্প মালিকদের অধিকাংশ দাবি মেনে নিয়েছে। তারপরও বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) ধর্মঘট আহ্বানকারীদের সঙ্গে সমঝোতার চেষ্টা করছে।
তাদের তিন দফা দাবি হলো– জ্বালানি তেল পরিবহনকারী ট্যাঙ্কলরির জীবনকাল ৫০ বছর করা, তেল বিক্রির কমিশন বাড়িয়ে কমপক্ষে ৭ দশমিক ৫ শতাংশ করা এবং জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট– এমন সুস্পষ্ট গেজেট প্রকাশ করা।
এগুলোর মধ্যে তেল ব্যবসায়ীরা কমিশন এজেন্ট দাবিটি সরকার মেনে নিয়েছে। বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত গেজেট প্রকাশের জন্য চিঠি ইস্যু করেছে জ্বালানি বিভাগ।
পেট্রোল পাম্প মালিকরা জানিয়েছেন, গত ৪ বছর ধরে একই দাবিতে তারা আন্দোলন করছেন। জ্বালানি বিভাগ ও বিপিসি কয়েকবার তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। প্রতিবারই সময় নিয়েছে, কিন্তু দাবি বাস্তবায়ন করেনি। ৩১ আগস্টের মধ্যে ৩ দফা দাবি বাস্তবায়নের জন্য সরকারকে আলটিমেটাম দিয়েছিলেন তারা। তাদের দাবি বাস্তবায়ন হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে তেল উত্তোলন ও পরিবহন বন্ধের কর্মসূচি দিতে হয়েছে।
জ্বালানি তেল পরিবহন ও বিক্রি স্বাভাবিক রাখার আহ্বান: এদিকে পেট্রোল পাম্প মালিক সমিতির একাংশের মহাসচিব (ভারপ্রাপ্ত) মীর আহসান উদ্দিন পারভেজ বৃহস্পতিবার অন্য মালিকদের কাছে পাঠানো এক চিঠিতে বলেন, ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে সরকার সব দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তাই এই সময়ের মধ্যে জ্বালানি তেল পরিবহন ও বিক্রি স্বাভাবিক রাখতে আহ্বান জানান আহসান উদ্দীন।
একইদিন মালিক সমিতির অপর অংশের মহাসচিব মিজানুর রহমান রতন এক চিঠিতে পাম্প মালিকদের প্রতি ধর্মঘট পালনের আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকার দিনের পর দিন তাদের দাবি বাস্তবায়ন না করে সময় ক্ষেপণ করছে। দাবি আদায়ে রোববার থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলন, পরিবহন ও বিক্রিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট পালন করা হবে। কোনো ব্যক্তির স্বার্থে বা কোনো ব্যক্তির সন্তুষ্টির জন্য কেউ যাতে এই আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বিভ্রান্ত ছড়াতে না পারে সে বিষয়ে সতর্ক থাকতে মালিক-শ্রমিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন মিজানুর রহমান রতন।