বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম বলেছেন, দেশ ও জাতিস্বত্তা বিরোধী গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবেই গণমানুষের নয়ন মণি ও বিশ্ব বরেণ্য মুফাসসিরে কুরআন আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী রাহিমাহুল্লাহ-কে বিচারের নামে প্রহসন, ন্যায়ভ্রষ্ট রায়, নির্মম কারা নির্যাতন ও চিকিৎসায় অবহেলার মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে শহীদ করা হয়েছে। তিনি আল্লামা সাঈদীর শাহাদাত কবুলিয়াতের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া ও মোনাজাত করেন এবং শোককে শক্তিতে পরিণত করে শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন ও অসমাপ্ত কাজকে সমাপ্ত করতে সকলকে ময়দানে ঐব্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
তিনি আজ সকালে রাজধানীতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকা মহানগরী উত্তরের উত্তরা পশ্চিম থানা আয়োজিত জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমীর, আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মুফাসসিরে কুরআন শহীদ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী (রাহি.)-এর রূহের মাগফেরাত কামনায় দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। মহানগরী মজলিসে শুরার সদস্য ও উত্তরা পশ্চিম থানা আমীর আবু যায়িদ এর সভাপতিত্বে ও থানা সেক্রেটারি আব্দুল্লাহ রেজার পরিচালনায় অনুষ্ঠিত মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন থানা নায়েবে আমীর আবু হোসেন, থানা কর্মপরিষদ সদস্য মশিউর রহমান, জিএম আসলাম, সহিদুল ইসলাম, শামসুর রহমান সাজু প্রমূখ।
ড. রেজাউল করিম বলেন, শহীদ আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী (রাহি.) ছিলেন বিশ্বখ্যাত ইসলামী চিন্তাবিদ, প্রখ্যাত বাগ্মী ও মাজলুম জননেতা। মহাগ্রন্থ আল কুরআনের এই একনিষ্ঠ ও কালজয়ী খাদেম অর্ধ শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে কুরআনের শ্বাসত বাণীর প্রচার ও প্রসার ঘটিয়েছেন। তার মত একজন বিশ্ব বরেণ্য ব্যক্তিত্বের বিচারের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক মান তো নয়ই বরং দেশীয় মানও রক্ষা করা হয়নি। ফলে জীবনের শেষ ১৪টি বছর এই বিশ্বখ্যাত দাঈকে কারাগারের অন্ধকারের প্রকোষ্টে কাটাতে হয়েছে। এমনকি মৃত্যু পরবর্তী সময়ে শোকাহত জনতাকে তার জানাজা থেকেও করা হয়েছে বঞ্চিত। শোকাহত জনতার ওপর নির্বিচারে সাউন্ড গ্রেনেড, গুলী, রাবার বুলেট, টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে ১ জনকে শহীদ, শত শত আহত ও অসংখ্য মানুষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু সরকারের রক্ত চক্ষু উপেক্ষা করেই সারাদেশেই আল্লামা সাঈদীর জানাজায় জনতার ঢল নেমেছে। এমনকি বিশ্বের শতাধিক দেশে শহীদের গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সরকার শোকাহত জনতার ওপর পুলিশ লেলিয়ে দিয়ে আত্মসচেতন জাতিকে সত্য বিচ্যুত করতে পারেনি আর কখনো পারবেও না বরং শাহাদাতের পথ ধরেই এদেশে ইসলামের বিজয় অনিবার্য হয়ে উঠবে। তিনি দেশে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠায় প্রতিটি ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোলার আহবান জানান।
তিনি বলেন, আল্লামা সাঈদী (রাহি.) আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দ্বীন ও দেশে ন্যায়-ইনসাফের সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য জীবনের শেষ দিন প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা চালিয়েছেন তিনি। তিনি অন্যায় ও অসত্যের কাছে কখনো মাথানত করেননি বরং সকল জুলুম-নির্যাতন উপেক্ষা করে দ্বীনে হক্বের প্রতি অবিচল থেকেছেন এবং হাসি মুখে কারাজীবন ও শাহাদাতকে আলিঙ্গন করেছেন। সরকারের জুলুম-নির্যাতন তাকে আদর্শ প্রতিষ্ঠার আন্দোলন থেকে বিচ্যুত করতে পারেনি। মূলত, সরকার আল্লামা সাঈদীর জনপ্রিয়তায় ভীত হয়েই তাকে পরিকল্পিতভাবে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছে। কিন্তু সরকারের একথা মনে রাখা উচিত জীবিত সাঈদীর চেয়ে শহীদ সাঈদী অনেক বেশি শক্তিশালী ও জনপ্রিয়। তাই শত ষড়যন্ত্র করেও আল্লামা সাঈদীকে তৌহিদী জনতার মন থেকে মুছে ফেলা যাবে না বরং সাঈদী প্রেমীদের শ্রোতেই জুলুমবাজ সরকারের পতন অনিবার্য হয়ে উঠছে। তিনি সরকার পতনের লক্ষ্যে সকলকে রাজপথে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
এছাড়াও ঢাকা মহানগরী উত্তরের ৬৯ টি সাংগঠনিক থানায় ও সকল ওয়ার্ডে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।