ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের বিমানবন্দর থেকে ফার্মগেট অংশের উদ্বোধন হয়েছে আজ। এ উপলক্ষে রাজধানীর সড়কে যানজটে ব্যাপক দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে। এর মধ্যে শেরে বাংলা নগরে পুরোনো বাণিজ্য মেলার মাঠে সুধী সমাবেশে আসা আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মিছিল এবং সড়কে রাখা গাড়িতে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এতে আশাপাশের হাসপাতালগুলোতে রোগীর স্বজনরা সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ সয়েছেন।
নির্মাণাধীন উড়াল সড়কের বিমানবন্দর-ফার্মগেট অংশের কাওলা থেকে আজ বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর যাত্রা শুরু করে। এর আগে তিনি সড়ক পথে গণভবন থেকে কাওলায় যান। সরকার প্রধানের নিরাপত্তার কারণে মিনিট বিশেক ওই সড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখা হয়।
কাওলার র্যাম্পে টোল দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর গাড়িবহর ফার্মগেটের র্যাম্প হয়ে ইন্দিরা রোড দিয়ে নামে। এরপর তিনি বাণিজ্য মেলার মাঠে সুধী সমাবেশে যোগ দেন। আওয়ামী লীগের লাখো নেতাকর্মী ওই সমাবেশে যোগ দেন। টাঙ্গাইল ও ময়মনসিংহ থেকে নেতাকর্মীরা আসেন। আর তাদের বহনকারী বাসগুলো সড়কের দুই পাশে রাখায় বিভিন্ন সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
জানা যায়, সোহরাওয়ার্দী মেডিকেলে কলেজসহ আশেপাশে হাসপাতালের সংখ্যা ৯টি। আজ বিকেল ৪টার দিকে পঙ্গু হাসপাতালের সামনে দেখা যায়, সুধী সমাবেশে আসা গাড়ি এবং মিছিলে দুটি অ্যাম্বুলেন্স সড়কে আটকা পড়েছে। শিশু হাসপাতালের সামনেও অ্যাম্বুলেন্স আটকে থাকতে দেখা যায়।
সাভারের আমিনবাজারের আসিফ করিম জানান, তার চার বয়সী ছেলে শিশু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্ত্রীর জন্য খাবার নিয়ে দুপুর দুইটায় বাসা থেকে বের হন। বাসে এক ঘণ্টায় কল্যাণপুর আসেন। এক জায়গায় বাস থেমে ছিল ১৫-২০ মিনিট। উপায় না পেয়ে হাঁটা ধরেন।
সড়কের দুই লেনেই থমকে আছে যানবাহন
শ্যামলী থেকে আগরগাঁওমুখী সড়কে তীব্র যানজট ছিল। কারণ, সড়কে সুধী সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের বাস রাখা হয়েছে।
এনজিও কর্মকর্তা আমিনুজ্জামান মিলন আজ নোয়াখালী থেকে ঢাকায় আসেন অফিসের কাজে। দুপুর ২টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব থেকে মোহাম্মদপুরের ইকবাল রোডে তার যেতে লাগে সোয়া দুই ঘণ্টা।
কাকরাইল থেকে শ’খানেক পিকআপ, ট্রাকের বহর মাইক বাজিয়ে উল্টো পথে মগবাজার, তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তা হয়ে শেরে বাংলা নগরের সুধী সমাবেশস্থলে যায়। এতে হাজারো যানবাহন আটকা পড়ে।
নারায়ণগঞ্জে বাস-ট্রেনের সংকট
নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি জানান, প্রধানমন্ত্রীর সমাবেশে যোগ দিতে নারায়ণগঞ্জের সব বাস ভাড়া করে নেন আওয়ামী লীগ নেতা শামীম ওসমান। এমনকি দলের পক্ষ থেকে ট্রেনও ভাড়া করা হয়। ফলে এ রুটের যাত্রীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
সকাল ১০টায় নারায়ণগঞ্জ বাস স্ট্যান্ডের বন্ধন কাউন্টার বন্ধ পাওয়া যায়। বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত অল্প কিছু বিআরটিসি ছাড়া অন্য কোনো বাস চলেনি।
বন্ধন পরিবহনের চেয়ারম্যান জুয়েল হোসেন জানান, আওয়ামী লীগ সব বাস ভাড়া করে নেওয়ায় কাউন্টার বন্ধ।
নারায়ণগঞ্জ রেলস্টেশন মাস্টার কামরুল ইসলাম জানান, সকাল ১০টা ২৫ এর ট্রেনটিও ভাড়া করে নেয় আওয়ামী লীগ কর্মীরা।