বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহা. রেজাউল করিম বলেছেন, ইসলামী আন্দোলনের পথচলা কখনোই নির্বিঘ্ন ছিল না বরং সীমাহীন বাধা-প্রতিবন্ধকতা মোকাবেলা করেই দ্বীনের বিজয় সূচিত হয়েছে। আমাদের দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপট তা থেকে মোটেই আলাদা নয়। তাই দ্বীনকে বিজয়ী আদর্শ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে হলে সকল বৈরি পরিস্থিতি ও জুলুম-নির্যাতন উপেক্ষা করেই সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তিনি দ্বীন প্রতিষ্ঠার প্রত্যয়ে দাওয়াতি কার্যক্রম সম্প্রসারণের জন্য সকলের প্রতি আহবান জানান।
তিনি আজ রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের হাতিরঝিল পূর্ব থানা আয়োজিত সাবেক ছাত্রনেতাদের সাথে মতবিনিময় সভা ও প্রীতিভোজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। থানা আমীর এ্যাডভোকেট জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি খন্দকার রুহুল আমীনের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
ড. এম আর করিম বলেন, ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের অবসর নেয়ার কোন সুযোগ নেই। কারণ, মোমিন কখনোই আল্লাহ ও তার রাসুল (সা.) এর আনুগত্যের বাইরে যেতে পারে না। মূলত আল্লাহর আনুগত্যের মাধ্যমে বিশ্বমানবতার কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি অর্জনই ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের কাঙ্খিত লক্ষ্য। যারা ইতোমধ্যেই ছাত্রজীবন শেষ করেছেন তাদেরকে বৃহত্তর আন্দোলন বেগবান ও গতিশীল করার জন্য নিরলসভাবে কাজ করতে হবে। নিজেদেরকে ইসলামী আন্দোলনের জন্য যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে বেশি বেশি কুরআন, হাদিস ও ইসলামী সাহিত্য অধ্যয়ন করতে হবে। একটি পূর্ণাঙ্গ বিপ্লব সাধনের জন্য ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদেরকে গণসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। সাধারণ মানুষের সমস্যগুলো চিহ্নিত করে সাধ্যমত তা সমাধানেরও চেষ্টা করতে হবে। মনে রাখতে হবে আর্ত-মানবতার সেবা ও গণমানুষের দুর্দশা লাঘবে কাজ করতে ইসলাম আমাদেরকে উদ্বুদ্ধ করেছে। এসব হক্কুল ইবাদের অংশ। তাই প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর দুর্দশা লাঘবে ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের নিরলসভাবে কাজ করতে হবে। তাহলেই ইসলামের বিজয় তরান্বিত হবে।
তিনি বলেন, সরকার দেশের গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ধ্বংস করে দিয়েছে। তারা গণতন্ত্রের নামে জনগণের সাথে তামাশা শুরু করে দিয়েছে। সদ্য সমাপ্ত খুলনা ও গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনই তার জ্বলন্ত প্রমাণ। এসব নির্বাচনে তারা অভিনব কায়দায় ভোট ডাকাতির মাধ্যমে দলীয় প্রার্থীদের বিজয়ী করেছে। সরকার গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক মূল্যবেধে বিশ্বাসী নয় বলেই কোটা আন্দোলনের মত যৌক্তিক আন্দোলনকে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে দমন করছে। ছাত্রলীগের সন্ত্রাসের মাধ্যমে আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী ও সম্মানিত শিক্ষকরাও হামলা ও নাজেহালের শিকার হচ্ছেন। সরকার হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহণ না করে উল্টো ছাত্রদের গ্রেফতার করে রিমান্ডের নামে নির্মম নির্যাতন চালাচ্ছে। সরকার রাষ্ট্রীয় সম্পদেরও নিরাপত্তা বিধান করতে পারেনি। রাষ্ট্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির পর এবার বাংলাদেশ ব্যাংকের ভোল্ট থেকে স্বর্ণ কেলেঙ্কারীর ঘটনা ঘটেছে। মূলত এই সরকার যতদিন ক্ষমতায় থাকবে জনদুর্ভোগ বাড়বে বৈ কমবে না। তাই দেশ ও জাতির বৃহত্তর স্বার্থেই এই ব্যর্থ, ফ্যাসীবাদী ও জূলুমবাজ সরকারকে ক্ষমতা থেকে বিদায় করতে হবে। তিনি সরকার পতনের লক্ষ্যে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।