মানবাধিকার লঙ্ঘন করে কোনো নিরপরাধ মানুষকে ‘গুম’ করা হত্যার চেয়ে ভয়াবহ অপরাধ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর ও সাবেক এমপি ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।
তিনি বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার বিরোধী রাজনৈতিক নেতা, কিংবা বিরোধী মতের সাধারণ নাগরিক, আইনজীবী, ব্যবসায়ীদের গুম করে চরম মানবাধিকার লঙ্ঘন করেই চলেছে।
বুধবার (৩০ আগস্ট) বিকাল ৪টায় আন্তর্জাতিক গুম প্রতিরোধ দিবস উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে গুমের শিকার ব্যারিস্টার আরমানের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে সমবেত স্বজন ও জনতার উদ্দেশে এসব কথা বলেন তিনি। এসময় সমবেত সকলকে নিয়ে গুম হওয়া মাজলুমদের জন্য দোয়া করেন ডা. তাহের।
ডা. তাহের বলেন, ২০১৬ সালের ৯ আগস্ট রাত সাড়ে ১০ রাজধানীর বাসা থেকে শহীদ মীর কাসেম আলীর সন্তান ব্যারিস্টার আরমানকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা তুলে নিয়ে গেলেও এখনো তাকে ফেরত দেয়া হয়নি। যা চরম নির্মম ঘটনা। এতে গোটা জাতি হতবাক হয়েছিল। কারণ, আরমান ট্রাইব্যুনালে বিচারাধীন তার বাবার মামলার আইনজীবী ছিলেন। তাকে রাতের আধারে জোরপূর্বক এভাবে তুলে নিয়ে বিচার প্রক্রিয়ায় হস্তক্ষেপ করে তার বাবাকে মিথ্যা মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে। এ ধরণের মানবাধিকার লঙ্ঘনের মতো চরম অপরাধের জন্য সংশ্লিষ্টদের একদিন বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হবে।
তিনি আরমানের পরিবারের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, গত কয়েকদিন ধরে ব্যরিস্টার আরমানের বাসায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নজরদারি ও তৎপরতা নতুন করে শঙ্কা জাগিয়েছে। ব্যারিস্টার আরমানকে গুম করার পর পিতাকে অস্বচ্ছ ও ন্যায়ভ্রষ্ট বিচারিক প্রাক্রিয়ায় হত্যা করেও তারা ক্ষান্ত হয়নি। তিনি গুমের শিকার ব্যক্তিদের স্মরণে আন্তর্জাতিক এই গুম দিবসে সকলকে নিজ নিজ পরিবারে ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানান।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন,বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম, ঢাকা মহানগরী উত্তরের প্রচার সম্পাদক মুহাম্মদ আতাউর রহমান সরকার, ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য এডভোকেট রেজাউল করিম ও সাবেক ছাত্রনেতা আহমেদ সালমান প্রমূখ।
ডা. তাহের আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দেশে এক ভয়াবহ অবস্থার সৃষ্টি করেছে। সরকারের উচিৎ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও বিভিন্ন সংস্থার হাতে গুম হওয়া বিগ্রেডিয়ার জেনারেল আব্দুল্লাহিল আমান আযমী, ব্যারিস্টার আরমান আহমদ বিন কাসেম, হাফেজ জাকির হোসাইন, আল মোকাদ্দাস, মোহাম্মদ ওলিউল্লাহ এবং ইলিয়াস আলী, চৌধুরী আলমসহ গুম হওয়া প্রায় ২০০ জনের সন্ধান দেয়া। দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে গুম করা ব্যক্তিদের নিরাপদে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিয়ে মানবাধিকারের প্রতি ন্যূনতম সম্মান জানানোর আহ্বান জানান তিনি।